মুম্বই: দালাল স্ট্রিটে চমকে দেওয়া আত্মপ্রকাশ টাটা টেকনোলজিস লিমিটেডের। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর), শেয়ার বাজারে অভিষেকের দিনই মুনাফার নিরিখে চমকে দিল টাটা গোষ্ঠীর এই সংস্থা। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ – দুই জায়গাতেই ১,২০০ টাকায় তালিকাভুক্ত হয়েছে এই সংস্থা। অথচ শেয়ার ইস্যু করা হয়েছিল ৫০০ টাকায়। অর্থাৎ, প্রথমদিনই এই সংস্থার আইপিও-তে লগনিকারীরা ৭০০ টাকা বা ১৪০ শতাংশ প্রিমিয়াম পেলেন। প্রায় ২০ বছর পর টাটা গোষ্ঠীর কোনও সংস্থা স্টক মার্কেটে পা রাখল। তাও এই রকম বিস্ফোরক অভিষেক। কাজেই এই নিয়ে শোরগোল পড়ে দিয়েছে দালাল স্ট্রিটে। কিন্তু যদি মনে করেন, টাটা টেকনোলজিস-ই এই বছরের সর্বোচ্চ প্রিমিয়ামে তালিকাভুক্ত সংস্থা, তাহলে ভুল হবে। প্রায় ৪০ দিন আগে আরও এক সংস্থা বিনিয়োগকারীদের ২৪২ শতাংশের বেশি রিটার্ন দিয়ে বাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। বস্তুত, এমন আটটি সংস্থা রয়েছে, যারা এই বছর স্টক মার্কেটে তালিকাভুক্তির দিন টাটা টেকনোলজিসের থেকেও বেশি মুনাফা দিয়েছে লগ্নিকারীদের। শুধু টাটা টেকনোলজিস নিয়ে মাতামাতি না করে, চোখ রাখা যাক এই সংস্থাগুলির দিকেও –
গয়াল সল্ট লিমিটেড: ১১ অক্টোবর এই সংস্থা স্টক মার্কেটে পা রেখেছিল। সংস্থার শেয়ার ইস্যু করা হয়েছিল ৩৮ টাকায়। কিন্তু, গয়াল সল্ট লিমিটেডের লিস্টিং প্রাইস ছিল ১৩০ টাকা। অর্থাৎ, সংস্থাটি লিস্টিং প্রাইস থেকে বিনিয়োগকারীদের ২৪২.১০ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছে। বুধবার, এই সংস্থআর শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ১৬৩ টাকায়। এখনও পর্যন্ত লগ্নিকারীদের ৩২৯ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছে।
সানগার্নার এনার্জি: সানগার্নার এনার্জি ৩১ অগস্ট শেয়ার মার্কেটে তালিকাভুক্ত হয়েছিল ২৫০ টাকায়। সংস্থাটির শেয়ারের ইস্যু মূল্য ছিল ৮৩ টাকা। অর্ছাৎ, সংস্থাটি তালিকাভুক্ত হওয়ার সময়ই বিনিয়োগকারীদের ২০১.২ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছে। বর্তমানে সানগার্নার এনার্জির শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ১৯৮ টাকায়।
ব্যাসিলিক ফ্লাই স্টুডিও লিমিটেড: এই সংস্থার শেয়ারও বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক মুনাফা দিয়েছে। ১১ সেপ্টেম্বর স্টক মার্কেটে তালিকাভুক্ত হওয়ার সময় বিনিয়োগকারীরা ১৭৯.৩৮ শতাংশ লাভ করেন। ব্যাসিলিক ফ্লাই স্টুডিও লিমিটেডের শেয়ারের ইস্যু মূল্য ছিল ৯৭ টাকা, তালিকাভুক্ত হয় ২৭১ টাকায়। বর্তমানে সংস্থাটির শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ২৯০ টাকায়।
ওরিয়ানা পাওয়ার: ১১ অগস্ট ওরিয়ানা পাওয়ারের শেয়ার তালিকাভুক্ত হয়েছিল ৩০২ টাকায়। সংস্থার ইস্যু প্রাইস ছিল ১১৮ টাকা। এর মানে, সংস্থাটির শেয়ার ১৫৬ টাকার প্রিমিয়ামে তালিকাভুক্ত হয়েছিল। বর্তমানে সংস্থাটির শেয়ার ২৬৪.৭৫ টাকায় লেনদেন হচ্ছে।
ইনফোলিয়ন রিসার্চ সার্ভিস: ইনফোলিয়ন রিসার্চ সার্ভিসও তালিকাভুক্তির দিনে টাটা টেকের থেকে ভালো পারফর্ম করেছিল। ৮ জুন সংস্থার শেয়ার তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। সংস্থার তালিকাভুক্তির মূল্য ছিল ৮২ টাকা। শেয়ারটি ২০৯ টাকার, অর্থাৎ, ১৫৪.৮৭ শতাংশ প্রিমিয়ামে তালিকাভুক্ত হয়েছিল। বর্তমানে সংস্থার শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ২৭০.১০ টাকায়।
এনলন টেক সলিউশন: ১০ জানুয়ারি, এনলন টেক সলিউশনের শেয়ার স্টক মার্কেটে তালিকাভুক্ত হয়েছিল ২৫১.১ টাকায়। সংস্থার ইস্যু মূল্য ছিল ১০০ টাকা। অর্থাৎ, সংস্থাটির শেয়ারের মূল্য তালিকাভুক্তির দিনই ১৫১.১ শতাংশ বেড়েছিল। বর্তমানে এনলন টেক সলিউশনের শেয়ারের দাম ২৬০ টাকা।
সিপিএস শেপার্স: সিপিএস শেপার্সের শেয়ার বাজারে আত্মপ্রকাশ করেছিল ৭ সেপ্টেম্বর। সংস্থার ইস্যু মূল্য ছিল ১৮৫ টাকা। স্টক মার্কেটে তালিকাভুক্ত হয়েছিল ৪৫০ টাকায়। এর মানে, সংস্থাটি তালিকভুক্তির সময়ই লগ্নিকারীদের ১৪৩.৩৪ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছিল। বর্তমানে সংস্থাটির শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ৪৬২ টাকায়।
শ্রীভরি স্পাইস অ্যান্ড ফুড: ১৮ অগস্ট স্টক মার্কেটে আত্মপ্রকাশ করেছিল শ্রীভরি স্পাইস অ্যান্ড ফুড। সংস্থার শেয়ারের ইস্যু মূল্য ছিল ৪২ টাকা। সংস্থাটি ১০১.৫ টাকায় তালিকাভুক্ত হয়েছিল। অর্থাৎ, তালিকাভুক্তির সময় বিনিয়োগকারীদের ১৪১.৬৬ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছিল। বর্তমানে সংস্থার শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ১৯৪.২৫ টাকায়।