কলকাতা: শেষ হল বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন। বিভিন্ন কারণে এবারের অধিবেশন ছিল যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। একদিকে পাস হয়েছে আচার্য বিল-সহ একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ বিল। অন্যদিকে, সাসপেনশন ইস্যুতে উত্তাল হয়েছে বিধানসভা কক্ষ। পরের দিকে সাত বিজেপি বিধায়কের সাসপেনশন তুলে নেওয়া হলেও, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সে ভাবে বিধানসভায় উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি। এবার সব শেষে তিক্ততা ভুলে শাসক দলের মুখে বিরোধীদের প্রশংসা শোনা গেলেও শোনা গেল না শুভেন্দু অধিকারীর নাম।
শুক্রবার ছিল অধিবেশনের শেষ দিন। শাসক দলের পক্ষে বারবার বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গার নাম করা হলেও একবারও শুভেন্দুর নাম কেউ মুখে আনেনি। এ দিন রীতি মেনে ভোট অব থ্যাংকস দেওয়া হয় শাসক দলের তরফে। বক্তব্য রাখেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষ, পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্য়ায়। কিন্তু তাঁরা কেউই শুভেন্দুর কথা বলেননি।
এ দিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় স্পিকারকে বলেন, বহু রকমের চাপ দেওয়া সত্ত্বেও আপনি কাজ থেকে বিচ্যুত হননি। বিরোধী দলের সব সদস্যকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। তিনি উল্লেখ করেন, বিরোধীরা দেরিতে হলেও বুঝেছেন বাইরে গিয়ে ছবি তোলা যায়, কিন্তু এলাকার জন্য তাঁদের দায়বদ্ধতা আছে। তাই তারা অধিবেশনের কাজে অংশ নিয়েছেন। বিধায়কদের উপস্থিতি আগের বারের থেকে ভাল বলেও দাবি করেছেন তিনি। ভোট অব থ্যাংকস-এ এও উল্লেখ করা হয় যে, প্রথমে মোশন আনতে বিজেপি দেরি করলেও, পরে মনোজ টিগ্গার উদ্য়োগে মোশন আনা হয়।
এর আগের অধিবেশনে শেষ দিনে তুমুল গন্ডগোল হয় বিধানসভায়। বিজেপি ও তৃণমূল বিধায়কদের মধ্যে হাতাহাতি, চুলোচুলি পর্যন্ত হয়েছিল। এমনকী রক্তপাতও হয়। এরপরই বিধানসভা থেকে পাঁচজন বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। সেই তালিকায় ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, মনোজ টিগ্গা, শঙ্কর ঘোষ, নরহরি মাহাতো, দীপক বর্মন। এ ছাড়া ওই অধিবেশন শুরুর দিন রাজ্যপালের ভাষণের সময় গোলমালের জেরে দুই বিধায়ক নাটাবাড়ির মিহির গোস্বামী, পুরুলিয়ার সুদীপ মুখোপাধ্যায়কেও সাসপেন্ড করা হয়। তাই বিশেষ অধিবেশন শুরুর দিন থেকেই সেই সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবি জানায় বিজেপি। প্রথম থেকে কেউ প্রবেশ করতে পারেননি বিধানসভা কক্ষে।
পরে আদালতে মামলা গড়ালে নির্দেশ দেওয়া হয়, বিধানসভাতেই মিটিয়ে ফেলতে হবে সমস্যা। সেই মত সাসপেনশন উঠেও যায়। তবে মাত্র একদিনই বিধানসভায় ছিলেন শুভেন্দু।