আসানসোল: রাজ্যে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। শিয়রে নয়া স্ট্রেইন ওমিক্রন। এই অবস্থায় ৩ ডিসেম্বর থেকে ফের আংশিক লকডাউন ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। এদিকে এই আবহে চলছে আসানসোল পুরনিগম ভোটের (Asansol Municipality) প্রচার। আর তাতে প্রার্থী ও তাঁর সঙ্গীদের দেখা গেল মাস্কবিহীন মুখে। আর শারীরিক দূরত্ববিধি? নৈব নৈব চ।
সোমবার থেকে আংশিক লকডাউনের পথে রাজ্য। এদিকে ভোটের জন্য হাতে মাত্র ২০ দিন। তার মধ্যেই সেরে ফেলতে হবে প্রচার। তৃণমূল, বিজেপি দু’ পক্ষই ঝড় তুলেছে প্রচারে। মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাওয়ার সময় কোভিড বিধি মানার কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। অথচ নিজেরাই ভঙ্গ করছেন বিধি।
মুখে কোভিড সতর্কতার কথা বললেও নিজেদের কাজে তার কোনও ছাপ রাখছেন না প্রার্থী ও তাঁর অনুগামীরা। সতর্কতার অভাব দেখা গেল আসানসোলে। এদিন আসানসোল পুরনিগমের ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অভিজিৎ ঘটক প্রচারে বেরিয়ে ছিলেন। মন্ত্রী মলয় ঘটকের ভাই জেলা আইএনটিটিউসির জেলা সভাপতিও বটে। প্রচারের গোটা সময়টা সেই অভিজিতবাবুর মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। তাঁর বক্তব্য, নির্বাচন কমিশন যে ভাবে কোভিড প্রোটোকল মানতে বলবেন সেভাবেই তাঁরা মেনে চলবেন! মুখে মাস্ক বা স্যানিটাইজারের ব্যবহার ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখবেন প্রচারে।
তৃণমূল প্রার্থী যোগ করেন, এর থেকে খারাপ পরিস্থিতিতেও (করোনা পরিস্থিতি) বিধানসভা ভোট হয়েছে। সেই তুলনায় জেলায় পরিস্থিতি অতটা উদ্বেগজনক নয়। অন্যদিকে আসানসোল পুরনিগমের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারির স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারি। তিনি সমাজকর্মী ও আইনজীবীও বটে। বিজেপি প্রার্থী অবশ্য মাস্ক পরেই প্রচারে করেছেন। তবে শারীরিক দূরত্ব তিনি বজায় রাখেননি।
চৈতালির কথায়, “খারাপ লাগলেও করোনা আবহের মধ্যে প্রচার করতে হচ্ছে। তবে যেহেতু পুরভোট, এখানে ছোট ছোট এলাকায় প্রচার সম্ভব। সবাই একে অপরের পরিচিত। করোনাবিধি বা আংশিক লকডাউন হলে সেই সমস্ত বিধি মেনেই প্রচার করা হবে”।
এনিয়ে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক শেখ মহম্মদ ইউনুস বলছেন, নির্বাচনের ওপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ নেই। কিন্তু শহরবাসীকে ও প্রার্থীদের কোভিড বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হবে। ২০ লাখ প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে জেলায়। কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান তিনি।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য বলছে, গত বছরের জানুয়ারি মাসে এই জেলায় শতাংশের বিচারে ২.১৭ কোভিড বেড়েছিল। মার্চ মাসে বিধানসভা ভোটের প্রচার যখন তুঙ্গে, তখন শতাংশের বিচারে ৪.৫১ শতাংশ রোগীর কোভিড পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। যেটা এপ্রিল মাসে একলাফে বেড়ে হয় ৪৫.৪ শতাংশে। আর মে মাসে ২৫.৪৬ শতাংশ। আবার মে মাসেই ভোটের পর নতুন সরকার তার কাজ শুরু করে। সরকারের নেওয়া বিভিন্ন ব্যবস্থার ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করে। অগস্ট মাসে ০.৬৪ শতাংশ হারে করোনা পজিটিভ পাওয়া যায় এই এলাকায়। এই সময় পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল।
পুজো আর উৎসবের মরসুমে সংক্রমণ আবারও কিছুটা হলেও বেড়েছে। অক্টোবর মাসে সংক্রমণের হার দাঁড়ায় ১.০৩ শতাংশে। নভেম্বরে হার সামান্য কমে হয় ১.০২ শতাংশ। যা আবার বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে এসে বেশ কিছুটা বেড়ে হয় ১.৭৮ শতাংশ। জেলায় এবছর জানুয়ারি মাসে কোভিড রোগীর সংখ্যা ২৪১ জন।