মোবাইল থেকে ল্যাপটপ, ভারতে ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর উৎপাদন বাড়াতে এবং চিন নির্ভরতা কমাতে এবার ৫ বিলিয়ন ডলার অবধি আর্থিক সাহায্য করবে সরকার, জানিয়েছেন দু’জন সরকারি কর্মকর্তা।
গত ৬ বছরে ভারতে মোবাইল উৎপাদন আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। চলতি বছরেই প্রায় ১১৫ বিলিয়ন ডলারের মোবাইল উৎপাদন হয়েছে ভারতে। অ্যাপল বা স্যামসাং সংস্থাগুলির ক্রমবর্ধমান মোবাইল উৎপাদনের জেরে এখন ভারত বিশ্বে চতুর্থ বৃহত্তম স্মার্ট ফোন সরবরাহকারী দেশে পরিণৎ হয়েছে। তবে স্মার্ট ফোনের উৎপাদন বাড়লেও আজও বড় অংশ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ‘পার্টস’ আসে চিন থেকেই। ফলে বার বার সমালোচনর মুখে পড়তে হয় এই শিল্পকে।
এক সরকারি কর্মকর্তা এই বিষয়ে বলেন, “নতুন প্রকল্প ‘প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ডে’র মতো মূল উপাদানগুলির উৎপাদন বাড়াতেও সাহায্য করবে। ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে কেবল গতি আসবে তাই নয় মোবাইল তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় পার্টসের দেশীয় উৎপাদনকেও আরও বেশি করে উৎসাহ জোগাবে।”
আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে নতুন এই প্রকল্প চালু হতে পারে বলে খবর। যদিও এই প্রকল্পের সম্বন্ধে বিশদে এখনই কিছু জানা যায়নি। এই প্রকল্পের অধীনে সরকার মোবাইল উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কিছু সংস্থাকে মোট ৪-৫ বিলিয়ন ডলার টাকা অনুদান দিতে পারে। তবে নির্দিষ্ট কিছু মাপকাঠি আছে তা পাশ করলেই তবেই পাওয়া যাবে টাকা।
সূত্রের খবর কোন কোন যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে অনুদান দেওয়া হবে এবং কী ভাবে প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারবেন, এই সবই ঠিক করেছে ভারতের ইলেকট্রনিক্স মন্ত্রক। প্রকল্পের পরিকল্পনা শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সূত্রের খবর হয়তো আগামী ২-৩ মাসের মধ্যেই অর্থ দফতর থেকে প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা হবে। যদিও এই সম্পর্কে ইলেকট্রনিক্স মন্ত্রক এবং অর্থ মন্ত্রক থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
নীতি আয়োগ কমিটির দেওয়া তথ্য অনুসারে ভারত ২০৩০ অর্থবর্ষের মধ্যে ১৫০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের উপাদান সহ ইলেকট্রনিক্স ক্ষেত্রে উৎপাদনকে ৫০০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য।
বেসরকারী সংস্থা GTRI-এর তথ্য অনুসারে ভারত ২০২৪ অর্থবর্ষে ৮৯.৮ বিলিয়ন ডলারের ইলেকট্রনিক্স, টেলিকম গিয়ার এবং বৈদ্যুতিক পণ্য আমদানি করেছে। যার মধ্যে অধিকাংশই চিন এবং হংকং থেকে এসেছে।
ভারতের সেলুলার এবং ইলেকট্রনিক্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান পঙ্কজ মহিন্দ্রু বলেন, “এই প্রকল্পটি এমন এক সময়ে আসছে যখন মোবাইল উৎপাদনের প্রয়োজনীয় উপাদান তৈরির দিকেও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। যা বাস্তবে আমাদের বৈশ্বিক স্তরে ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী উৎপাদনে সাহায্য করবে।”