ওয়াশিংটন: ফেসবুকের প্রোডাক্ট ম্যানেজার হিসেবে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। কিন্তু, এক বছর পরই তিনি কোম্পানি থেকে ছাঁটাই হন। এরপর আর অন্য কোম্পানিতে নয়, নিজেই একটি কোম্পানি শুরু করেন মার্কিন টেকি নোয়াহ কাগান। মাত্র এক বছরের মধ্যেই এই কোম্পানির মাধ্যমে ৪১ বছর বয়সী এই টেকি আয় করলেন ৩.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় ২৭ কোটি টাকা।
নোয়াহ কাগান কোনও শিল্পপতি বা ব্যবসায়িক পরিবারের সন্তান নন, তাঁর বাবা-মা ইজরায়েলের শরণার্থী ছিলেন। নাইট নার্স হিসাবে কাজ করতেন তাঁর মা আর সৎবাবা ছিলেন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। কাগান বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। তিনি ছোট থেকেই ধনী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। শুধু স্বপ্ন দেখা নয়, কীভাবে বিশ্বের ধনীতম প্রযুক্তিবিদ হওয়া যায় সেই পথও তিনি জানতেন। কাগানের কথায়, “আমার স্বপ্ন ছিল মাইক্রোসফট। বিল গেটস ছিলেন আমার আইকনিক আর তাঁর পথই আমি অনুসরণ করতে চেয়েছি।”
নোয়াহ কাগান ২০০৫ সালে ফেসবুকের প্রোডাক্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। এক বছরের মাথায় তথ্য ফাঁসের অভিযোগে তাঁকে কোম্পানি থেকে বরখাস্ত করা হয়। যদিও এই অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি জানিয়ে কাগান বলেন, “আমি হতবাক হয়ে যাই। আমার বয়স তখন ২৪ বছর এবং কাজের ক্ষেত্রে আমি বিশ্বাস করতাম পৃথিবীতে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস বিশ্বাস।”
সেই সময় চাকরি থেকে বরখাস্ত হলেও পিছনে ফিরে তাকালে বলা যায়, ওই ঘটনা কেবল অনায্যকর ছিল না, বরং তিনি যেটা হতে চেয়েছিলেন সেই পথ প্রশস্ত করেছিল। তাঁর মতে, এটা খুব ভালো অভিজ্ঞতা ছিল। নিজের ভাগ্য তৈরি করার এবং মন যেটা চায় সেই পথে যাওয়ার সুযোগ ছিল এটা।
ফেসবুক থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর তিনি উদ্যোগপতি হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়ে ইংরেজি পড়াশোনা শুরু করেন কাগান। এরপর সিলিকন ভ্যালি টেক ফার্মসে কনসাল্টিংয়ের কাজ শুরু করেন। ২০০৮ সালে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, নতুন কিছু শুরু করার এটাই সঠিক সময়। ফেসবুকে কাজ করার অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে ২০১০ সালে সফটওয়্যার ওয়েবসাইট AppSumo শুরু করেন তিনি। প্রথম বছর তিনি কাজের জন্য নিজে কোনও বেতন নেননি, বরং কোম্পানিকে আরও উন্নত করার চেষ্টা করেছেন। তিনি কেবল বার্ষিক আয়ের সামান্য অংশ বোনাস হিসেবে নিতেন। এরপর গত বছর তাঁর কোম্পানি ৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে, যার লভ্যাংশ ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি।
এক সাক্ষাৎকারে কাগান বলেন, “আমি সব সময় নিজেকে কম বেতন দিয়েছি। ঐতিহাসিকভাবে বার্ষিক বেতন প্রায় ২ লক্ষ মার্কিন ডলার হয়েছে। বছরের শেষের দিকে আমাদের টিমের সকল কর্মীকে অর্থ প্রদান করে, কোম্পানির সমস্ত খরচ দেওয়ার পর আমি লাভের অংশ গ্রহণ করি। গত বছর আমি আমার বেতন হিসাবে ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার লভ্যাশ নিয়েছিলাম।”