নয়াদিল্লি: উচ্চশিক্ষার জন্য এডুকেশন লোন বা শিক্ষা ঋণের চাহিদা দিনে দিনে বাড়ছে। বিদেশে যাঁরা পড়তে যান, তাঁদের অধিকাংশই ভরসা রাখেন এডুকেশন লোনে। তথ্য বলছে, গত ১০ বছরে বিদেশে পড়তে যাওয়া ৪.৬০ লক্ষ পড়ুয়া নিয়েছেন এডুকেশন লোন। কিন্তু ঋণ নিলেই তো হল না, সেই ঋণ পরিশোধ করাও যথেষ্ট ঝক্কির বিষয়। অনেকেই ঋণ নেওয়ার সময় পরিশোধের বিষয়ে ভাবেন না। এর জেরে ঋণ শোধ করতে নাজেহাল হতে হয় তাঁদের। শিক্ষা ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে অনেককেই শখ আহ্লাদ বিসর্জনও দিতে হয়। কিন্তু একটু পরিকল্পনা করে এগোলে ঋণ পরিশোধ অনেক ক্ষেত্রেই সহজ হয়ে যায়। এই প্রতিবেদনে আমরা সে রকমই একটি উপায়ের বিষয়ে জানাব।
গত এক দশকে ভারতে এডুকেশন লোনে সুদের হার ১১-১২ শতাংশ মধ্যেই আবর্তিত হয়েছে। এই হার মোটেই কম নয়। তাই তা শোধ করতে সমস্যা পড়েছেন অনেকেই। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য বলছে, এডুকেশন লোনে আউটস্ট্যান্ডিং অ্যামাউন্ট অর্থাৎ বাকি থাকা অঙ্কের পরিমাণ দিনে দিনে বাড়ছে। ২০১৯ সালের মার্চ মাসের তুলনায় ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তা ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। ৭৬ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা থেকে তা বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ৯ হাজার ৭৪৩ কোটি টাকা।
চড়া সুদের এডুকেশন লোন শোধের উৎকৃষ্ট উপায় হতে পারে সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যানস বা (SIP)-তে বিনিয়োগ। এসআইপি-র মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন আপনি। আর তা থেকে যে লভ্যাংশ আপনি পাবেন, তার মাধ্যমে এডুকেশন লোন শোধ করা অনেক সহজ হতে পারে। এমনকি পড়াশোনা শেষ করে চাকরি পাওয়ার আগেই লোনের টাকা মেটানো শুরু করতে পারেন আপনি। কী ভাবে এসআইপি এডুকেশন লোন পরিশোধে সাহায্য করতে তা একটি উদাহরণের মাধ্যমে বুঝে নিই।
ধরুন বিজয় নামের এক ছাত্র ২৫ লক্ষ টাকা এডুকেশন লোন নিয়েছেন। প্রতি বছর ১০ শতাংশ সুদের হারে ১০ বছরের জন্য এই লোন নিয়েছেন তিনি। এই লোন পরিশোধের জন্য তাঁকে প্রতি মাসে ৩৩ হাজার ৩৮ টাকা ইএমআই হিসাবে দিতে হবে। এই লোন নিয়ে বিজয় কিছু টাকা এসআইপি-র মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করলেন। প্রতি মাসে তিনি ৩ হাজার ৩০৪ টাকা বিনিয়োগ করলেন। যা তাঁর এডুকেশন লোনের ইএমআই-এর দশ ভাগের এক ভাগ। এসআইপি-র মাধ্যমে তিনি ১২ শতাংশ সুদে রিটার্ন পাওয়ার আশা করলেন। এই ভাবে চলতে থাকলে তিনি ১০২ তম মাসে এডুকেশন লোন পরিশোধ করতে পারবেন। এর মাধ্যমে ১৮টি ইএমআই-এর অঙ্ক বাঁচবে তাঁর। যার মূল্য ৫ লক্ষ ৯৪ হাজার ৬৭৮ টাকা। এবং এর জেরে ৪৪ হাজার ৫৭৪ টাকা সুদও কম দিতে হবে তাঁকে। বিজয় যে অঙ্কের এসআইপি করেছেন, তার থেকে বেশি অঙ্কের করতে পারলে স্বাভাবিক ভাবেই ঋণ পরিশোধ আরও সহজ হয়ে যাবে।