হুগলি: দুয়ারে পুরনিগমের ভোট। তবে দেওয়ালে নেই রং-তুলির কারুকাজ। বরং এবার চন্দননগর পুর এলাকায় দেওয়াল জুড়ে ফ্লেক্সের রমরমা। ভোটের চন্দননগরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের দেওয়ালগুলিতে রঙের খেলা নেই। সে জায়গা দখল নিয়েছে ডিজিটাল প্রিন্টের ফ্লেক্স, ফেস্টুন।
ভোট যদি গণতন্ত্রের উৎসব হয়, তা হলে সে উৎসবের আগমনীবার্তা দেয় দেওয়াল লিখন। শুধু এ বাংলায় নয়, গোটা দেশজুড়েই এমন দস্তুর। তবে বাংলায় ভোটের দেওয়াল লিখনের একটা দারুণ ঐতিহ্য আছে। এ দেওয়াল লিখন কত শিল্পী তৈরি করে, কত লিখিয়ে চেনায়। ছোট ছোট ছড়া, অসাধারণ তুলির টানে লেখা নিয়ে বছরের পর বছর পাড়ায় চেনা মুখ হাজির হয়। সঙ্গে খান কতক রঙের কৌটো, নানা আকারের তুলি! তাকে ঘিরে কত ভিড়!
আসলে ভোট মানেই রঙ বেরঙের দেওয়াল লেখা, ছড়া লেখা। ভোটের সঙ্গে দেওয়ালের এক গভীর সম্পর্ক। ভোটের লড়াইয়ের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দেওয়াল দখলের লড়াইতে নেমে পড়ে। দেওয়ালে চুনকাম করে নিজেদের দলের প্রার্থীর হয়ে বিভিন্ন কথা লিখে ভোট চায় মানুষের কাছে। এ ছবি বাংলার মানুষের বড় চেনা।
কিন্তু এবার চন্দননগর পুরভোটে ধরা পড়ল ভিন্ন চিত্র। চন্দননগরের ১০ নম্বর ওয়ার্ড। বিদ্যালঙ্কার বাগবাজার এলাকা এই ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। এখানকার দেওয়ালগুলিতে লিখন নেই। দেওয়াল লেখার জায়গায় এবার স্থান পেয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ফ্লেক্স। ভোটের আগে ফ্লেক্স অনেক দলই লাগায়। কিন্ত দেওয়াল লেখার বদলে দেওয়ালে টানটান করে ফ্লেক্স লাগানো খুব একটা চোখে পড়ে না।
১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অজয় ঘোষ জানান, নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পরে খুব কম সময় পাওয়া গিয়েছে প্রচারের জন্য। এই সময়ে দেওয়াল রঙ করা, তারপর লেখা, আবার ভোট মিটে গেলে দেওয়াল আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া বেশ সময় সাপেক্ষ আর খরচও বেশি। তার থেকে দেওয়ালে ফ্লেক্স লাগালে অল্প সময়েই হয়ে যায়, দেওয়াল পরিষ্কারও থাকে। আর খুব উজ্জ্বল হওয়ায় সহজেই চোখ টানে।
অজয় ঘোষের কথায়, “এত কম সময়ে এর আগে ভোট করার অভিজ্ঞতা ছিল না। গুছিয়ে পরিচালনার ক্ষেত্রে আমাদের মনে হল যদি দেওয়াল লিখন না করে এবার পোস্টারিং করি অল্প সময়ে প্রচারটা সেরে ফেলতে পারব। আর দেওয়ালের অনুমতির জন্য আমরা মানুষের কাছে গেলে, তাঁরা বলেন ভোটের পর দেওয়ালটা যেন মুছে দিই। দেওয়াল চুন করা, লেখা, আবার চুন করা এতে সময়ও যায়, টাকাও বেশি লাগে। তাই এবার পোস্টার দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নিলাম।”
অন্যদিকে এই ওয়ার্ডের বাম প্রার্থী শোভনলাল সেনগুপ্ত বলেন, খুব অল্প সময়ে নির্বাচন হওয়ার জন্য এই পদ্ধতি বেছে নেওয়া হয়েছে। আর কোভিড পরিস্থিতিতে যখন মাইক বাজিয়ে, মিছিল করে প্রচার সম্ভব হচ্ছে না, সেখানে এই দেওয়ালে ফ্লেক্স খুব সহজেই ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবে।
আরও পড়ুন: Chandannagar Municipal Election: ফরাসডাঙায় ভোটের আগে ফরাসিদের স্মারক গড় নিয়ে জোর তরজা