কলকাতা: বছরশেষে লম্বা ছুটি। ক্রিসমাস, নিউ ইয়ারের ছুটির মাঝে পড়েছে উইকএন্ডও। ফলে পাঁচ-ছয়দিনের লম্বা ছুটি পেয়েছেন অনেকেই। আর ছুটি পেতেই ঘুরতে বেরিয়ে পড়েছেন অধিকাংশ মানুষ। পাহাড়, সমুদ্র-সব পর্যটন কেন্দ্রে উপচে পড়ছে ভিড়। করোনাকালে ২০২০, ২০২১ সালে ঘরবন্দি হয়ে থাকার পর সাধারণ মানুষ এতটাই বিরক্ত হয়ে গিয়েছেন যে সুযোগ পেলেই তারা ঘুরতে বেরিয়ে পড়ছেন। এটিকে এক কথায় রিভেঞ্জ ট্যুরিজম (Revenge Tourism) বলা হচ্ছে। আর এই রিভেঞ্জ ট্যুরিজমেই হাল ফিরছে অর্থনীতির (Economy)।
পর্যটন মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ২০ ডিসেম্বর অবধি ভারতে ৭৫ লক্ষ ৫০ হাজার বিদেশি পর্যটক এসেছেন। বছর শেষে সেই সংখ্যা ৮০ লক্ষ ছাপিয়ে যেতে পারে। ২০১৮, ২০১৯ সালের তুলনায় অনেক গুণ বেশি বিদেশি পর্যটক ভারতে এসেছেন। তবে ২০২২ সালে কোভিডের প্রভাব যখন কিছুটা কমে, তখন ভারতে ৬৪ লক্ষ পর্যটক আসেন। এরপরে ২০২৩ সালে পর্যটকের সংখ্যা ৮০ লক্ষ ছুঁইছুঁই। অর্থাত্ এক বছরে বিদেশি পর্যটক বেড়েছে প্রায়য় ১৪ লক্ষ।
করোনার রেশ কাটার পর গত বছর থেকেই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল দেশীয় পর্যটন। ২০২৩-সালে সেটা সর্বকালীন রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলতে পারে। ট্র্যাভেল অ্যান্ড টুরিজম কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের ভিতরে পর্যটন ব্যবসার অঙ্ক দাঁড়াতে পারে ৫০ হাজার কোটি টাকা। সম্ভবত ২০২৩ সালেই সবচেয়ে বেশি পর্যটক দেশের ভিতরে ঘুরতে গিয়েছেন।
পর্যটন সংস্থাগুলির দাবি, এটা সম্ভবত রিভেঞ্জ ট্যুরিজম। কী এই রিভেঞ্জ ট্যুরিজম? কোভিডকালে সকলেই ঘরবন্দি হয়ে থাকতে বাধ্য হয়েছেন। অসুস্থতা, আর্থিক সঙ্কটের কারণে বিগত দুই-তিন বছর ঘুরতে যেতে পারেননি। তাই পর্যটনপ্রেমীদের অনেকেই এ বছর সেই ঘাটতিটা পূরণ করে নিচ্ছেন। বছরে একবারের বদলে, দুই- তিনবার বা তারও বেশিবার ঘুরতে যাচ্ছেন। এটাই রিভেঞ্জ ট্যুরিজম।
এই রিভেঞ্জ ট্যুরিজমের সংখ্যা কিন্তু নেহাত কম নয়। ইজ মাই ট্রিপের সমীক্ষা বলছে, ১৮ শতাংশ পর্যটক এখন বছরের দু-বার বেড়াতে যাচ্ছেন। একবার পরিবারের সঙ্গে যাচ্ছেন, দ্বিতীয়বার হয়তো বন্ধুদের সঙ্গে যাচ্ছেন বা একাই বেড়িয়ে পড়ছেন। ২০২৭ সালের মধ্যে দেশের ভিতরে পর্যটন ব্যবসার অঙ্ক বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১ লক্ষ ৭৪ হাজার কোটি টাকায়। বর্তমানেই পর্যটন ব্যবসা থেকে আয় ১ লক্ষ ২৭ হাজার কোটি টাকা ছুঁয়ে ফেলেছে।