দিনক্ষণ প্রায় এগিয়েই এল। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩-২৪ সালের বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। এই বারের বাজেটে নির্মলার ঝুলিতে আম জনতার জন্য কী রয়েছে তা নিয়ে তো উত্তেজনা বিদ্যমান। ইতিমধ্যেই একাধিক প্রত্যাশা মনে সাজিয়ে বসে রয়েছেন নাগরিকরা। তবে বাজেট পেশের আগে এ সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সম্বন্ধে দেশের সকল নাগরিকদের জেনে রাখা জরুরি। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলি।
ফিসক্যাল ঘাটতি (Fiscal Deficit):
কোনও অর্থবর্ষে সরকারের ব্যয়, আয়ের থেকে বেশি হয়ে গেলে সেই পরিস্থিতিকেই ফিসক্যাল ঘাটতি বলা হয়ে থাকে। মোট কত পরিমাণ অর্থ সরকারকে ধার করতে হবে এই ফিসক্যাল ঘাটতি থেকেই সেটা নির্ধারিত হয়।
রাজস্ব ঘাটতি (Revenue Deficit):
সরকারের দৈনন্দিন কাজে মোট ব্যয় এবং কর ও অন্য়ান্য উৎস থেকে মোট আয়ের মধ্যে পার্থক্য হল রাজস্ব ঘাটতি। সরকারের অর্থনৈতিক অবস্থা কীরকম তার একটি বড় মাপকাঠি হল এই রাজস্ব ঘাটতি। এই রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিলে এই পার্থক্য ঘোচাতে সরকারকে ঋণ নিতেই হবে।
কর রাজস্ব (Tax Revenue):
নাগরিকদের আয়, মুনাফা এবং পণ্য ও পরিষেবার ব্যবহারের উপর কর থেকে সরকার কর্তৃক সংগৃহীত অর্থের পরিমাণই কর রাজস্ব। এর মধ্যে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ উভয় করই অন্তর্ভুক্ত। সরকারের আয়ের প্রধান উৎসই হল এই কর রাজস্ব।
প্রত্যক্ষ কর (Direct Tax):
প্রত্যক্ষ কর হল এক ধরনের কর যা ব্যক্তি এবং ব্যবসার আয়ের উপর আরোপ করা হয়। এই ক্ষেত্রে যে ব্যক্তি কর প্রদান করে এবং যার উপর কর আরোপ করা হয় তারা একই। যেমন-আয়কর, কর্পোরেট কর, সম্পত্তি কর এবং উত্তরাধিকার কর।
পরোক্ষ কর (Indirect Tax):
পরোক্ষ কর হল এক ধরনের কর যা পণ্য ও পরিষেবার উপর আরোপ করা হয়। এই ক্ষেত্রে কর প্রদানকারী ব্যক্তি এবং যার উপর কর আরোপ করা হয়েছে তারা ভিন্ন হন। সরাসরি এই কর দেওয়া হয় না। কারও মারফত এই কর সরকারের কাছে পৌঁছে যায়। তাই এই করের নাম পরোক্ষ কর। যেমন-জিএসটি, শুল্ক ও কেন্দ্রীয় আবগারি।
গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট (GDP):
কোনও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনও দেশের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে মোট উৎপাদনের মূল্যের যোগফল হল জিডিপি।
মূল্যবৃদ্ধি (Inflation):
যে হারে একটি অর্থনীতিতে কোনও পণ্য বা পরিষেবার সামগ্রিক ব্যয় বাড়ছে তাই হল মূল্যবৃদ্ধি।
শুল্ক (Custom Duty):
কোনও দেশে বা দেশের বাইরে পণ্য আমদানি ও রফতানির ক্ষেত্রে আরোপিত একটি পরোক্ষ কর হল শুল্ক। এই করের খরচ সাধারণত পণ্যের শেষ উপভোক্তার কাছে যায়।
ফিসক্যাল নীতি (Fiscal Policy):
সরকারের অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য তার ব্যয় ও আয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখার উদ্দেশ্যে যে নীতি গ্রহণ করা হয় তাই হল ফিসক্যাল নীতি।
একত্রিত তহবিল (Consolidated Fund):
ভারতের কনসলিডেটেড ফান্ড হল একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অ্যাকাউন্ট। কোনও অর্থবর্ষে সরকারের আয় ও ব্যয় এই ফান্ড থেকেই যোগ বিয়োগ হয়। তবে এই তহবিল থেকে বিভিন্ন বিপর্যয়ের জন্য টাকা খরচ করা হয় না।