কলকাতা: তারিখটা ছিল ২৭ জানুয়ারি, ২০২০। ওই দিনই ভারতে প্রথম করোনা সংক্রমণের কথা জানা গিয়েছিল। কেরলে আক্রান্তের খোঁজ মিললেও হইচই পড়ে গিয়েছিল গোটা দেশেই। কিছু সময়ের মধ্যেই জারি হয়ে গিয়েছিল দেশজোড়া লকডাউন। স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল জনজীবন। মহামারির করাল গ্রাসে দেশের অর্থনীতিও একটু একটু করে বেলাইন হতে শুরু করে দিয়েছিল। বেড়েছিল বেকারত্ব। বেলাগাম মুদ্রাস্ফীতি জনমনে ব্যাপক আতঙ্কেরও সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু, তারপর গঙ্গা-যমুনা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। করোনা মন্দা কাটিয়ে ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারতীয় অর্থনীতি।
তবে শুধু ভারতই যে এই মহামারীর শিকার হয়েছিল তা নয়। জাপান এবং ব্রিটেনের মতো দেশগুলিতেও চওড়া হয়েছিল করোনার থাবা। কিন্তু মহামারি শেষ হলে ভারতের অর্থনীতি আবার ট্র্যাকে ফিরে আসে। ২০১৩-২৪ সালে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ৭.৩ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে যা ছিল ৭.২ শতাংশ। কিন্তু জাপান ও ব্রিটেন এখনও নিজেদের সেই অর্থে মন্দার ফাঁড়া থেকে টেনে তুলতে পারেনি। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে জাপানকে বিশ্বের তৃতীয় শক্তিশালী অর্থনীতির মর্যাদাও হারাতে হয়েছিল।
মন্দার কবলে পড়ার পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির মুকুট হারিয়ে জাপান এখন জার্মানির নিচে নেমে গিয়েছে। অর্থনীতিবিদদের একাংশ বলছেন, জাপানের মানুষের একটা বড় অংশ ক্রমেই বার্ধক্যের দিকে হাঁটছেন। কমছে তারুণ্যের প্রাবল্য। সে কারণেই সামগ্রিকভাবে মানুষের কাজ করার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে দেশের অর্থনীতিতে।
জাপানের অর্থনীতি এখন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি। ২০২৩ সালে এই দেশের অর্থনীতি সামগ্রিক বিচারে ১.৯ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। কিন্তু, দেশে চলা মুদ্রস্ফীতির নিরিখে তা পর্যাপ্ত নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। এদিকে ২০২২ এবং ২০২৩ সালে মার্কিন ডলারের তুলনা জাপানি মুদ্রার দাম হুহু করে পড়েছে। গত বছরেই ৭ শতাংশ পতন দেখা গিয়েছে।
অন্যদিকে ব্রিটেনের অর্থনীতির দিকে তাকালে ২০২৩ সালে দ্বিতীয়ার্ধে সেখানে ব্য়াপক মন্দা দেখা গিয়েছে। অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ওএনএস) বলেছে গত ডিসেম্বরে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকে ০.১ শতাংশ কমেছে জিডিপি। সেখানে তার আগের জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে জিডিপি কমেছে ০.৩ শতাংশ।