কলকাতা: ১০টা-৫টার চাকরিতে হাড়ভাঙা খাটুনিতে বিরক্ত আজকের যুব প্রজন্ম। তারা হার্ডওয়ার্কের থেকেও বেশী বিশ্বাসী স্মার্টওয়ার্কে। সেই কারণেই চাকরি থেকে মুখ ঘোরাচ্ছেন অনেকেই। কেউ কেউ আবার চাকরি করলেও, তা দীর্ঘ সময় ধরে করার ইচ্ছা রাখেন না। অবসরের বয়সও তাই এক ধাক্কায় ৬০ থেকে কমিয়ে ৪০ বা ৫০-এ এনে ফেলেছে অনেকে। তবে বাকি জীবনের কথাও তো ভাবতে হবে! সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে বাকি সময়টুকু কাটানোর জন্য প্রয়োজন অর্থের। শুনলে আশ্চর্য লাগলেও, আপনার জীবনযাত্রায় সামান্য কিছু পরিবর্তন ও পরিকল্পনার মাধ্যমেই এই অসাধ্য সাধন সম্ভব।
আর্থিকভাবে সাবলম্বী হওয়া, নিজের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য আর্থিক স্থিতাবস্থাকেও গুরুত্ব দেওয়া উচিত। আপনার আয় ও তা সাশ্রয়ের উপরই নির্ভর করে আপনার অবসর জীবন কেমন হতে চলেছে। দ্রুত একঘেয়েমির চাকরি জীবন থেকে মুক্তি পেতে এই পরামর্শগুলি অবশ্যই মেনে চলুন-
ভবিষ্যতের জন্য আর্থিক পরিকল্পনার ক্ষেত্রে প্রথমেই গুরুত্ব পায় পরিকল্পনা। আপনার লক্ষ্য কী, কতটা তা বাস্তবোচিত, কীভাবে তা অর্জন করা সম্ভব-এ গুলি সবার আগেই ভাবনাচিন্তা করে স্থির করা উচিত। ধরুন, আপনি চান ৪০ বছর বয়সে আপনি অবসর নেবেন। অবসরের পর বাকি জীবনটুকু অতিবাহিত করার জন্য ২ কোটি টাকা জমানোর পরিকল্পনা করেছেন আপনি। সেক্ষেত্রে আপনাকে ২০ বা ২৫ বছর বয়স থেকেই কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় শুরু করতে হবে।
স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন কাটানোর অন্যতম শর্ত হচ্ছে আর্থিকভাবে সাবলম্বী হওয়া এবং কখনওই কারোর উপর নির্ভরশীল না হওয়া। যদি আপনি শখ পূরণের জন্য ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েন, তবে ভবিষ্যতের জন্য তা মঙ্গলদায়ক নয়। এক্ষেত্রে ক্রেডিট কার্ড যথাসম্ভব এড়িয়ে চলাই ভাল। যদি আপনি আপনার ক্রেডিট লিমিটের ৩০ শতাংশের বেশি খরচ করছেন, তবে তা কিন্তু বিপদ সঙ্কেত। কারণ সঠিক সময়ে ক্রেডিট কার্ডের বিল মেটাতে না পারলে চড়া সুদের হার মেটাতে হতে পারে।
বর্তমান প্রজন্মের জন্য এই বিষয়টি বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই প্রতি মাসে যা আয় করেন, তার ৮০ বা ৯০ শতাংশই খরচ করে ফেলেন। যদি ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে চান, তবে বাজে খরচ বন্ধ করতেই হবে। নিজের বেতনের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ সঞ্চয় করার চেষ্টা করুন। বাকি অংশ দিতে সংসারের যাবতীয় খরচ বহন করুন। এরপরে যদি কিছু টাকা বাকি থাকে, তবে সেই টাকা নিজের শখ মেটানোর জন্য় খরচ করতে পারেন।
আর্থিক সাবলম্বী হওয়ার ক্ষেত্রে বাজেট অত্যন্ত জরুরি। নিজের খরচের হিসাব রাখার জন্য বাজেট প্রয়োজন। আপনি সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী থেকে শুরু করে শাক-সবজি, বাড়ির বিদ্যুতের বিল, যাতায়াতের খরচ- সবকিছুরই একটি তালিকা তৈরি করে হিসাব রাখুন। এক্ষেত্রে কোন খাতে কত টাকা খরচ হচ্ছে এবং কত টাকা সাশ্রয় হচ্ছে, তার স্পষ্ট ধারণা তৈরি হবে।
নিজের সঞ্চয় করা অর্থ থেকেও আয়ের সুযোগ করে দেয় বিনিয়োগ। অল্প করে যদি আপনি এসআইপি বা ফিক্সড ডিপোজিটে টাকা জমা রাখেন, তবে ভবিষ্যতে তা থেকে ভাল লাভ পেতে পারেন।