ক্যালিফোর্নিয়া: বিশ্বজুড়েই নেমেছে আর্থিক মন্দার (Financial Crisis) ছায়া। তবে এই মন্দা যে কতটা ভয়ঙ্কর আকার নিচ্ছে, এবার তার প্রমাণ মিলল হাতেনাতে। বন্ধ হয়ে গেল সিলিকন ভ্য়ালি ব্য়াঙ্ক (Silicon Valley Bank)। বিশ্বের অন্য়তম বড় বড় প্রযুক্তি সংক্রান্ত স্টার্টআপ সংস্থাকে ঋণ দিয়েছে এই সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক। শুক্রবার চরম আর্থিক সঙ্কটের জেরে বন্ধ হয়ে যায় এই ব্যাঙ্কটি। হঠাৎ ব্যাঙ্ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন বিনিয়োগকারী ও আমানতকারীরা। বিশ্ব শেয়ার বাজারেও ব্যাপক ধস নামে সিলিকন ভ্য়ালি ব্যাঙ্ক বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর চাউর হতেই।
শুক্রবার ক্যালিফোর্নিয়ার ব্যাঙ্কিং রেগুলেটরের তরফে সিলিকন ভ্য়ালি ব্যাঙ্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সঙ্কটের পর এটাই ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে সবথেকে বড় ব্যর্থতা বলে মনে করা হচ্ছে। সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক বন্ধ করে দেয় এবং সমস্ত ডিপোজিট বাজেয়াপ্ত করে। জানা গিয়েছেস মার্কিন ফেডারেল ডিপোজিট ইন্সুরেন্স কর্পোরেশন আপাতত এই ব্যাঙ্কটির নিয়ন্ত্রণ নেবে। পরে ব্য়াঙ্কের সম্পত্তি বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ গ্রাহকদের দিয়ে দেওয়া হবে।
ক্যালিফোর্নিয়ার ব্যাঙ্কিং রেগুলেটর এফডিআইসি-র তরফে আরও জানানো হয়েছে, সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের সমস্ত অফিস ও ব্রাঞ্চ আগামী ১৩ মার্চ খুলে দেওয়া হবে। আগামী সোমবারের মধ্যেই আমানতকারীরা ব্যাঙ্কের ইন্সুরেন্স করা ডিপোজিট বা গচ্ছিত টাকা সম্পূর্ণ তুলে নেওয়ার সুবিধা পাবেন।
তবে এফডিআইসির নিয়ম অনুযায়ী, ২০২২ সালের শেষ অবধি সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের ১৭৫ বিলিয়ন ডলার ডিপোজিটের ৮৯ শতাংশই বিমাহীন ছিল। ফলে ওই বিপুল পরিমাণ অর্থের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা অজানা। ভিডিয়ো গেম প্রস্তুতকারক সংস্থা রবলক্স কর্প আরবিএলএক্স.এন ও স্ট্রিমিং ডিভাইস প্রস্তুতকারক রোকু সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, তাদের কয়েকশো মিলিয়ন ডলার অর্থ সিলিকন ভ্য়ালি ব্য়াঙ্কে জমা রাখা ছিল। ব্য়াঙ্ক বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘোষণার পরই শেয়ারে কমপক্ষে ১০ শতাংশ পতন হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বিভিন্ন প্রযুক্তিগত স্টার্টআপ সংস্থায় বিনিয়োগ করার পর বিপুল লাভ করে সিলিকন ভ্য়ালি ব্যাঙ্ক। এরপরে তারা অধিকাংশ সম্পত্তি বিভিন্ন মার্কিন বন্ডে বিনিয়োগ করে। গত বছরই মূল্য়বৃদ্ধির হার কমানোর জন্য ফেডেরাল রিজার্ভ সুদের হার বাড়িয়ে দিয়েছিল। এরফলে বন্ডের দামও কমে যায়। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়, প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে তাদের।