নয়া দিল্লি: ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট থাকলে সেখানে টাকা জমা রাখার পাশাপাশি লকারেরও (Bank Locker) সুবিধা পাওয়া যায়। সেখানে গয়না এবং মূল্যবাণ সামগ্রী বা গুরুত্বপূর্ণ নথি রাখা যায়। আপনার কি ব্যাঙ্কে লকার রয়েছে বা লকার নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন? তাহলে লকার সম্পর্কিত RBI-এর এই বিশেষ নিয়মটি জানা জরুরি। ব্যাঙ্কের লকার থেকে আপনার গয়না চুরি হয়ে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাঙ্ক দায় নেবে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক ১০০ গুণ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেবে। এখানে জেনে নিন বিস্তারিত…
মূলত, গ্রাহকদের নিরাপত্তা দিতে দেশব্যাপী ব্যাঙ্কগুলি লকারের সুবিধা প্রদান করে। গ্রাহককে লকারের সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে ব্যাঙ্কগুলি গ্রাহকের কাছ থেকে ভাড়া বাবদ কিছু ফি নেয়। স্বাভাবিকভাবে ব্যাঙ্ক লকারকে অত্যন্ত নিরাপদ বলে মনে করা হয়। কিন্তু, সাম্প্রতিককালে এমন অনেক ঘটনা সামনে এসেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, ব্যাঙ্কের লকার থেকে সামগ্রী চুরি হয়ে গিয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে এই ধরনের ঘটনার জন্য ব্যাঙ্ক দায়ী থাকে। জেনে নিন ঠিক কোন ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক দায়ী থাকবে।
কোন ক্ষেত্রে লকারের সামগ্রী চুরি হলে ব্যাঙ্ক দায়ী থাকবে না?
ব্যাঙ্কগুলি আসলে গ্রাহকদের লকার ভাড়া দেয়। এ ব্যাপারে ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে গ্রাহকের সঙ্গে একটি চুক্তিও করা হয়। এই চুক্তিতে লেখা থাকে যে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ (বৃষ্টি, অগ্নি, ভূমিকম্প, বন্যা, বজ্রপাত) বা অভ্যুত্থান, যুদ্ধ, দাঙ্গা পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্কে রাখা কোনও টাকা বা লকারের সামগ্রী নষ্টের জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়।
কোন ক্ষেত্রে লকারের সামগ্রী চুরি হলে ব্যাঙ্ক দায়ী থাকবে?
ব্যাঙ্ক লকারের চুক্তিতে আরও লেখা থাকে যে, ব্যাঙ্ক গ্রাহককে লকারের সুবিধা দিচ্ছে এবং ব্যাঙ্ক লকারের ভিতরে থাকা সামগ্রীর সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দেবে। তবে লকারে কী সামগ্রী থাকছে সেটা দেখার দায়িত্ব ব্যাঙ্কের নয়। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ব্যাঙ্ক লকারগুলির জন্য কিছু নিয়ম তৈরি করেছিল RBI। এই নিয়মগুলির অধীনে, ব্যাঙ্কগুলি বলতে পারে না যে, লকারের সামগ্রীর দায়িত্ব তাদের নেই। অর্থাৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা জাতীয় বিপর্যয় সময়ের বাইরে লকারের সামগ্রী নষ্ট হলে ব্যাঙ্কও অনেকাংশে দায়ী।
RBI নিয়ম
RBI-এর নতুন নিয়ম অনুসারে, চুরি, জালিয়াতি হলে, আগুন লাগলে বা ভবন ধসে পড়লে এবং লকারের সামগ্রী নষ্ট হলে লকারের বার্ষিক ভাড়ার ১০০ গুণ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ গ্রাহককে দিতে বাধ্য থাকবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি ব্যাঙ্কগুলিকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যদিকে, যখনই গ্রাহকদের লকার খোলা হবে, তখনই ব্যাঙ্কের তরফে ই-মেইল বা মেসেজের মাধ্যমে গ্রাহকদের সতর্কবার্তা পাঠানো বাধ্যতামূলক। যে সব ব্যাঙ্ক এই নিয়ম মানবে না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।