ChatGPT নামক AI চ্যাটবট বাজারে আসতেই অনেকের মধ্য়েই উদ্বেগ বেড়েছে। একের পর এক কঠিন পরীক্ষায় ChatGPT উত্তীর্ণ হওয়ার পর মানুষের মধ্যে নিজের চাকরি হারানোর ভয় ঢুকেছে। যে ChatGPT এমবিএ-র মতো কঠিন পরীক্ষা পাশ করে যায়, সে তো চাকরিক্ষেত্রেও বড় ছাঁটাইয়ের কারণ হতেই পারে। তাই এই বুঝি চাকরি গেল, এই শঙ্কাতেই দিন কাটছে বহু কর্পোরেটদের। তবে শুধুই ChatGPT নয়। তালিকা জুড়ে রয়েছে আরও অন্যান্য AI চ্যাটবট। তবে ChatGPT শুধু চাকরি যাওয়ার জন্যই দায়ী নয়। ChatGPT-র মতো কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার কারণে ভারতে হাজার হাজার চাকরিও হতে পারে। টিমলিসের একটি গবেষণায় এমন তথ্য়ই উঠে এসেছে। টেক স্টাফিং ফার্ম টিমলিস ডিজিটালের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ভারতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ক্ষেত্রে মোট ৪৫ হাজার কাজের সুযোগ রয়েছে। সবটাই মূলত ডাটা সায়েন্টিস্ট ও মেশিন লার্নিং ইঞ্জিনিয়ারিং পদে। আর এইসব পদে ফ্রেশারদেরই বেতন হবে চমকে দেওয়ার মতোই।
এই প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট, কারও পৌষমাস তো কারও সর্বনাশ। অর্থাৎ ChatGPT-র মতো AI চ্য়াটবটের কারণে যখন কন্টেন্ট রাইটার, কন্টেন্ট ডেভেলপার পদে চাকরি যাওয়ার সম্ভাবনা সামান্য উঁকি দিচ্ছে, সেই সময় এই AI-র পিছনে নিয়োগের সম্ভবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটি সেক্টরের কর্মদক্ষতায় চাকরি হারাবে অন্য আরেকটি সেক্টরের কর্মীরা। তবে এটি আলোচনাসাপেক্ষ। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল AI-র হাত ধরে ভারতে আসবে চাকরিও। এই ৪৫ হাজারটি শূন্যপদে পদে নবাগতা বা ফ্রেশাররা বার্ষিক ১০ থেকে ১৪ লক্ষ টাকা পাবেন। এই গবেষণার তথ্য এমন সময় উঠে এসেছে যখন বিশ্ব জুড়ে AI প্রোডাক্টের রমরমা। ChatGPT, Dall-E, Bing AI ও Midjourney-র মতো পরিষেবা ইতিমধ্যেই সাধারণ জনগণের কাছে উপলব্ধ। রিপোর্ট অনুযায়ী, এমন অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে AI প্রফেশনালদের চাহিদা অনেক বেশি। সেসব ক্ষেত্রেই প্রায় ৪৫ হাজার চাকরির সুযোগ রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
টিমলিজ ডিজিটালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এআই-তে স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষা, ব্যাঙ্কিং, ম্যানুফ্যাকচারিং এবং রিটেইলের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভূমিকার জন্য প্রায় ৪৫ হাজার পদে নিয়োগ করা হচ্ছে। প্রতিবেদনে, AI-র দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগের গুরুত্বের উপরও জোর দেওয়া হয়েছে। কারণ বর্তমানে এই ক্ষেত্রটি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এক্ষেত্রে নিয়োগের জন্য ডাটা সায়েটিস্টস ও এমএল ইঞ্জিনিয়ারদের উপরই জোর দেওয়া হয়েছে। AI-র ক্ষেত্রে কেরিয়ার তৈরি করার জন্য এমএল মডেল ও স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজেসে ক্ষুরধার হতে হবে আগ্রহী প্রার্থীদের। এই রিপোর্ট অনুযায়ী, এই চাকরি ক্ষেত্রে ডাটা ইঞ্জিনিয়াররা প্রতি বছর ১৪ লক্ষ টাকা আয় করতে পারেন। এমএল ইঞ্জিনিয়াররা ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ও ডাটা সায়েনটিস্টসরা বার্ষিক ১৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। ডেভঅপস ইঞ্জিনিয়ার ও ডেটা আর্কিটেক্টসরা পাবেন বার্ষিক ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। BI অ্যানালিস্ট ও ডাটাবেস অ্য়াডমিনরা বার্ষিক ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করবেন। গবেষণা বলছে, আর যাঁদের সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ৮ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁরা বার্ষিক ২৫ থেকে ৪৫ লক্ষ টাকা বেতন পাবেন। ফলে AI-র বাজারে আসা অনেকটা কারও পৌষমাস, তো কারও সর্বনাশের মতো।