G Kishan Reddy: রাজনৈতিক শৈলী ও সাংগঠনিক দক্ষতায় গোয়ায় বিজেপির হারা ম্যাচ জিতিয়ে এনেছেন জি কিষাণ রেড্ডি

TV9 Bangla Digital | Edited By: Soumya Saha

Mar 11, 2022 | 7:29 PM

Goa Assembly Election Result: ২০০২ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিজেপির যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি ছিলেন জি কিষাণ রেড্ডি। ২০০৪ সালে হিমায়তনগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তিনি প্রথমবার বিধায়ক হন। সেই জয়ের মাধ্যমেই অন্ধ্র প্রদেশে বিজেপির খাতা খুলেছিল।

G Kishan Reddy: রাজনৈতিক শৈলী ও সাংগঠনিক দক্ষতায় গোয়ায় বিজেপির হারা ম্যাচ জিতিয়ে এনেছেন জি কিষাণ রেড্ডি
জি কিষাণ রেড্ডির হাত ধরেই গোয়ায় বাজিমাৎ বিজেপির

Follow Us

পানাজি: গোয়া বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল (Goa Assembly Election Result 2022) এখন স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। বিজেপি সেখানে সরকার গঠনের জন্য তৈরি। বিভিন্ন বুথফেরত সমীক্ষাগুলিতে বিজেপির পরাজয়ের সম্ভাবনা দেখানো হলেও শেষ পর্যন্ত বাজিমাৎ করার পিছনে যাঁর অবদান অনস্বীকার্য, তিনি কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি, পর্যটন ও উত্তর পূর্ব উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি (G Kishan Reddy)। বিজেপি তাঁকে বিজেপির প্রচার কর্মসূচির কো-ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছিল এবং গোয়ায় ব্যাপক সাফল্য এনে দিয়েছেন তিনি। গোয়ায় বিজেপির সাফল্য এখন খবরের শিরোনামে। বুথ ফেরত সমীক্ষাগুলিতে ইঙ্গিত মিলছিল, গোয়ায় সরকার গড়তে পারে কংগ্রেস। তবে জি কিষাণ রেড্ডি শেষ পর্যন্ত গোয়ায় বিজেপির জয় নিশ্চিত করেছেন। সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিজেপির সামনে যাবতীয় বাধা কাটিয়ে জয়ের পথ সুগম করেছেন তিনি। মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির দুই জন বিধায়ক বিজেপিকে সমর্থন করার কথা বলেছেন। আর এর ফলেই গোয়ায় ফের একবার বিজেপির সরকার গঠন কার্যত নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে।

গোয়ায় যে প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া ঘিরে জল্পনা চলছিল, তাকে পাশ কাটিয়ে ৩৩ শতাংশ ভোট নিজেদের দখলে রাখার কৌশলই বিজেপির জয়ের অন্যতম বড় কারণ। আর এর জন্য অবশ্যই প্রশংসা প্রাপ্য গোয়ায় দলের কো-ইনচার্জ জি কিষাণ রেড্ডির। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গোয়ায় বিজেপির ইনচার্জ দেবেন্দ্র ফড়নবিস এবং কো-ইনচার্জ জি কিষাণ রেড্ডির অভিনব নির্বাচনী কৌশল গোয়ায় ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে এবং তাতেই গোয়ায় বিজেপিকে ম্যাজিক ফিগারের কাছে নিয়ে গিয়েছে। তাঁদের মূল কৌশলই ছিল, যে ৬৭ শতাংশ বিরোধী ভোট রয়েছে, তা ভাগাভাগি করে দেওয়া। বিশেষ করে গোয়ায় নির্বাচনী লড়াই ছিল বহুমুখী। তৃণমূল কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি এবং রিভলিউশনারি গোয়ানস পার্টি নির্বাচনী ময়দানে নেমেছিল।

বিরোধী নেতা এবং প্রাক্তন কংগ্রেস মন্ত্রী রমাকান্ত খিলাপের মতে, ভোট টানতে না পারা, সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং ভাল প্রার্থী দিতে না পারার কারণেই কংগ্রেস ক্ষমতায় আসতে পারেনি। রাজনীতির কারবারিদের অনেকেই মনে করছেন, জি কিষাণ রেড্ডি বুঝতে পেরেছিলেন যদি দক্ষিণ গোয়ায় কংগ্রেসের বিকল্প হিসেবে যদি গোয়ার মানুষ তৃণমূল কিংবা আম আদমি পার্টিকে ভোট দেয়, তাহলে বিগত দশ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা বিজেপির জন্য তা ভালই হবে।

গোয়ার ইনচার্জ দেবেন্দ্র ফড়নবিস এবং কো ইনচার্জ জি কিষাণ রেড্ডি এবং গোয়ার বিদায়ি মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের কোথায় এগিয়ে কোথায় দুর্বলতা রয়েছে, সবকিছু সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন এবং গোয়ার ভোটের ফলাফলে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। পরিকল্পনা করা থেকে শুরু করে তার বাস্তবায়ন, সব ক্ষেত্রেই জি কিষাণ রেড্ডি গোটা নির্বাচন জুড়ে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

গোয়ায় কাঙ্খিত ফল পাওয়ার পর, জি কিষাণ রেড্ডি টুইট করে গোয়াবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং গোয়াবাসীর সঙ্গে কাজ করার সুন্দর অভিজ্ঞতার কথাও তুলে ধরেন। প্রমোজ সাওয়ান্ত এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডির জুটি, সেই সঙ্গে দেবেন্দ্র ফড়নবিস বিজেপি বিরোধী ভোট কংগ্রেসের দিকে যাওয়া আটকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন আর এতেই বাজিমাৎ করেছে বিজেপি। বিজেপির মাইক্রো-লেভেল পরিকল্পনাই হারকে জয়ে পরিণত করতে সাহায্য করেছে। আর এই পরিকল্পনা থেকে শুরু করে তার বাস্তবায়ন, সবেতেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি।

জি কিষাণ রেড্ডির সাধারণ কর্মী থেকে মন্ত্রী হওয়ার সফর

জি কিষাণ রেড্ডি হলেন তেলাঙ্গানার প্রথম কোনও নেতা, যিনি তেলাঙ্গানা গঠনের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন। তাঁকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয় ২০১৯ সালে। পরবর্তী সময়ে তাঁকে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি, পর্যটন ও উত্তর পূর্ব উন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁর কঠোর পরিশ্রমী মনোভাব, আম জনতা এবং দলের হাই কমান্ডের ভরসা তাঁকে একজন সাধারণ কর্মী থেকে মন্ত্রী পর্যন্ত তুলে নিয়ে এসেছে। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা এবং তৃণমূল স্তর পর্যন্ত তাঁর পরিকল্পনার বাস্তবায়নের ক্ষমতার কথা মাথায় রেখে বিজেপি তাঁকে গোয়ায় নির্বাচনের কো-ইনচার্জের দায়িত্ব দেয়।

কঠিন চ্যালে়ঞ্জের মুখোমুখি হতে সদা প্রস্তুত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রেড্ডি

টুলস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করেছেন জি কিষাণ রেড্ডি। এরপর ২০০২ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিজেপির যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি ছিলেন। ২০০৪ সালে হিমায়তনগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তিনি প্রথমবার বিধায়ক হন। সেই জয়ের মাধ্যমেই অন্ধ্র প্রদেশে বিজেপির খাতা খুলেছিল। অন্ধ্র প্রদেশের বিজেপি সভাপতির পদ থেকে শুরু করে তেলাঙ্গানার সেকান্দ্রাবাদ নির্বাচনে জয় – ক্রমেই দলের ভরসার জায়গায় উঠে আসেন তিনি। সেই কারণেই, তাঁকে প্রায়শই দলের বিভিন্ন কঠিন পরিস্থিতিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মোদী সরকারের আমলে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজের মাধ্যমে নিজের পরিচয় বানিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে তিন তালাক, ৩৭০ ধারা, সাইবার অপরাধ পোর্টাল। করোনা মহামারীর সময়ও তিনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। ইউনেসকোর থেকে ‘বেস্ট চাইল্ড-ফ্রেন্ডলি লেজিসলেটর’ পুরস্কার এবং আমেরিকার থেকে লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন। তাঁর এই দক্ষতা বিজেপির গোয়ায় জয়ের অন্যতম প্রধান কারণ। দলের অন্দরে এবং দলের বাইরে, সব জায়গাতেই প্রশংসিত তিনি।

আরও পড়ুন : Anurag Thakur: অনুরাগ ঠাকুরের দক্ষ নেতৃত্বশৈলী অনুঘটকের মতো কাজ করেছে উত্তর প্রদেশের ‘মিশন বিজেপি’তে

Next Article