ওসাকা: বর্তমান সময়কে বলা হচ্ছে স্টার্টআপের যুগ। স্টার্টআপ, অর্থাৎ, একেবারে শূন্য থেকে শুরু করা সংস্থা। গত কয়েক দশকে, বিশেষ করে তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এই দরনের অনেক সংস্থা তৈরি হয়েছে। তাদের কেউ কেউ টিকে গিয়েছে, তবে অনেককেই পাত্তারি গোটাতে হয়েছে কয়েক দশক বা কয়েক বছরের মধ্যেই। সবগুলি এই প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে পারেনি। তবে, এমন কিছু সংস্থাও আছে, যারা কয়েক শতাব্দী ধরে তাদের ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এখনও বছর বছর সমৃদ্ধ হচ্ছে। এই রকমই এক সংস্থা হল ‘কঙ্গো গুমি লিমিটেড কোম্পানি’। বস্তুত, এই সংস্থাই বিশ্বের প্রাচীনতম সংস্থা, যা প্রায় ১৫০০ বছর ধরে সমান তালে ব্যবসা করে যাচ্ছে।
অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এই জাপানি নির্মাণ সংস্থাটির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ৫৭৮ খ্রিস্টাব্দে। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত টিকে রয়েছে এই সংস্থা। কীভাবে এই প্রতিযোগিতার বাজারে এতদিন ধরে টিকে আছে তারা? সংস্থা জানিয়েছে এর গোপন রহস্য হল – ব্যবসার একটি বিশেষ জায়গা বেছে নিয়ে সেই জায়গায় নিজের জায়গা ধরে রাখতে হবে। তাহলেই, যে কোনও ব্যবসা দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে যাওয়া যাবে। কঙ্গো গুমি লিমিটেড কোম্পানি যেমন, মন্দির নির্মাণের জন্য কাঠের সাথে কংক্রিট ব্যবহারকারী প্রথম জাপানি নির্মাণ সংস্থাগুলির মধ্যে অন্যতম। তাদের আলাদাভাবে নাম রয়েছে জাপানি ঐতিহ্যগত স্থাপত্যে। এই সংস্থা, প্রধানত মন্দির, দুর্গ এবং জাপানি ঐতিহ্যবাহী ভবনগুলির নকশা, নির্মাণ, পুনরুদ্ধার এবং মেরামতের কাজ করে থাকে।
সংস্থার সদর দফতর ওসাকায়। ১৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই সংস্থা ছিল এক জাপানি পরিবারের মালিকানাধীন। তবে, বর্তমানে জাপানে অনেক বড় বড় নির্মাণ সংস্থা তৈরি হয়েছে। প্রতিযোগিতা অনেক বেড়েছে। এই অবস্থায় ২০০৬ সালে তাকামাতসু কনস্ট্রাকশন গ্রুপ কঙ্গো গুমি সংস্থা অধিগ্রহণ করেছে। বর্তমানে কঙ্গো গুমি তাকামাতসু কনস্ট্রাকশন গ্রুপের এক সহায়ক সংস্থা। মালিকানা বদলালেও, নিজেদের বিশেষত্ব ছাড়েনি সংস্থাটি। এখনও, প্রধানত বৌদ্ধ মন্দির এবং অন্যান্য ঐতিহাসিক ভবনগুলি পুনরুদ্ধারের কাজ করে থাকে। সংস্থার কর্মীরা, প্রয়োজনে ১০ বছর ধরে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। এই সময়ে, তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতার আয়োজনও করা হয়। কাঠ এবং কাদামাটি দিয়ে মন্দির নির্মাণে কে সবথেকে বেশি দক্ষ হয়ে উঠলেন, তা প্রদর্শন করার সুযোগ পান কর্মীরা।