Amitabh Bachchan: ৪ বছরে দেউলিয়া, কেন ব্যবসায় ব্যর্থ বিগ বি?

অমর্ত্য লাহিড়ী | Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

Feb 19, 2024 | 12:38 PM

Amitabh Bachchan business ABCL: ব্যবসা করতে গিয়ে একসময় তাঁরই ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স ০ হয়ে গিয়েছিল। দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলেন অমিতাভ। পাওনাদারদের টাকা মেটাতে তাঁর বিখ্যাত বাংলো 'প্রতীক্ষা' বিক্রি করার মতো জায়গায় চলে গিয়েছিলেন অমিতাভ। কিন্তু কেন ব্যবসা করতে নেমে এতটা ব্যর্থ হলেন অমিতাভ? আসুন, আজ সেটাই জেনে নেওয়া যাক -

Amitabh Bachchan: ৪ বছরে দেউলিয়া, কেন ব্যবসায় ব্যর্থ বিগ বি?
পরপর লোকসান হয়েছিল অমিতাভ বচ্চনের
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

মুম্বই: সমাজবাদী পার্টির হয়ে সম্প্রতি রাজ্যসভার প্রার্থী হয়েছেন জয়া বচ্চন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় তিনি যে হলফনামা জমা দিয়েছেন, তা বলছে, অমিতাভ বচ্চনের বর্তমান ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স প্রায় ১২০ কোটি টাকা। রবিবারই তাঁর ফিল্ম কেরিয়ারের ৫৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। অভিনয় জগতে এতটা সফল হলেও, ব্যবসা করতে নেমে কিন্তু একেবারেই ব্যর্থ হয়েছিলেন শাহেনশা। ব্যবসা করতে গিয়ে একসময় তাঁরই ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স ০ হয়ে গিয়েছিল। দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলেন অমিতাভ। পাওনাদারদের টাকা মেটাতে তাঁর বিখ্যাত বাংলো ‘প্রতীক্ষা’ বিক্রি করার মতো জায়গায় চলে গিয়েছিলেন অমিতাভ। কিন্তু কেন ব্যবসা করতে নেমে এতটা ব্যর্থ হলেন অমিতাভ? আসুন, আজ সেটাই জেনে নেওয়া যাক –

এবিসিএল-এর প্রতিষ্ঠা

১৯৯৬ সালে অভিনয় থেকে ব্যবসার জগতে পা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন। প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘অমিতাভ বচ্চন কর্পোরেশন লিমিটেড’ বা ‘এবিসিএল’ (ABCL) নামে এক সংস্থার। এই সংস্থা চালু করার জন্য তিনি কানাড়া ব্যাঙ্কের কাছে প্রায় ২২ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছিলেন। আর এই বিপুল ঋণের বিপরীতে গ্যারান্টি হিসেবে রেখেছিলেন তাঁর নিজের বাংলো প্রতীক্ষাকে। সেই সময় বাংলোটির বাজার মূল্য ছিল ১০ কোটি টাকার বেশি। যাত্রা শুরুর সময় এবিসিএল-এর মূল্য ছিল ৬০ কোটি টাকা। কিন্তু, চার বছরে, অর্থাৎ, ২০০০ সালের মধ্যেই তাঁর সংস্থাকে ১০০০ কোটি টাকার সংস্থায় পরিণত করার পরিকল্পনা করেছিলেন বিগ বি। আর এই অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী চিন্তা-ভাবনাই তাঁর ব্যবসায়িক সাফল্যের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ৬০ কোটি টাকা মূল্যের এবিসিএল-এর জন্য, অতিরিক্ত ২২ কোটি টাকার ঋণ নিয়ে, মোট ৭০ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি। আর এর পিছনে ছিল তাঁর অন্তত পাঁচটি উচ্চাভিলাষী প্রকল্প। এই প্রকল্পগুলির উপর বাজি ধরেছিলেন অমিতাভ, কিন্তু সেগুলি কখনই প্রত্যাশিত ফল দেয়নি। কী ছিল এই প্রকল্পগুলি?

১. মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতা

অমিতাভের সংস্থা প্রথম ভারতে ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছিল। বেঙ্গালুরুতে এই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। এর জন্য এত বিপুল খরচ করেছিল তাঁর সংস্থা যে, এই ইভেন্টের যে কর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছিল, তাদের বেতন পর্যন্ত দেওয়ার অবস্থা ছিল না। কিন্তু, অনুষ্ঠানটি ভারতে বিশেষ নজর কাড়তে পারেনি। আর এটাই ছিল এবিসিএল-এর আর্থিক সংকটের শুরু।

২. অ্যাবি বেবি – মিউজিক অ্যালবাম

অমিতাভ গান গাইতে ভালবাসেন। তিনি তাঁর সংস্থার হাত ধরে একটি মিউজিক অ্যালবামও বের করেছিলেন। ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত হয়েছিল ‘অ্যাবি বেবি’ (Aby Baby)। এক রাহে বিয়ার ছাড়া এই অ্য়আলবামের কোনও গান জনপ্রিয় হয়নি। আর এই প্রকল্পটি এবিসিএল-কে আরও ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়েছিল। এটা প্রত্যাহার করতে সমস্যা? দেখে নিন। খারাপ গুণ উপেক্ষা করুন, যদিও, স্মৃতি অমূল্য!

৩. মৃত্যুদাতা

মিস ওয়ার্ল্ড এবং অ্য়াবি বেবির ক্ষতির পর, ১৯৯৭ সালে ‘মৃত্যুদাতা’ নামে একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছিল এবিসিএল। ছবিটির বাজেট ছিল ১৩ কোটি। বক্স অফিসে ব্যবসা করেছিল মাত্র ৮ কোটির মতো। যা ইতিমধ্যেই লোকসানে চলা সংস্থার ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল।

৪. সাত রং কে স্বপ্নে

পরপর তিন ব্যর্থতা থেকেও শিক্ষা নেননি অমিতাভ। ১৯৯৮-এ প্রিয়দর্শন পরিচালিত এবং জুহি চাওলা ও অরবিন্দ স্বামী অভিনিত, ‘সাত রঙ কে স্বপ্নে’ নামে আরও একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছিল এবিসিএল। ছবিটির বক্স অফিস আয় ছিল, মাত্র ১.৬৬ কোটি।

5. কফিনে শেষ পেরেক

এবিসিএল-এর কফিনে শেষ পেরক ছিল ‘কেয়া হ্যায়’ চলচ্চিত্র। মুকুল দেব ছিলেন প্রধান চরিত্রে। ছবিটি তৈরি হলেও, কখলও মুক্তি পায়নি। কিছু বোঝার আগেই প্রায় ৯০ কোটি টাকা ঋণে ডুবে গিয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন!

কীভাবে বাঁচলেন অমিতাভ?

ঋণের দায়ে ডুবে থাকা অমিতাভকে, ২০০০ সালে, ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এই রিয়েলিটি শোয়ের বিপুল সাফল্য অমিতাভের আর্থিক বোঝা অনেকটা কমিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু, তাঁকে শেষ পর্যন্ত রক্ষা করেছিল তাঁর অভিনয়ই। যশ চোপড়ার ‘মহব্বতেঁ’ ফিল্মের সাফল্য়ই বলা যেতে পারে অমিতাভ বচ্চনকে আর্থিক দিক থেকে এবং পেশাগত দিক থেকে পুরোপুরি ডুবে যাওয়া থেকে বাঁচিয়েছিল। বর্তমানে স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি মিলিয়ে বলিউড সুপারস্টার মোট সম্পদের পরিমাণ ২০০ কোটির টাকারও বেশি।

Next Article