এখনই টুইটারের মালিক হওয়া হচ্ছে না ইলন মাস্কের। গত মাসেই জানা গিয়েছিল, ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করে সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থা টুইটার কিনতে চলেছেন ইলন মাস্ক। কিন্তু, আজ শুক্রবার এক টুইট করে মাস্ক নিজেই জানালেন টুইটার ইনকর্পোরেশন অধিগ্রহণের চুক্তি আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, স্প্যাম এবং ভুয়ো অ্যাকাউন্টের বিশদ বিবরণ এখনও তিনি হাতে পাননি। এই করণেই আপাতত এই সাড়া জাগানো চুক্তি স্থগিত রাখা হচ্ছে। টুইটে মাস্ক বলেছেন, ‘মোট ব্যবহারকারীর মাত্র ৫ শতাংশ স্প্যাম বা ভুয়ো অ্যাকাউন্ট, এই হিসাব সমর্থনকারী বিবরণ এখনও মেলেনি বলে অস্থায়ীভাবে টুইটার চুক্তি স্থগিত রাখা হল।’
মাস্কের এই ঘোষণার পরই টুইটার ইনকর্পোরেশনের শেয়ারে বড় ধস নেমেছে। শেয়ার মার্কেট খোলার আগেই সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাটির শেয়ারের দর প্রায় ১৪.৪ শতাংশ পড়েছে। তবে, মাস্কের এই টুইটের বিষয়ে, টুইটার সংস্থার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। গত ২ মে টুইটার সংস্থার পক্ষ থেকে স্টক এক্সচেঞ্জগুলিকে জানানো হয়েছিল, জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে টুইটারের মোট দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ২২ কোটি ৯০ লক্ষ। রয়টার্সের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এর মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশেরও কম হল ভুয়ো বা স্প্যাম অ্যাকাউন্ট।
গত এপ্রিলে ৪৪০০ কোটি ডলারে টুইটার অধিগ্রহণের কথা ঘোষণা করেছিলেন মাস্ক। আসন্ন অধিগ্রহণের চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পরে থেকে, তিনি টুইটার প্ল্যাটফর্মে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার মধ্যে টুইটার প্ল্যাটফর্ম থেকে ‘স্প্যাম বট’ অপসারণ করা তাঁর অন্যতম অগ্রাধিকার হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। স্প্যাম বটকে টুইটারের ‘সবচেয়ে বিরক্তিকর সমস্যা’ বলেছিলেন তিনি।
চুক্তি স্থগিত করার পর, মাস্ক আদৌ টুইটার সংস্থা অধিগ্রহণে আগ্রহী কিনা, তাই নিয়েই ,সংশয় তৈরি হয়েছে। অনেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছেন, চুক্তির কিছুই এখন পাকা নয়। ব্যবসা জগতে জোর গুঞ্জন, মাস্কের প্রথম অগ্রাধিকার হল টেসলা। টুইটার কেনার কথা ঘোষণা করার পরই, স্টক মার্কেটে টেসলা সংস্থার দর পড়েছে। এই অবস্থায় টুইটার সংস্থা কেনার বিষয়ে মাস্ক আগ্রহ হারাতে পারেন, এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আবার, অন্য একটি মত হল, স্টক মার্কেটে টুইটারের বর্তমান অবস্থা দেখে নতুন করে দরাদরি করতে পারেন। এমনকী তাঁর মনমতো না হলে মাস্ক এই চুক্তি থেকেই সরে যেতে পারেন বলেও মনে করা হচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে তাঁকে ১ বিলিয়ন ডলার বা ১০০ কোটি ডলার দিতে হবে টুইটার সংস্থাকে। বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তির তাতে কিছু যাবে আসবে না, এমনটাই বলছেন শিল্প পর্যবেক্ষকরা।