Ghost shopping malls: ভারত জুড়ে বাড়ছে ‘ভূতুরে শপিং মল’! ভয়াবহ অবস্থা কলকাতার

Ghost shopping malls: ভারত জুড়ে ক্রমে বাড়ছে 'গোস্ট শপিং মল' বা 'ভূতুরে শপিং মল'এর সংখ্যা। বিশেষ করে, ২০২৩ সালে ভূতুরে মলের সংখ্যার ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটেছে। ২০২২-এর তুলনায় বেড়েছে প্রায় ৫৯ শতাংশ। সবথেকে খারাপ অবস্থা অবশ্য কলকাতার।

Ghost shopping malls: ভারত জুড়ে বাড়ছে 'ভূতুরে শপিং মল'! ভয়াবহ অবস্থা কলকাতার
প্রতীকী ছবিImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Updated on: May 08, 2024 | 7:28 PM

কলকাতা: ভারত জুড়ে ক্রমে বাড়ছে ‘গোস্ট শপিং মল’ বা ‘ভূতুরে শপিং মল’এর সংখ্যা। বিশেষ করে, ২০২৩ সালে ভূতুরে মলের সংখ্যার ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটেছে। ২০২২-এর তুলনায় বেড়েছে প্রায় ৫৯ শতাংশ। ২০২৩-এ প্রায় ১ কোটি ৩৩লক্ষ বর্গফুট রিটেইল স্পেসকে ‘ভূতুরে শপিং মল’ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। ভূতুরে শপিং মল মানে, শপিং মলগুলিতে ভূতের উপদ্রব হয়, এমন নয়। ব্যবসায়িক পরিভাষায়, যে শপিং মলগুলির অধিকাংশ দোকানই খালি পড়ে থাকে এবং উপভোক্তাদের উপস্থিতি অত্যন্ত কম হয়, সেগুলিকে গোস্ট শপিং মল বলা হয়। কাজেই এই ধরণের শপিং মলের সংখ্যা যত বাড়বে, ততই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে ভারত। এই বিষয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিয়েল এস্টেট কনসাটেন্সি ফার্ম, ‘নাইট ফ্রাঙ্ক ইন্ডিয়া’। ‘থিঙ্ক ইন্ডিয়া থিঙ্ক রিটেইল ২০২৪: শপিং সেন্টার অ্যান্ড হাই স্ট্রিট ডায়নামিকস অ্যাক্রোস ২৯ সিটি’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ‘ভূতুরে শপিং মলের’ সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে, ২০২৩ সালে ভারতের ৬৭০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

২০২৩-এ ভারতে মোট আটটি নতুন রিটেইল সেন্টার হয়েছে। তা সত্ত্বেও, এই বছর ভারতের মোট শপিং সেন্টারের সংখ্যা ২৬৩-এ নেমে এসেছে। কারণ একই সময়ে ১৬টি শপিং সেন্টার বন্ধও হয়ে গিয়েছে। রিপোর্ট অনুসারে, ভারতে গোস্ট শপিং সেন্টারের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য সবথেকে বেশি দায়ী দিল্লি জাতীয় রাজধানী এলাকা। ২০২৩-এ দিল্লি ও তার আশপাশের এলাকার গোস্ট শপিং মলগুলিতে মোট ইজারাযোগ্য জায়গার পরিমাণ বেড়ে ৫৩ লক্ষ বর্গফুট হয়েছে। এক বছরে বৃদ্ধি হয়েছে ৫৮ শতাংশ। এই বিষয়ে দিল্লির পরই আছে মুম্বই। মুম্বইয়ের গোস্ট শপিং মলগুলিতে ২১ লক্ষ বর্গফুট ইজারাযোগ্য জায়গা রয়েছে। বার্ষিক বৃদ্ধি ৮৬ শতাংশ। বেঙ্গালুরুতে গোস্ট শপিং মলে ইজারাযোগ্য জায়গা রয়েছে ২০ লক্ষ বর্গফুট। বছরে বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। ২০২৩-এ ভারতের মধ্যে গোস্ট শপিং সেন্টারের ইজারাযোগ্য জায়গার পরিমাণ একমাত্র কমেছে হায়দরাবাদ শহরে। ১৯ শতাংশ কমে হয়েছে ৯ লক্ষ বর্গফুট।

সবথেকে খারাপ অবস্থা অবশ্য কলকাতার। ভারতের মধ্যে ভূতুরে শপিং সেন্টারের প্রসার সবচেয়ে বেশি ঘটেছে আমাদের শহরেই। ২০২৩-এ কলকাতায় গোস্ট শপিং সেন্টারে ইজারাযোগ্য জায়গার পরিমাণ বেড়েছে ২৩৭ শতাংশ। ২০২২-এ কলকাতায় এই ধরনের জায়গার পরিমাণ য়েখানে ছিল ৩ লক্ষ বর্গফুট, ২০২৩-এ তা বেড়ে হয়েছে ১১ লক্ষ বর্গফুট। বর্তমানে শহরে ২৩টি শপিং মল রয়েছে। ২০২২-এ এর মধ্যে গোস্ট শপিং সেন্টার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল ৪টি মল। ২০২৩-এ আরো দুটি মল এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে। অথচ, কলকাতায় প্রতি হাজার জনে শপিং মলের ঘনত্ব, ভারতের অন্যান্য শহরের থেকে অনেক কম। কলকাতায় প্রতি হাজার জনে মোট ইজারাযোগ্য জায়গার পরিমাণ মাত্র ৩৫৭ বর্গফুট। বেঙ্গালুরুর কত জানেন? ১,১৪০ বর্গফুট।

ভূতুরে শপিং মলের সংখ্যা বাড়ার কারণ কী? বিশ্লেষকদের মতে, ভারত জুড়ে ভূতুরে শপিং মলের সংখ্যা বৃদ্ধির পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে। অনেকাংশে দায়ী দুর্বল ব্যবস্থাপনা। এছাড়া, অনেক ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়েছে অবস্থানগত অসুবিধা। আবার অনেক ক্ষেত্রে শপিং মলগুলির আকার ছোট হওয়ার কারণেও, মলগুলি ভূতুরে হয়ে উঠছে। আকারে ছোট হওয়ার কারণে, অনেক সময় এই মলগুলিতে ভিন্ন ভিন্ন ব্র্যান্ডের অভাব দেখা দেয়। এর পাশাপাশি, খুচরো বাজারে উপভোক্তাদের আচরণ পরিবর্তনও ভূতুরে শপিং মল সৃষ্টির অন্যতম কারণ। বর্তমানে, বিশেষ করে কোভিড মহামারির পর, আরও বেশি বেশি মানুষ অনলাইনে কেনাকাটা করছেন। কিংবা, ভাল পণ্য কেনার আশায় তারা বড় বড় শপিং সেন্টারগুলিতে যাচ্ছেন। পা পড়ছে না ছোট শপিং মলগুলিতে। ফলে ছোট মলগুলির ক্ষেত্রে, গোস্ট শপিং সেন্টারে পরিণত হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে। আবাসিক বা বাণিজ্যিক কাজের জায়গায় পরিণত করতে, ভেঙে ফেলা হচ্ছে দুর্বল শপিং সেন্টারগুলি। কখনও বা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিলামও করা হচ্ছে।