MDH: কেন MDH মশলা বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত এবং পছন্দ করা হয়

MDH: শুধু তাই নয়, এমডিএইচ-এর মশলায় যে জিরে ব্যবহার করা হয় তা বিশ্বের সর্বোচ্চ মানের। হলুদ এবং অন্যান্য মশলা সংগ্রহ করার সময় নিখুঁতভাবে পরীক্ষা করা হয়। গ্রাহকদের হাতে বিশুদ্ধ মশলা পৌঁছে দিতে সংস্থার তরফে বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়।

MDH: কেন MDH মশলা বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত এবং পছন্দ করা হয়
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 03, 2024 | 9:23 AM

বিশ্বের সেরা এবং শুদ্ধতম স্বাদের গল্প বলে এমডিএইচ (MDH) মশলা। এই মশলা প্রতিটি পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। শুধু ভারতেই নয়, সারা বিশ্বে ‘এমডিএইচ মশলা’ তাদের শুদ্ধতা ও গুণমানের জন্য গত ১০০ বছরে অনেক ভালবাসা এবং প্রশংসা অর্জন করেছে।

MDH-এর সাফল্যের মন্ত্রই হল শুদ্ধতা এবং গুণমান। এই সংস্থা যে কাঁচা মশলা সংগ্রহ করে, তা বিশ্বের অন্যতম সেরা। শুদ্ধতা যে এই সংস্থার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা উদাহরণ দিলেই বোঝা যাবে। এমডিএইচ হল একমাত্র মশলা সংস্থা, যারা লঙ্কাগুঁড়ো তৈরি করার আগে লঙ্কার বোঁটা বাদ দেয়, যাতে একেবারে শুদ্ধ মশলা ভারত এবং বিশ্বের সব গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে যায়।

শুধু তাই নয়, এমডিএইচ-এর মশলায় যে জিরে ব্যবহার করা হয় তা বিশ্বের সর্বোচ্চ মানের। হলুদ এবং অন্যান্য মশলা সংগ্রহ করার সময় নিখুঁতভাবে পরীক্ষা করা হয়। গ্রাহকদের হাতে বিশুদ্ধ মশলা পৌঁছে দিতে সংস্থার তরফে বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়।

বিরাট এই মশলা-সাম্রাজ্যের শিকড় ছিল শিয়ালকোটে (বর্তমান পাকিস্তানে)। ১৯১৯ সালে, মহাশয় চুন্নিলাল গুলাটি মশলা বিক্রির জন্য একটি দোকান খোলেন। দোকানের নাম ছিল ‘মহাশিয়ান দি হাট্টি’। তাঁর অবর্তমানে তাঁর উত্তরাধিকারী তথা তাঁর ছেলে মহাশয় ধরমপাল গুলাটি ওই ব্যবসা এগিয়ে নিয়ে যান। ধরমপাল গুলাটির মৃত্যুর পরে তাঁর পুত্র রাজীব গুলাটি বর্তমানে গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে এই সাফল্যের গল্পকে আরও উত্তরণের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।

এছাড়া, বিজ্ঞাপনের দুনিয়াতেও MDH সংস্থা হল পথপ্রদর্শক। এই সংস্থাই প্রথমবার টিভি-তে মশলার বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে। শুধু তাই নয়, ছাপার অক্ষরে বিজ্ঞাপনও প্রথম প্রকাশ করেছিল এই সংস্থাই।

MDH প্রাইভেট লিমিটেড তাদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা মাথায় রেখে মোট পাঁচটি অত্যাধুনিক প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। গুণমান বজায় রাখার জন্য সরাসরি উৎপাদন কেন্দ্র থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে এই সংস্থা। বিশেষ মেশিনের সাহায্যে কাঁচামাল পরীক্ষা করা হয়। তারপর এটি গুঁড়ো করা হয়। পুরো প্রক্রিয়ার জন্য সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় মেশিন বসানো আছে।

হাতে গুঁড়ো করা মশলা দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিল MDH। ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে স্বয়ংক্রিয় মেশিনের বন্দোবস্ত করা হয়। তাই আজ কোটি কোটি টাকার মশলা আধুনিক মেশিনে তৈরি হয় ও প্যাক করা হয়। বর্তমানে ১০০০ স্টকিস্ট এবং ৪ লক্ষেরও বেশি খুচরো বিক্রেতার নেটওয়ার্ক দ্বারা এই মশলা বিক্রি করা হয়। দেশে এবং বিদেশে বিক্রি করা হয় সেই মশলা। এই মেশিনগুলির এখন এক এক দিনে ৩০ টন মশলা উৎপাদনে সক্ষম, যা সুন্দর কনজিউমার প্যাকে ভরে বিক্রি হয়।

বিভিন্ন সময়ে পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছে এই MSH। আইটিআইডি কোয়ালিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড, “আর্ক অব ইউরোপ” পুরস্কার, দাদাভাই নওরোজি পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছে এই সংস্থা। এছাড়া ২০১৯ সালে মহাশয় ধরমপাল গুলাটি ভারতের তৃতীয়-সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার পদ্মভূষণ পান।

সামাজিক দিক থেকেও অনেক মানুষের জীবনকে সহজ করে তুলেছে এই এমডিএইচ (MDH)। মহাশয় ধরমপাল একবার জানিয়েছিলেন যে তাঁর বেতনের ৯০ শতাংশই যায় দাতব্য প্রতিষ্ঠানে। তিনি ৩০০ শয্যার একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছেন, ২০টিরও বেশি স্কুল তৈরি করেছেন তিনি। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে তিনি কোভিড পরিস্থিতিতে কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মীদের ৭৫০০ পিপিই কিট দান করেছিলেন। রাজীব গুলাটিও এই মহৎ কাজ আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

আজ MDH মশলা এবং মিশ্রণগুলি শুধু ভারতেই নয়, সারা বিশ্বে জনপ্রিয়। আমেরিকা, কানাডা, ইউকে, ইউরোপ, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, জাপান, আরব আমিরশাহীতে রফতানি করা হচ্ছে এইসব পণ্য। লন্ডনে সংস্থার নিজস্ব অফিস আছে ও শারজায় একটি উৎপাদনের বিশেষ ইউনিট রয়েছে এই সংস্থার।