নয়া দিল্লি: বিশিষ্ট শিল্পপতি রতন টাটা তাঁর জীবদ্দশায় লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছেন তাঁর কাজের মাধ্য়মে করেছেন। ৮৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তবে শেষ সময়েও তিনি যা করে গিয়েছেন, তা বহু মানুষের কাছে একটা নিদর্শন। অনেকেই তাঁর সেই কাজে অনুপ্রাণিত হয়েছেন।
পোষ্যের প্রতি তাঁর ভালবাসার কথা সবাই জানে। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, শেষ জীবনে তিনি তাঁর উইলে তাঁর প্রিয় পোষ্য ‘টিটো’-র জন্য কিছু রেখে গিয়েছেন। কুকুরের প্রতি তাঁর ভালবাসা এতটাই ছিল যে, টাটা গ্রুপের সদর দফতর ‘বম্বে হাউস’-এ কুকুরদের জন্য একটি পৃথক ক্রেশ খুলেছিলেন তিনি। শেষ যাত্রাতেও তাঁর চারপাশে টিটো-কে দেখা গিয়েছিল।
রতন টাটার উইল প্রকাশ্যে আসতেই দেখা যায়, তিনি তাঁর ভাই-বোনদের মধ্যে প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ভাগ করে দিয়েছেন। এমনকী বাড়ির পরিচারকদেরও ভাগ দেওয়া হয়েছে সম্পত্তি। বাকিটা ট্রাস্টে দান করে গিয়েছেন। আর তাঁর উইল অনুযায়ী, টিটো-র কোনওদিন কোনও অভাব হবে না। যতদিন ‘টিটো’ বেঁচে থাকবে ততদিন তার পরিচর্যার জন্য যথেষ্ট টাকার ব্যবস্থা করে গিয়েছেন রতন টাটা।
নিজের পোষা প্রাণীর জন্য উইলে ভাগ দেওয়ার প্রবণতা বিদেশে খুব প্রচলিত। তবে ভারতে এমন উদাহরণ প্রায় নেই বললেই চলে। দেশের আইনজীবীরা অনেকেই টাটা এটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। এই পদক্ষেপের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রাণীদের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে সচেতনতা আসবে বলে মনে করছেন অনেকে।
এক লিগ্যাল অ্যাডভাইজরি ফার্ম বলছে, সম্প্রতি এই ধরনের আইন নিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছেন অনেকেই। এর মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই অবিবাহিত বা বয়স্ক। তাঁরাও চান তাঁরা চলে যাওয়ার পর যেন তাঁদের পোষ্যরা যত্নে থাকে।
তবে ভারতীয় আইন অনুযায়ী, পোষ্যরা কখনও সম্পত্তি বা পৈতৃক সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচিত হয় না। তাই উইলে সরাসরি তাদের নামে কোনও সম্পত্তি রাখার আইন নেই। রতন টাটার ক্ষেত্রে উইলে টিটো-র কথা বলা হলেও, আদতে যিনি দেখভাল করবেন, তাঁকেই সম্পত্তির দায়িত্ব নিতে হবে।