কলকাতা: সামনেই বিয়ের মরশুম। পাশাপাশি বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজোও দোড়গোড়ায়। এই অবস্থায় পুজোর আগেই সোনা নিয়ে এল মধ্যবিত্তের জন্য সোনার সময়। এক বছরে সবচেয়ে সস্তা হল সোনার দাম। আন্তর্জাতিক স্তরে দাম বাড়া সত্ত্বেও ঘরোয়া বাজারে এই নিয়ে তৃতীয় দিনও নেমে গেল সোনার দাম। আজ দিল্লির সোনা-রুপোর বাজারে সোনার দাম নেমে গেল প্রতি দশ গ্রাম ২৬৪ টাকা। অন্যদিকে রুপোর দামে প্রতি কেজিতে ২২ টাকার সামান্য বৃদ্ধি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২০-তে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় সোনায় প্রচুর বিনিয়োগ হয়েছিল। এই কারণে সে বছর অগষ্টে সোনার দাম ছিল প্রতি দশ গ্রাম ৫৬,২০০ টাকা। আর এই মুহূর্তে শেয়ার বাজারে ১০ গ্রাম সোনা পাওয়া যাচ্ছে ৪৫০০০ টাকায়। অর্থাৎ এক বছরের মধ্যে ১০,৬০০ টাকা সস্তায় হয়েছে সোনা।
হলুদ ধাতুর নতুন দাম (Gold price, 8 September 2021)
দিল্লির সোনা-রুপোর বাজারে আজ বুধবার ৯৯.৯ শতাংশ খাঁটি অর্থাৎ ২৪ ক্যারেট সোনার দাম ২৬৪ টাকা কমে ৪৬,১৪০ টাকায় নেমে গিয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার বাজার বন্ধের সময় প্রতি দশ গ্রাম সোনার দাম ছিল ৪৬,৪০৪ টাকা। যদিও শুরুর দিকে দাম পড়ার পর আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম বাড়তে দেখা গিয়েছে। শেষমেশ সোনার দাম আউন্স প্রতি ১,৮০০ ডলারে বাজার বন্ধ হয়েছিল।
রুপোর নতুন দাম (Silver price, 8 September)
সোনার দাম কমলেও ঘরোয়া বাজারে সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে রুপোর দাম। বুধবার দিল্লির বাজারে প্রতি কিলোগ্রামে ২২ টাকা বেড়েছে রুপো। গতকালে দাম ছিল কিলোগ্রাম প্রতি ৬৩,৪৬৪ টাকা। এ দিন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩,৪৮৬ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে রুপোর দাম পৌঁছেছে প্রতি আউন্স ২৪.৩৭ ডলার।
কেনো সস্তা হল সোনার দাম?
সোনার দাম পড়ে যাওয়ার কারণ জানাতে গিয়ে এইচডিএফসি সিকিউরিটিজের বিশেষজ্ঞ তপন প্যাটেল জানান, বিদেশি বাজারে সোনার দাম শুরুর দিকে সস্তা হওয়ার পর বাড়তে দেখা গিয়েছে। তবে ঘরোয়া বাজারে এই ট্রেন্ড দুর্বল হয়ে রয়েছে।
জেনে নিন বিশ্বে কার কাছে রয়েছে সবচেয়ে বেশি সোনা
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সোনা আমদানি করে ভারত। এর অনেকটাই কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রাখে সরকার। যাকে গোল্ড রিজার্ভ বা সোনার ভাণ্ডার বলা হয়ে থাকে। এই গচ্ছিত সোনা সঙ্কটের সময় সম্পদের রক্ষার্থে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে জুন ১৯৯০ থেকে ১৯৯১ এই সাত মাস দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন চন্দ্রশেখর। সেই সময় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর হত্যার কারণে রাজনৈতিক এবং আর্থিক অবস্থা ভীষণই খারাপ ছিল। দেশের অর্থ ব্যবস্থা সঙ্কটের মুখে পড়ে। এই সময় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ৪৭ টন সোনা বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
সোনা মজুত রাখার দিক দিয়ে আমেরিকা শীর্ষে রয়েছে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল জানিয়েছে আমেরিকার কাছে বর্তমানে ৮১৩৩.৫ টন সোনা রয়েছে। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জার্মানি। তাদের কাছে বর্তমানে ৩৩৬২.৪ টন সোনা রয়েছে। ৩১ মার্চ ২০২১ পর্যন্ত ২৪৫১.৮ টল সোনা নিয়ে এই তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইতালি। তালিকায় ভারতের স্থান নবম স্থানে। এই মুহূর্তে ভারতের কাছে মজুত সোনার পরিমাণ ৬৯৫.৩ টন।