নয়া দিল্লি: রেলপথ এবং জাহাজ পথে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে যুক্ত হবে ভারত? সম্প্রতি এরকমই এক উচ্চাভিলাশি পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান। চলতি মাসের শুরুতেই সোদি আরবের রাজধানী রিয়াধে সৌদি প্রধানমন্ত্রী তথা শাহজাদা মহম্মদ বিন সলমন, সংযুক্ত আরব আমিরাশাহির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শেখ তাহনুন বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এবং ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে এই বিষয়ে বৈঠক করেছেন। তিনটি এশিয় দেশ যৌথভাবে একটি বড় রেলওয়ে নেটওয়ার্ক তৈরি করবে বলে জানা গিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মোকাবিলা করতেই এই উদ্যোগ নিচ্ছে আমেরিকা বলে জানা গিয়েছে।
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে ওই বৈঠক সম্পর্কে বলা হয়েছিল, ভারত এবং বাকি বিশ্বের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের আরও নিরাপদ এবং সমৃদ্ধ সংযুক্তি চায়। এই বৈঠকে আমেরিকা সেই দৃষ্টিভঙ্গিকেই এগিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হয়েছে।” মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বিরাট যৌথ পরিকাঠামো প্রকল্পটি আরব দেশগুলিকে রেলওয়ের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংযুক্ত করবে এবং এই অঞ্চলের বন্দর থেকে জাহাজ পথে তা ভারতের সঙ্গেও সংযুক্ত হবে।
সূত্রের মতে, গত ১৮ মাস ধরে আই২ইউ২ গোষ্ঠীর আলোচনা থেকেই এই নতুন উদ্যোগের ধারণাটির জন্ম হয়েছে। আই২ইউ২ ফোরামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে রয়েছে ভারত। ২০২১ সালের শেষের দিকে এই আন্তর্জাতিক ফোরামের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। তারপর থেকে এই ফোরামে মধ্যপ্রাচ্যে কৌশলগত পরিকাঠামো প্রকল্প নির্মাণের বিষয়ে বহু আলোচনা হয়েছে।
বস্তুত, মধ্যপ্রাচ্য চিনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ ভিশনের একটি প্রধান অংশ। ইতিমধ্যেই আফগানিস্তান পর্যন্ত এই বহুদেশীয় প্রকল্পকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে চিন। এই অবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে যৌথ উদ্যোগই বেজিং-এর মোকাবিলা করার শ্রেষ্ঠ উপায়। অন্যদিকে ভারতের জন্যও এই প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ভারত মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তি গ্রাহক। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর আগে, শক্তির প্রয়োজনে ভারত অনেক বেশি নির্ভরশীল ছিল সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির উপর। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ভারত ভোগ্যপণ্য এবং শ্রমের অন্যতম রপ্তানিকারক হিসাবে রয়ে গেছে। তাছাড়া, দুই দেশের সঙ্গেই নয়া দিল্র সম্পর্কও অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ।