চলছে বিয়ের মরশুম, এর মধ্যে ‘হলদে ধাতু’-র দাম উত্তাপ ছড়াচ্ছে। মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতে গরম মাত্রাতিরিক্ত বাড়েনি, এখনও রাত বা ভোর বেলা মৃদু শীতের আমেজ পাওয়া গেলেও সোনার ‘গরম’ ক্রমেই বাড়ছে (Gold Prices in India)। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সোনার দামের পারদ ক্রমশই উর্ধ্বমুখী। সোনার দাম কমে যাওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই মধ্যবিত্তরা বিয়ের মরশুমে সমস্যার মধ্য পড়েছেন। ভারতে ১০ গ্রাম সোনার দাম ইতিমধ্যেই ৫৩ হাজার টাকা গণ্ডি পার করেছে। সেই কারণে অনেকেই অর্ডার বাতিল করছেন বলেই জানা গিয়েছে। ফলে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সমস্যাও বাড়ছে। এপ্রিল ও মে মাসে বিয়ের মরশুমে অনেকেই সোনা কেনার ক্ষেত্রে নিজেদের পরিকল্পনা বদল করেছেন।
সোনার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত একাধিক সংগঠনের দাবি, যে সব বিয়েগুলির জন্য অর্থ বরাদ্দ খুবই কমে, তারা সোনার দাম কমার অপেক্ষা বিয়ে স্থগিত করতে বাধ্য হচ্ছেন। মূলত দক্ষিণ ভারতে বিয়ে স্থগিত করার এই প্রবণতা সব থেকে বেশি মাত্রায় দেখা গিয়েছে। কারণ প্রথাগতভাবে দক্ষিণ ভারতীয় বিয়ে গুলির সঙ্গে সোনার ব্যবহার জড়িয়ে রয়েছে। সোনার ব্যবসায় দেশের সব থেকে বড় ‘গোল্ড হাব’ জাভেরি বাজারেও হলদে ধাতুর দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ব্যবসায় প্রভাব পড়েছে। “সোনার দাম বৃদ্ধির কারণে খুচরো ব্যবসায়ীদের অবস্থাও তথৈবচ। দাম বৃদ্ধির কারণে বহু অর্ডার বাতিল হচ্ছে। গয়না প্রস্তুতকারীরাও সমস্যার মধ্যে রয়েছেন।” ইন্ডিয়ান বুলিয়ন অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় সম্পাদক এমনটাই জানিয়েছেন। গত দু’সপ্তাহে সোনার দাম ৭.৩৮ শতাংশ বেড়ে প্রতি ১০ গ্রাম ৪৯ হাজার ৯৩৮ টাকা থেকে বেড়ে ৫ হাজার ৫৯৫ টাকা হয়েছে।
বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংগঠন ইঙ্গিত দিয়েছে, সোনার দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বিয়ের দিন পিছিয়ে গিয়েছে। “ছোট বাজেটের বিয়ে ব্যপকভাবে পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরিবারগুলি সোনার দাম কমার আশায় সাধারণভাবে বিয়ে ২ মাস পিছিয়ে দিচ্ছে। তাদের আশা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামলে সোনার দাম কমবে, সেই সময়ই তার সোনার কিনবে। দক্ষিণ ভারতে সোনা ছাড়া বিয়ে কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।” কোয়েম্বটুর জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এমনটাই জানিয়েছেন। এখন কবে সোনার দাম কমে, এটাই এখন দেখার।