জাতীয় পেনশন প্রকল্পের নিয়মে বড় বদল আনল কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে এবার এনপিএস-এর আরও বেশি টাকা শেয়ারে বিনিয়োগ করার বিকল্প চলে এল গ্রাহকদের কাছে। এনপিএস-র ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আগের বিধিনিষেধ শিথিল করে নয়া নিয়ম চালু করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। পেনশন ফান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটি (এনপিএস-এর নিয়ন্ত্রক সংস্থা) জানিয়েছে, যদি কোনও গ্রাহক শেয়ার বাজারের ঝুঁকি নিতে ইচ্ছুক থাকেন, তাহলে এবার থেকে এনপিএস-এ আরও বেশি টাকা বাজারে খাটানোর স্বাধীনতা থাকবে বিনিয়োগকারীদের কাছে।
এর আগে এনপিএস-র অধীনে নির্দিষ্ট বয়সের পর শেয়ারের জন্য নির্দিষ্ট বরাদ্দ তহবিলের পরিমাণ ধাপে ধাপে কমানোর নিয়ম ছিল। তবে নয়া নিয়ম অনুযায়ী এবার আর এই তহবিলের পরিমাণ কমানো বাধ্যতামূলক হবে না। অবশ্য, ইচ্ছে হলে আগের নিয়মও মেনে চলতে পারেন বিনিয়োগকারী। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট বয়সের পর শেয়ারের তহবিলের পরিমাণ কমাতে পারেন বিনিয়োগকারীরা। এই পুরো বিষয়টি বিনিয়োগকারীর ঝুঁকি নেওয়ার ইচ্ছের উপর নির্ভর করবে বলে জানিয়েছে পেনশন ফান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটি।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে জাতীয় পেনশন প্রকল্পে দুই ধরনের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। টিয়ার ১ এবং টিয়ার ২। টিয়ার ১ অ্যাকাউন্ট খুলতে হয় ন্যূনতম ৫০০ টাকা দিয়ে। বিনিয়োগকারীর বয়স যতদিন না ৬০ বছর হচ্ছে, ততদিন তিনি অ্যাকাউন্টের থেকে টাকা তুলতে পারবেন না। এদিকে ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত এই অ্যাকাউন্ট চালানো যায়। নিয়ম অনুযায়ী, আমানতের ৪০ শতাংশ অর্থ দিয়ে অ্যানুইটি কিনতেই হবে। সেই অর্থ থেকেই মাসিক পেনশন মিলবে। এই অ্যাকাউন্টের জমা টাকার ক্ষেত্রে আয়কর ছাড় মেলে ৮০সি এবং ৮০ সিসিডি (১বি) ধারার অধীনে। এদিকে টিয়ার ১ অ্যাকাউন্ট খুললেই টিয়ার ২ অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। এদিকে টিয়ার ২ অ্যাকাউন্ট খুলতে ন্যূনতম ১০০০ টাকা প্রয়োজন। এই অ্যাকাউন্টে জমা টাকা ইচ্ছে হলে ৬০ বছরের আগেও তোলা যায়। এদিকে এই অ্যাকাউন্টে জমা টাকা থেকে অ্যানুইটি কেনার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। কোনও গ্রাহক চাইলে জমা টাকার পুরোটাই তুলে নিতে পারেন। তবে এই অ্যাকাউন্টে আয়কর ছাড়ের কোনও সুবিধা নেই। এই টিয়ার ২ অ্যাকাউন্ট কতকটা ব্যাঙ্কের সেভিংস অ্যাকাউন্টের মতোই। দুই অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রেই সরকারি ঋণপত্র, কর্পোরেট বন্ড, শেয়ার, রিয়েল এস্টেট, ভেঞ্চার ক্যাপিটালে টাকা বিনিয়োগ করা যায়।
উল্লেখ্য, এনপিএস-র তহবিলের ৭৫ শতাংশ টাকা শেয়ারে বিনিয়োগ করা যায়। এর আগের নিয়মে টিয়ার ১ অ্যাকাউন্টের গ্রাহকদের ৫১ বছর বয়স থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত প্রতি বছর ২.৫ শতাংশ করে শেয়ারে বিনিয়োগের মাত্রা কমাতে হবে। এর বদলে সেই অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে সরকারি ঋষপত্রে। গ্রাহকদের আর্থিক ঝুঁকি কমাতেই এই নিয়ম ছিল। তবে নয়া নিয়ম অনুযায়ী, এই সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। এবার কারও ইচ্ছে হলে তহবিলের পুরো ৭৫ শতাংশ অর্থই শেয়ারে বিনিয়োগ করতে পারেন ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত।