Baruipur Municipal Election: পেশায় রাজমিস্ত্রি ভোম্বল বারুইপুরের পুরপ্রার্থীও, ‘ছকভাঙার’ পথে বাম শিবির?

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Feb 05, 2022 | 9:18 AM

South 24 Pargana: সিপিএমের তরফে জানা গিয়েছে, বাম শিবির সর্বদাই সর্বহারাদের কথা বলে। শ্রমিকের কথা বলে। তাহলে কোনও মেহনতী শ্রমিক প্রার্থী হবে না?

Follow Us

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ধীরে ধীরে কি ছক ভাঙছে বাম শিবির? অন্তত, বামেদের (CPIM) সাম্প্রতিক পদক্ষেপ তাই বলছে। পুরভোটে বারুইপুরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে এ বার বামেদের প্রার্থী পেশায় রাজমিস্ত্রি ভোম্বল। মোট ১১ সদস্যকে নিয়ে ভোম্বলের পরিবার। দিন-আনা-দিন খাওয়া মানুষ ভোম্বলের মাসিক আয় দশহাজার টাকাও নয়। যখন যেমন কাজ পান, তখন তেমন করেন। দৈনিক মজুরি ধরেই যা আয় তাঁর। ৬২ বছর বয়সেও শক্ত সমর্থ ভোম্বলের পড়াশোনা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। অভাবের তাড়নায় পড়াশোনা বেশিদূর করতে পারেননি। ইমারত-গড়া ভোম্বল মিস্ত্রির নিজের ইমারতের ঠিক নেই। চিরকাল বাম মতাদর্শে বিশ্বাসী ভোম্বল তাই এ বার বারুইপুর ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএমের মুখ।

কেন আচমকা ভোম্বল মিস্ত্রি বামেদের প্রার্থী? সিপিএমের তরফে জানা গিয়েছে, বাম শিবির সর্বদাই সর্বহারাদের কথা বলে। শ্রমিকের কথা বলে। তাহলে কোনও মেহনতী শ্রমিক প্রার্থী হবে না? বস্তুত, ছক ভাঙতে তৎপর সিপিএম। কলকাতা পুরভোটে এককভাবে লড়াই করার পর ভাল অংশের ভোট শতাংশ জুটেছে বামেদের কপালে। সেই ভোট শতাংশ আরও বাড়াতেই তৎপর তারা।

সম্প্রতি দেখা গিয়েছে, শুধু ভোম্বলের মতো প্রার্থী নন, অনেক ওয়ার্ডেই বামেদের তরফে প্রার্থী হয়েছেন তরুণেরা। নতুন প্রজন্মকে সামনে এনেছে বাম শিবির। এতদিন, বামেদের প্রার্থী বলতে সমাজের তথাকথিত, ‘মার্জিত শিক্ষিত’ প্রার্থী বা কর্মীর ছবি ভেসে উঠত, সেই চেনা ছকই ভাঙতে চাইছে তারা। তাই, ভোম্বলের মতো ‘স্বল্পশিক্ষিত’ মানুষই এ বার সিপিএমের মুখ।

আর প্রার্থী হয়ে কতটা খুশি ভোম্বল মিস্ত্রি? আপাতত কাজে ফাঁকি নেই তাঁর। ভোম্বল জানিয়েছেন, তিনি মানুষের জন্য কাজ করতে চান। আলাদা করে তাঁর কিছু চাইবার নেই। দল তাঁকে প্রার্থী করেছে, তাতে কৃতজ্ঞ। কিন্তু, তা বলে নিজের কাজ বাদ দেননি ভোম্বল। কাজের ফাঁকে ফাঁকে  দেওয়াল লিখনের কাজও সেরে ফেলছেন তিনি। ভোম্বলের কথায়, “দলের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আলাদা করে বলার কিছু নেই। শুধু এইটুকুই বলার মানুষের হয়ে কাজ করতে চাই। লড়াই হোক, ফলাফল নিয়ে পরে ভাবব।”

বস্তুত, দলীয় পরিকাঠামো ও পরিকল্পনায় একাধিক বদল আনছে বাম শিবির।

পূর্বে কোনও প্রতিবাদ, দাবি জানাতে বাম শিবির ধর্মঘট বা হরতালকেই পন্থা হিসেবে বেছে নিয়েছে। ২০১১ সালে পরিবর্তনের হাওয়া আসার পরে বাম শিবিরের ধর্মঘট করা জারি ছিল। কেবল মিছিল পিকেটিং নয়, বিভিন্ন সময়ে ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবরও শোনা যেত। কিন্তু, সেই সময় থেকেই এ বার সরে আসতে চাইছে বাম শিবির। অন্তত এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।

একদা ‘ধর্মঘটপ্রেমী’ বামপন্থীদের তাহলে ধর্মঘটের বিকল্প কী হবে? বাম শিবির বলতেই যে ‘পক্ককেশ’ কর্মীদের চিরাচরিত ছবি সামনে ভেসে আসে, সেই জায়গা থেকে এখন অনেকটাই সরে এসেছে তারা। বিধানসভা নির্বাচন থেকে শুরু করে পুরভোটেও নজর কেড়েছে ওয়াই জেনারেশন। স্বভাবতই গতির সঙ্গে তাল মেলাতে তৎপর তারা। ফলে, নতুন মুখ-রা কেউই ধর্মঘটের পক্ষে মত দিচ্ছেন না এমনটাই খবর সূত্রের। শুধু তাই নয়, জায়গায় জায়গায় বাম শ্রমিক ইউনিয়নগুলিও ধর্মঘটে নিজেদের অনীহাই প্রকাশ করেছে। দলের অন্দরের অনেকেরই মত, বিধানসভা নির্বাচনের ভরাডুবির পর বাম শিবিরের লড়াই কঠিন। ফের নিজেদের হাল ফেরাতে  লালশিবিরকে শরণাপন্ন হতেই হবে ‘নবদিগদর্শন’-এর, অন্তত এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।

পুরভোটে পৃথকভাবে লড়াই করে কলকাতায় নিজেদের ভোট শতাংশ বাড়িয়েছে বাম শিবির। শূন্য থেকে উঠে এসেছে দ্বিতীয়ত। সেই শতাংশ জেলার বাকি পুরভোটেও হারাতে চায় না। বরং, কীভাবে ভোট শতাংশ বাড়ানো যায়, সেদিকেই নজর বাম শিবিরের। ইতিমধ্যেই অনেকগুলি জেলায় পুরভোটে নতুনদের মুখ করেছে সিপিএম। বারুইপুর তার ব্যতিক্রম নয়। তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটিতে কী ফিরবে লালের হাল? এখন সেদিকেই তাকিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল।

বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা

বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা

 

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ধীরে ধীরে কি ছক ভাঙছে বাম শিবির? অন্তত, বামেদের (CPIM) সাম্প্রতিক পদক্ষেপ তাই বলছে। পুরভোটে বারুইপুরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে এ বার বামেদের প্রার্থী পেশায় রাজমিস্ত্রি ভোম্বল। মোট ১১ সদস্যকে নিয়ে ভোম্বলের পরিবার। দিন-আনা-দিন খাওয়া মানুষ ভোম্বলের মাসিক আয় দশহাজার টাকাও নয়। যখন যেমন কাজ পান, তখন তেমন করেন। দৈনিক মজুরি ধরেই যা আয় তাঁর। ৬২ বছর বয়সেও শক্ত সমর্থ ভোম্বলের পড়াশোনা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। অভাবের তাড়নায় পড়াশোনা বেশিদূর করতে পারেননি। ইমারত-গড়া ভোম্বল মিস্ত্রির নিজের ইমারতের ঠিক নেই। চিরকাল বাম মতাদর্শে বিশ্বাসী ভোম্বল তাই এ বার বারুইপুর ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএমের মুখ।

কেন আচমকা ভোম্বল মিস্ত্রি বামেদের প্রার্থী? সিপিএমের তরফে জানা গিয়েছে, বাম শিবির সর্বদাই সর্বহারাদের কথা বলে। শ্রমিকের কথা বলে। তাহলে কোনও মেহনতী শ্রমিক প্রার্থী হবে না? বস্তুত, ছক ভাঙতে তৎপর সিপিএম। কলকাতা পুরভোটে এককভাবে লড়াই করার পর ভাল অংশের ভোট শতাংশ জুটেছে বামেদের কপালে। সেই ভোট শতাংশ আরও বাড়াতেই তৎপর তারা।

সম্প্রতি দেখা গিয়েছে, শুধু ভোম্বলের মতো প্রার্থী নন, অনেক ওয়ার্ডেই বামেদের তরফে প্রার্থী হয়েছেন তরুণেরা। নতুন প্রজন্মকে সামনে এনেছে বাম শিবির। এতদিন, বামেদের প্রার্থী বলতে সমাজের তথাকথিত, ‘মার্জিত শিক্ষিত’ প্রার্থী বা কর্মীর ছবি ভেসে উঠত, সেই চেনা ছকই ভাঙতে চাইছে তারা। তাই, ভোম্বলের মতো ‘স্বল্পশিক্ষিত’ মানুষই এ বার সিপিএমের মুখ।

আর প্রার্থী হয়ে কতটা খুশি ভোম্বল মিস্ত্রি? আপাতত কাজে ফাঁকি নেই তাঁর। ভোম্বল জানিয়েছেন, তিনি মানুষের জন্য কাজ করতে চান। আলাদা করে তাঁর কিছু চাইবার নেই। দল তাঁকে প্রার্থী করেছে, তাতে কৃতজ্ঞ। কিন্তু, তা বলে নিজের কাজ বাদ দেননি ভোম্বল। কাজের ফাঁকে ফাঁকে  দেওয়াল লিখনের কাজও সেরে ফেলছেন তিনি। ভোম্বলের কথায়, “দলের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আলাদা করে বলার কিছু নেই। শুধু এইটুকুই বলার মানুষের হয়ে কাজ করতে চাই। লড়াই হোক, ফলাফল নিয়ে পরে ভাবব।”

বস্তুত, দলীয় পরিকাঠামো ও পরিকল্পনায় একাধিক বদল আনছে বাম শিবির।

পূর্বে কোনও প্রতিবাদ, দাবি জানাতে বাম শিবির ধর্মঘট বা হরতালকেই পন্থা হিসেবে বেছে নিয়েছে। ২০১১ সালে পরিবর্তনের হাওয়া আসার পরে বাম শিবিরের ধর্মঘট করা জারি ছিল। কেবল মিছিল পিকেটিং নয়, বিভিন্ন সময়ে ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবরও শোনা যেত। কিন্তু, সেই সময় থেকেই এ বার সরে আসতে চাইছে বাম শিবির। অন্তত এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।

একদা ‘ধর্মঘটপ্রেমী’ বামপন্থীদের তাহলে ধর্মঘটের বিকল্প কী হবে? বাম শিবির বলতেই যে ‘পক্ককেশ’ কর্মীদের চিরাচরিত ছবি সামনে ভেসে আসে, সেই জায়গা থেকে এখন অনেকটাই সরে এসেছে তারা। বিধানসভা নির্বাচন থেকে শুরু করে পুরভোটেও নজর কেড়েছে ওয়াই জেনারেশন। স্বভাবতই গতির সঙ্গে তাল মেলাতে তৎপর তারা। ফলে, নতুন মুখ-রা কেউই ধর্মঘটের পক্ষে মত দিচ্ছেন না এমনটাই খবর সূত্রের। শুধু তাই নয়, জায়গায় জায়গায় বাম শ্রমিক ইউনিয়নগুলিও ধর্মঘটে নিজেদের অনীহাই প্রকাশ করেছে। দলের অন্দরের অনেকেরই মত, বিধানসভা নির্বাচনের ভরাডুবির পর বাম শিবিরের লড়াই কঠিন। ফের নিজেদের হাল ফেরাতে  লালশিবিরকে শরণাপন্ন হতেই হবে ‘নবদিগদর্শন’-এর, অন্তত এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।

পুরভোটে পৃথকভাবে লড়াই করে কলকাতায় নিজেদের ভোট শতাংশ বাড়িয়েছে বাম শিবির। শূন্য থেকে উঠে এসেছে দ্বিতীয়ত। সেই শতাংশ জেলার বাকি পুরভোটেও হারাতে চায় না। বরং, কীভাবে ভোট শতাংশ বাড়ানো যায়, সেদিকেই নজর বাম শিবিরের। ইতিমধ্যেই অনেকগুলি জেলায় পুরভোটে নতুনদের মুখ করেছে সিপিএম। বারুইপুর তার ব্যতিক্রম নয়। তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটিতে কী ফিরবে লালের হাল? এখন সেদিকেই তাকিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল।

বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা

বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা

 

Next Article