নয়া দিল্লি: আর্থিক শিক্ষা এখনও ভারতে কোনও পাঠ্যক্রমের অংশ নয়। তাই, ভারতীয় অভিভাবকদেরই তাঁদের সন্তানদের অর্থ শিক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব নেওয়া উচিত। আর এই ক্ষেত্রে, যত কম বয়সে বাচ্চাদের এই সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া যায় ততই ভাল। শুরু থেকেই অর্থের বিষয়ে সচেতন হলে, ভবিষ্যতে আর তাদের কখনও আর্থিক সমস্যায় পড়তে হবে না। কিন্তু, অর্থের বিষয়ে শিশুদের কী শিক্ষা দেবেন, অনেকেই তা ভেবে পান না। এই অবস্থায় এডেলউইস মিউচুয়াল ফান্ডের এমডি তথা সিইও রাধিকা গুপ্তা এই বিষয়ে ৫টি বিষয় শেয়ার করেছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর সন্তানদের তিনি এই পাঁচটি আর্থিক শিক্ষা দিতে চান। কী এই পাঁচটি বিষয়? আসুন জেনে নেওয়া যাক –
উদ্দেশ্যমূলক ব্যয়
রাধিকা গুপ্তা লিখেছেন, “অর্থের একটি বাস্তবোচিত উদ্দেশ্য আছে। এটি আপনাকে আপনার স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম করে, জীবনের ছোট-বড় জিনিসগুলিকে সহজ করে তোলে। এটি আপনাকে আরাম দেয় এবং এটি আপনার এবং যারা আপনার শুভাকাঙ্খী তাদের আনন্দের মুহূর্তগুলি উপহার দেয়। তাই অর্থ উপার্জন এবং অর্থ সঞ্চয় করা গুরুত্বপূর্ণ।”
অর্থ বনাম মূল্য
অর্থ আপনার পরিচয় নয়। কখনই অর্থের জন্য আত্মবিশ্বাস বা মূল্যবোধের সঙ্গে আপস করবেন না। রাধিকা গুপ্তা লিখেছেন, “আপনি কেমন আছেন এবং অন্যদের সঙ্গে আপনি কেমন আচরণ করবেন তা কখনই অর্থের জন্য প্রভাবিত হতে দেবেন না। কারণ মৈানুষের মূল্য তাদের ব্যাঙ্ক ব্যালেন্সের থেকে অনেক বেশি।”
সঠিক মনিটারি অ্যাটিটিউড
মানি অ্যাটিটিউডের মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল কৃতজ্ঞতা। বাবা-মায়ের কাছ থেকে বা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সব কিছুর জন্য কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। কারণ, প্রতিটি প্রজন্ম তাদের ভাগ্য তৈরি করতে কঠোর পরিশ্রম করেছে। নিজের সন্তানের প্রতি রাধিকা গুপ্তা লিখেছেন, “কৃতজ্ঞতা হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনিটারি অ্যাটিটিউড। আমার বাবা-মায়ের থেকে আমার বেশি অর্থ আছে, কারণ প্রতিটি প্রজন্ম কঠোর পরিশ্রম করেছে। তোমার যা আছে তা ব্যবহার করে তোমায় আরেকটা লাফ দিতে হবে, ঝুঁকি নিতে হবে, এমন সুযোগ তৈরি করতে হবে যা আমরা কখনও পাইনি।”
টাকার লোভ করবে না
রাধিকা বলেছেন, “লোভ তোমাকে নিচে নিয়ে যাবে। ফাইন্যান্স হল বিশ্বের সেরা অর্থপ্রদানকারী শিল্পগুলির মধ্যে একটি, তবুও লোভের কারণে সেরাদের পতন ঘটে। ‘যথেষ্ট’-র মূল্য জানো এবং অর্থ উপার্জনের জন্য কখনই শর্টকাট নেবে না। এটি কখনই মূল্যবান নয়।”
আর্থিক শিকড়কে বুঝতে হবে
রাধিকা গুপ্তার মতে, নিজস্ব প্রতিভাই কোনও ব্যক্তির প্রকৃত সম্পদ। এটাকেই তার পুঁজি করা উচিত। তিনি লিখেছেন, “তোমার বাবা-মা আর্থিক ক্ষেত্রেই জীবিকা নির্বাহ করেছে। তুমি বিশ্বের অন্যতম সেরা মার্কেটপ্লেস, ভারতে রয়েছ। তাই, তোমার উচিত তোমার প্রতিভাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া। সেটাই আপনার সবথেকে মূল্যবান সম্পদ। পড়তে, লিখতে, প্রতিভার প্রতিফলন ঘটাতে, সংগ্রাম করতে, মাথা তুলে দাঁড়াতে, স্বপ্ন দেখতে, সৃষ্টি করতে এবং নির্মাণ করতে শেখো।”