নয়াদিল্লি: পণ্য পরিবহণের জন্য আলাদা করিডর। ভারতীয় রেলের এই সিদ্ধান্তের জেরে ভারতের অর্থনীতি লাভবান হচ্ছে। ভারতের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে(জিডিপি) বড় ভূমিকা রাখতে চলেছে ডেডিকেটেড পণ্য করিডর (ডিএফসি)। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা সামনে এসেছে। যেখানে বলা হয়েছে, ডিএফসি-র ফলে ভারতের জিডিপিতে ১৬ হাজার কোটি টাকা যোগ হবে। ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড(ডিএফসিসিআইএল) এই গবেষণার রিপোর্ট সামনে এনেছে। ভারতীয় অর্থনীতি করিডরের প্রভাব বর্ণনা করা হয়েছে। বিশেষ করে ওয়েস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরের ( WDFC) কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ওয়েস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর পরিষেবা চালু হওয়ার পর পণ্য পরিবহণের খরচ কমেছে। সময় বেঁচেছে। ডিএফসিসিআইএল জানিয়েছে, এর ফলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম ০.৫ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। শুধু তাই নয়, ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, ডেডিকেটেড পণ্য করিডরের ফলে ভারতীয় রেলের রাজস্ব আয় বেড়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষ পর্যন্ত ভারতীয় রেলের রাজস্ব বৃদ্ধির ২.৯৪ শতাংশ হয়েছে এই ডেডিকেটেড পণ্য করিডরের জন্য। একইসঙ্গে ভারতীয় রেল যা পণ্য পরিবহণ করে, তার ১০ শতাংশের বেশি এখন পরিবহণ করা হয় ডেডিকেটেড পণ্য করিডরের মাধ্যমে।
ডেডিকেটেড পণ্য করিডর ২ হাজার ৮৪৩ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। সাতটি রাজ্যের ৫৬টি জেলা দিয়ে তা গিয়েছে। লুধিয়ানা থেকে সোননগর পর্যন্ত ১৩৩৭ কিমি বিস্তৃত ইস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরে সম্পূর্ণরূপে কাজ শুরু করেছে। আর দাদরি থেক মুম্বই পর্যন্ত ১৫০৬ কিমি বিস্তৃত ওয়েস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরের কাজ ৯৩.২ শতাংশ সম্পূর্ণ হয়েছে। কয়লাখনি, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, সিমেন্ট কারখানার মতো ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাবগুলির মধ্যে সংযোগ স্থাপন করছে এই ফ্রেট করিডর।
সাধারণ রেল ট্র্যাকে মালবাহী ট্রেনগুলি ২০-২৫ কিমি গতিবেগে চলে। সেখানে ডেডিকেটেড পণ্য করিডরে মালবাহী ট্রেনগুলির গতিবেগ ৫০-৬০ কিমি। ১০০ কিমি গতিবেগেও ছোটার ক্ষমতা রয়েছে। বর্তমানে এই ডেডিকেটেড পণ্য করিডর দিয়ে দিনে গড়ে ৩২৫টি ট্রেন যাতায়াত করে। গত বছরের থেকে যা ৬০ শতাংশ বেশি। পণ্য করিডরের গুরুত্ব যে ক্রমশ বাড়ছে, এই তথ্যেই তা স্পষ্ট।