নয়া দিল্লি: ২০২১-২২ আর্থিক বছরের আয়কর রিটার্ন ফাইলের সময় পেরিয়ে গিয়েছে। ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৫.৮০ কোটিরও বেশি ITR ফাইল করা হয়েছে। কিন্তু এমন অনেকেই আছেন যাঁরা বিভিন্ন কারণে ITR ফাইল করতে পারেননি। যদিও ৩১ জুলাইয়ের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও আপনার রিটার্ন ফাইল করার সুযোগ রয়েছে। একে ডিলেইড রিটার্ন বলা হয়। তবে দেরিতে রিটার্ন দাখিল করার জন্য আপনাকে জরিমানা দিতে হবে।
আয়কর আইন ১৯৬১ এর ১৩৯(৪) ধারার অধীনে নির্ধারিত তারিখের পরে আয়কর রিটার্ন ফাইল করাকে ডিলেইড রিটার্ন বলা হয়। ডিলেইড রিটার্ন দাখিল করা যায় বর্তমান অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার শেষ হওয়ার ৩ মাস আগে। এর অর্থ অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার ২০২২-২৩-এর জন্য ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফাইল করা যেতে পারে। অর্থাৎ করদাতার কাছে এটি ফাইল করার জন্য এখনো ৫ মাস সময় আছে।
আয়কর আইন অনুযায়ী কোনও করদাতা ৩১ জুলাই পর্যন্ত রিটার্ন দাখিল না করে থাকলে ডিলেইড ফি দিয়ে রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। ৫ লক্ষ টাকার উপরে আয় ৫ হাজার টাকা লেট ফাইন দিতে হয়। আয় ৫ লক্ষের কম হলে জরিমানা ১ হাজার টাকার বেশি হবে না।
কর বিশেষজ্ঞ সত্যেন্দ্র জৈন বলেন, করদাতার সময়মতো আয়কর রিটার্ন দাখিল করা উচিত। আপনি সময়সীমার আগে রিটার্ন ফাইল করুন এবং পরে সংশোধন করুন।
সময়সীমার পরে রিটার্ন দাখিল করার সময় করদাতাকে শুধু জরিমানাই দিতে হয় না আয়কর আইনের অধীনে অনেক সুবিধাও হারাতে হয়।
1)- যদি একজন করদাতা সময়সীমার মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে না পারেন এবং ডিলেইড রিটার্ন দাখিল করেন তাহলে ক্ষতি (হাউস প্রপার্টি লস ব্যতিত) পরবর্তী বছরগুলিতে বহন করার অনুমতি দেওয়া হয় না। এই ক্ষতিগুলি ৮ বছর পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হতে পারে।
2)- সময়মতো আইটিআর ফাইল করা হলে করদাতা রিফান্ডের অঙ্কে প্রতি মাসে ০.৫ শতাংশ হারে সুদ পান। কেউ যদি সেপ্টেম্বরে রিটার্ন দাখিল করেন তবে সে ২ মাসের জন্য (অর্থাৎ আগস্ট এবং সেপ্টেম্বর) সুদ পাবে না।
3)- ডিলেইড রিটার্ন দাখিল করার সময় যদি কোনও ধরনের ট্যাক্স বকেয়া থাকে তাহলে সুদ জরিমানা হিসেবে নেওয়া হবে। কোন ধরনের ট্যাক্স বকেয়া আছে তার ভিত্তিতে ধারা ২৩৪A, ২৩৪B এবং ২৩৪C এর অধীনে শাস্তিমূলক সুদ নেওয়া হয়। ৩১ জুলাইয়ের আগে সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট ট্যাক্স পরিশোধে ব্যর্থ হলে আয়কর ধারা ২৩৪A এর অধীনে জরিমানা হয়। ৩১ মার্চের আগে অগ্রিম ট্যাক্সের ৯০ শতাংশ দিতে ব্যর্থ হলে ২৩৪B ধারার অধীনে জরিমানা করা হয়। প্রতি মাসে ১ শতাংশ হারে শাস্তিমূলক সুদ নেওয়া হয়।
4)- ডিলেইড রিটার্ন ফাইলিংয়ে রিফান্ড দেরিতে আসে। যদি আপনার ট্যাক্স রিফান্ড জেনারেট করা হয় তবেই তা পাওয়া যাবে।
5)- ডিলেইড রিটার্ন দাখিল করার পর যদি কোনও অসঙ্গতি শনাক্ত করা হয় তাহলে করদাতা ডিলেইড আইটিআর সংশোধন করতে পারেন। তবে অ্যাসেসমেন্ট ২০২২-২৩ এর জন্য ডিলেইড এবং সংশোধিত উভয় রিটার্ন দাখিলের শেষ তারিখ ৩১ ডিসেম্বর। সময়মতো ডিলেইড রিটার্নের জন্য সংশোধিত রিটার্ন ফাইল করুন। এছাড়া ডিলেইড রিটার্ন দাখিলের জন্য নতুন ট্যাক্স ব্যবস্থা বেছে নেওয়ার কোনও অপশন থাকবে না।