বেঙ্গালুরু: আক্ষেপ রয়ে গিয়েছে ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির। ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল এই সংস্থার। আজ বিশ্বের অন্যতম সেরা তথ্য প্রযুক্তি সংস্থায় পরিণত হয়েছে ইনফোসিস। ইনফোসিসকে অতি দ্রুত এই জায়গায় নিয়ে আসার পিছনে নারায়ণ মূর্তির যে বিশাল অবদান রয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। তবে, খোদ নারায়ণ মূর্তির মতেই, সংস্থার শুরুর দিনগুলিতে তিনি পাশে পেয়েছিলেন এমন কিছু কর্মীদের, সংস্থার উত্থানে যাঁদের অবদান নারায়ণ মূর্তির থেকে কিছু কম ছিল না। বরং অনেক ক্ষেত্রে তাঁর থেকেও বেশি অবদান রেখেছিলেন ওই কর্মীরা। আক্ষেপ কীসের? প্রথম দিকের সেই কর্মচারীদের অনেককেই পুরস্কৃত করতে পারেননি তিনি। সম্প্রতি, এক বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন নারায়ণ মূর্তি।
নারায়ণ মূর্তি এবং সুধা মূর্তির প্রেম নিয়ে, ‘আনকমন লাভ’ নামে একটি বই লিখেছেন লেখিকা চিত্রা ব্য়ানার্জি দিবাকরুনি। ওই বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে মেয়ে অক্ষতা এবং ছেলে রোহনের সঙ্গে উপস্থিত হয়েছিলেন নারায়ণ ও সুধা মূর্তি। সেই অনুষ্ঠানেই ইনফোসিসের সাফল্যের পিছনে ওই কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা স্বীকার করেছেন নারায়ণ মূর্তি। তিনি বলেছেন, “ইনফোসিসের প্রথম দিনগুলিতে বেশ কয়েকজন অত্যন্ত স্মার্ট কর্মী ছিল। তাঁদের আমি যথাযথভাবে পুরষ্কার দিতে পারিনি। ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতাদের যে ধরনের স্টক দিয়েছিলাম আমি, ওদের সেই রকম দেওয়া উচিত ছিল। এই বিষয়ে আমার খুব সতর্কতার সঙ্গে চিন্তা-ভাবনা করা উচিত ছিল। তা করলে, ওই অসাধারণ মানুষগুলোরও উপকার হত।” প্রসঙ্গত, ১৯৮১-র জুলাইয়ে, পুণে শহরে ইনফোসিস সংস্থার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নারায়ণ মূর্তি, নন্দন নিলেকানি, ক্রিস গোপালকৃষ্ণাণ, এসডি শিবুলাল, কে দীনেশ, এনএস রাঘবন এবং অশোক অরোরা নামে সাত ইঞ্জিনিয়ার।
গত মাসে, আরও এক বিষয় নিয়ে আফসোস করেছিলেন নারায়ণ মূর্তি। তাঁর আক্ষেপ ছিল, স্ত্রী সুধা মূর্তিকে ইনফোসিসের বোর্ডে যোগদান করতে না দেওয়া নিয়ে। ইনফোসিস প্রতিষ্ঠার সময়, স্বামীর হাতে প্রাথমিক মূলধন হিসেবে ১০,০০০ টাকা তুলে দিয়েছিলেন সুধা মূর্তি। তাঁর ব্যবসায়ী বুদ্ধিকে সংস্থার উন্নতিতে কাজে না লাগাতে পারার জন্য এখন সত্যিই আফসোস করেন ইনফোসিস প্রতিষ্ঠাতা। এছাড়া তাঁর মতে, ইনফোসিস সংস্থা কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে প্রত্যেকের মতামত বিবেচনা করত। এই গণতান্ত্রিক পরিবেশও সংস্থার বৃদ্ধির পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল বলে মনে করেন তিনি। কারণ তাঁর মতে, গণতন্ত্রে সর্বদা সেরা ফলাফল পাওয়া যায় না।