কলকাতা: মাসের শুরুতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকলেই হাত নিশপিশ করে খরচের জন্য? মাসের শেষে মানিব্যাগ খুলতেই দেখেন পড়ে রয়েছে দু’আনা-চার আনা! শুধু আপনিই নয়, এমন অবস্থা যুব প্রজন্মের অনেকেরই। টাকা জমানোর কথা ভাবলেও, অনেকেই খরচের হিসাব সঠিকভাবে কষতে না পারায় মাসের শেষে খেই হারিয়ে ফেলেন। তবে ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখার জন্য সঞ্চয় অত্যন্ত জরুরি। তাই কীভাবে প্রতি মাসে সামান্য হলেও টাকা জমাবেন, তার সহজ পদ্ধতি জেনে নিন।
২০-র কোঠা পার করে কর্মজীবনে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই অবসর জীবন নিয়েও ভাবনা চিন্তা শুরু করা উচিত। কারণ আগের মতো এখনকার প্রজন্ম ৬০-৬৫ বছর অবধি কাজ করতে চায় না। ৪০-র পরই অবসর নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করে দেন সবাই। দ্রুত অথচ আরামদায়ক অবসর জীবন পেতে গেলেও প্রয়োজন আর্থিক সঞ্চয়ের। তাই যৌবনে আনন্দের পাশাপাশি ভবিষ্যতের কথাও একইসঙ্গে ভেবে রাখা উচিত।
টাকা সঞ্চয়ের সবথেকে সহজ পদ্ধতি হল “এনভেলপ সিস্টেম” অনুসরণ করা। এবার প্রশ্ন উঠবে এই এনভেলপ পদ্ধতি কী? ছোটবেলায় মা-বাবাকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে টাকা জমাতে দেখেছেন? আপনার কাছেও কি ছোটবেলায় পিগি ব্যাঙ্ক ছিল, যেখানে প্রতিদিন বাবার থেকে চেয়ে-চিন্তে এক-দু”টাকা জমাতেন? এই এনভেলপ পদ্ধতি হল তারই বড় আকার। মাইনে হাতে পেয়েই আগে নানা খাপে নিজের খরচকে ভাগ করে নিন।
কী কী ভাগ করবেন?
১, বাড়ির খরচ– যদি ভাড়া বাড়িতে থাকেন, তবে প্রতি মাসে বাড়ি ভাড়ার জন্য আলাদাভাবে টাকা সরিয়ে রাখুন। নিজের বাড়ি হলে বিদ্যুতের বিল, করের জন্য আলাদাভাবে টাকা সরিয়ে রাখুন প্রথমেই।
২. যাতায়াতের ভাড়া– প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার জন্য একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা খরচ হয়। গোটা মাসে যাতায়াতের জন্য যত টাকা খরচ হয়, তার হিসাব করুন। এরসঙ্গে অতিরিক্ত এক বা দু’হাজার টাকা যোগ করুন জরুরি পরিস্থিতিতে ট্যাক্সিতে যাতায়াতের জন্য।
৩. ভবিষ্যতের সঞ্চয়– মাইনে পেয়ে উল্টোপাল্টা খরচের বদলে ভবিষ্যতের সঞ্চয়ের জন্য একটা অংশ টাকা সরিয়ে রাখুন। মনে রাখবেন, টাকার এই শতাংশ যেন কমপক্ষে ২৫ শতাংশ হয়। তবেই দ্রুত টাকা সঞ্চয় হবে আপনার। ধরুন আপনি মাইনে পান ১০ হাজার টাকা। তবে অন্তত ২৫০০ টাকা সরিয়ে রাখুন ভবিষ্যতের জন্য।
৪. অতিরিক্ত খরচ– আয় করা শুরু করেছেন, এর অর্থ এই নয় যে জীবন থেকে সব আনন্দ বাদ দিয়ে দেবেন। অবশ্যই তার জন্য় মাইনে থেকে একটা অংশ সরিয়ে রাখুন। তবে সেই মজার জন্য খরচ কতটা হবে, তা একটু অঙ্ক কষেই ভাবুন। প্রতি সপ্তাহেই তো দামী রেস্তরাঁয় খেতে যাওয়া বা সিনেমা দেখার প্রয়োজন নেই। বরং মাসে একটা দিন ধার্য করুন, যা শুধমাত্র আপনার মন খুশি করার জন্য থাকবে।