নয়া দিল্লি: দূরপাল্লার ট্রেন যাত্রায় বিনোদনের যেমন দরকার, তেমনই আবার খাবার-জলেরও প্রয়োজন। ব্যাগে করে শুকনো খাবার নিয়ে গিয়ে বা রেলের ক্যাটারিং সার্ভিস থেকে খাবার অর্ডার করে পেটের খিদে তো মেটানো যায়, কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় পানীয় জল নিয়েই। স্টেশনে পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকলেও, অনেকেই স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে সেই কলের জল খেতে রাজি থাকেন না। অগ্যতা প্যাকেটজাত বা প্ল্যাস্টিকের বোতলে ভরা জল কিনতেই বাধ্য হন রেলযাত্রীরা। কিন্তু সবক্ষেত্রে সেই জলও সুরক্ষিত হয় না। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পুরনো বোতলেই জল ভর্তি করে বিক্রি করেন। আপনিও যদি ট্রেনে যাতায়াতের সময়ে পানীয় জল নিয়ে চিন্তিত থাকেন, তবে আপনার জন্য রয়েছে সুখবর। এবার আকাশ থেকেই আসবে জল!
শুনে অবিশ্বাস্য লাগলেও, এটা কিন্তু সম্পূর্ণ সত্যি। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাতাসকে ঘনীভূত করেই তৈরি করা হবে পানীয় জল। আপাতত কেন্দ্রীয় রেলওয়ের মুম্বই শাখার ছয়টি রেলস্টেশনে এই আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি পানীয় জল পাওয়া যাবে। এই জল কতটা সুরক্ষিত বা স্বাস্থ্যসম্মত, তা নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই। রাষ্ট্রসঙ্ঘের তরফেও এই নতুন পদ্ধতিতে জল তৈরির ব্যবস্থাকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে।
মেঘদূত হল বায়ুমণ্ডলীয় জলের জেনারেটর। এটি এমন একটি যন্ত্র যা বায়ুমণ্ডলে থাকা বাতাস থেকে জল বের করে আনে ঘনীভবন পদ্ধতি অনুসরণ করে। চলতি বছরের জুন মাসেই রাষ্ট্রসঙ্ঘের তরফে এটিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় বিশ্বব্যপী নির্ভরশীল উন্নয়ন পদ্ধতি হিসাবে। আধুনিক এই প্রযুক্তি কাজে লাগিয়েই এবার থেকে রেলওয়ে স্টেশনগুলিতে পানীয় জল পাওয়া যাবে।
জানা গিয়েছে, মৈত্রী অ্যাকোয়াটেক প্রাইভেট লিমিটেডকেই এই ওয়াটার জেনারেটর তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে মুম্বই শাখার ৬টি স্টেশনে মোট ১৭টি মেঘদূত ওয়াটার জেনারেটর বসানো হবে। কিয়স্কগুলি বসানোর জন্য় প্রতি বছর রেলওয়েকে ২৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা করে লাইসেন্স ফি দিতে হবে। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস ও দাদরে ৫টি করে কিয়স্ক বসানো হবে, কুর্লায় ১টি, খানেতে ৪টি, ঘাটকোপাড় ও ভিকরোলিতে ১টি করে কিয়স্ক বসানো হবে।
মেঘদূত ওয়াটার জেনারেটরে জলীয় বাষ্পকে পানীয় জলে পরিণত করা হবে। এমনকি দলের তাপমাত্রা কত হবে, তাও আপনি ঠিক করতে পারবেন। এক একটি জেনারেটর প্রতি ঘণ্টায় ১ হাজার লিটার পানীয় জল উৎপাদন করতে সক্ষম বলেই জানা গিয়েছে।
৩০০ মিলিলিটার জলের বোতলের জন্য খরচ পড়বে ৫ টাকা।
৫০০ মিলিলিটারের জলের বোতল ভরার জন্য ৮ টাকা খরচ করতে হবে যাত্রীদের।
১ লিটারের জলের বোতল ভরার জন্য খরচ পড়বে মাত্র ১২ টাকা।
এছাড়া, ৩০০ মিলিলিটারের জলের বোতল কেনার জন্য ৭ টাকা,
৫০০ মিলিলিটারের জলের বোতলের জন্য ১২ টাকা ও
১ লিটারের জলের বোতলের জন্য ১৫ টাকা খরচ হবে।