Howrah Municipal Election: হাইকোর্টে ভুল স্বীকার AG-র! হাওড়া-পুরভোট মামলায় নতুন বছরে পরবর্তী শুনানি

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Dec 30, 2021 | 2:58 PM

Howrah: গত শুক্রবার, হাইকোর্টে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, হাওড়া পুরসভার বিলে সই করে দিয়েছেন রাজ্যপাল।

Howrah Municipal Election: হাইকোর্টে ভুল স্বীকার AG-র! হাওড়া-পুরভোট মামলায় নতুন বছরে পরবর্তী শুনানি
হাওড়া ভোট বিতর্ক। ফাইল ছবি।

Follow Us

হাওড়া: অবিলম্বে হাওড়ার পুর নির্বাচন চেয়ে মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। সেই মামলার প্রথম শুনানি ছিল আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার। শুনানি শেষে কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিল, যেহেতু  এখনও রাজ্যপাল হাও়ড়া-বিলে সই করেননি, তাই ভোট নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন থাকছেই। হাওড়া-বিলে রাজ্যপালের সই ছাড়া পরবর্তী পদক্ষেপ করা যাবে না। পাশাপাশি, ভুল তথ্য পেশ করার কথা আদালতে স্বীকার করলেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (AG) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়।

ভুল স্বীকার অ্যাডভোকেট জেনারেলের

আদালত সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার বিচারপতি শম্পা সরকার ও বিচারপতি বিভাস রঞ্জন দে’র ডিভিশন বেঞ্চে পুরভোট-বিতর্কের প্রথম শুনানি হয়। বৃহস্পতিবার, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, রাজ্যপাল হাওড়া-বিলে সম্মতি দেননি। পাশাপাশি এও জানান, তিনি ভুল তথ্য পেশ করেছিলেন। রাজ্যপাল সই করেছিলেন বিলে এমনটাই জানিয়েছিলেন এজি। কিন্তু, রাজ্যপাল সেই সই করেননি। সেকথা আজ স্বীকার করে নেন অ্যাডভোকেট জেনারেল। কেন ভুল তথ্য পেশ তা সবিস্তারে হলফনামা দিয়েই গোটা বিষয়টি তিনি আদালতে পেশ করবেন। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে নতুন বছরে আগামী ৬ জানুয়ারি। সেদিন, প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মূল মামলাটির শুনানি।

রাজ্যে আগামী ২২ জানুয়ারি যে চারটি পৌরসভা নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে সেখান থেকে কেন বাদ গেল হাওড়ার নাম এই মর্মেই মামলা দায়ের করেছিলেন জনস্বার্থ মামলার অন্যতম মামলাকারী মৌসুমী রায়। পুর নির্বাচন সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করেন তিনি। দ্রুত সেই মামলার শুনানি চাওয়া হয় মামলাকারীর তরফে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি শম্পা সরকার ও বিচারপতি বিভাস রঞ্জন দে-র ডিভিশন বেঞ্চে মামলার প্রথম শুনানি হয়।

কেন এই মামলা? 

সোমবার নির্বাচন কমিশন যখন চারটি পুরনিগমের ভোট ঘোষণা করে, বালি হাওড়াকে বাদ রাখা হয়। সোমবার রাতেই পুরভোটের মামলাকারী মৌসুমী রায়ের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় জরুরিভিত্তিতে একটি ইমেল করেন প্রধান বিচারপতিকে। তিনি সোমবার রাতেই শুনানির আর্জি জানিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, যেখানে আদালতে ইতিমধ্যেই কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল ৫ টি পুরনিগমের নির্বাচন হবে, সেখানে আদালতকে জানানোর পরও কেন কমিশন চারটি পুরনিগমের নির্বাচন ঘোষণা করল? কেন সেই তালিকায় নেই হাওড়া পুরনিগমের নাম?

পাশাপাশি মামলাকারীর আরও বক্তব্য, আদালতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানিয়েছিলেন, যে হাওড়া এবং বালি সংক্রান্ত বিলে রাজ্যপাল সই করেছেন। যদিও রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন, তিনি এখনও হাওড়ার কোন বিলে সই করেননি। কারা এই বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন, সে নিয়ে তদন্তের দাবি তুলে মামলা দায়ের করেন মৌসুমী রায়।

প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ

যদিও প্রধান বিচারপতির পক্ষ থেকে রাতেই মামলাকারী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়কে জানিয়ে দেওয়া হয় রাতে জরুরিভিত্তিতে শুনানি সম্ভব নয়। তাঁকে সুনির্দিষ্টভাবে মঙ্গলবার মামলা দায়ের করতে বলা হয়। প্রধান বিচারপতি বলে দেন, মামলা দায়েরের পরই হাইকোর্ট বিষয়টি শুনবে। মঙ্গলবার সকালে মূল মামলাকারী মৌসুমী রায় মামলা দায়ের করেন।

বিতর্কের সূত্রপাত

সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করেন  রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস। মঙ্গলবার প্রকাশিত হয় বিজ্ঞপ্তি। শিলিগুড়ি, বিধাননগর, আসানসোল, চন্দননগরে ভোট হচ্ছে ২২ জানুয়ারি। কিন্তু সেই তালিকায় ছিল না হাওড়া পুরনিগমের নাম। কারণ বিল-বিতর্ক। গত শুক্রবার, হাইকোর্টে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, হাওড়া পুরসভার বিলে সই করে দিয়েছেন রাজ্যপাল। তাই হাওড়া পুরভোটে কোনও বাধা নেই। কিন্তু, শনিবার সকালেই টুইট করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। স্পষ্ট তিনি টুইটে জানান, হাওড়া পুরসভা সংক্রান্ত বিল এখনও তাঁর বিবেচনাধীন। পাশাপাশি এও জানান, হাওড়া-বিলে তিনি সই করেননি।

পরবর্তীতে উত্তরবঙ্গে সফরকালেও একই দাবি করেন ধনখড়। তিনি ষ্পষ্টই জানান, হাওড়া পুরবিল সংক্রান্ত কোনও বিলেই সই করেননি। এমনকী, হাওড়া পুরবিল সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য চেয়ে তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু, তার কোনও উত্তর আসেনি বলেই অভিযোগ করেন তিনি। সেই বিতর্কের জল গড়ায় অবশেষে নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত।

 কী এই হাওড়া-বিল ? 

হাওড়ার ভোট নিয়ে একটা প্রশ্ন ছিল প্রথম থেকে। কারণ, এতদিন হাওড়া পুরসভার অধীনেই ছিল বালি পুরসভা। বালি পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ড নিয়ে হাওড়ার মোট ওয়ার্ড ছিল ৬৬টি। গত ১২ নভেম্বর বালিকে আলাদা করার সিদ্ধান্ত হয়। সেই মতো সদ্য অনুষ্ঠিত বিধানসভা অধিবেশনে বিল আনা হয়। ‘মাইক্রো লেভেলে নাগরিক পরিষেবা’ পৌঁছে দিতেই এই সিদ্ধান্ত বলে রাজ্য সরকারের তরফে বলা হয়। কিন্তু বিল পাশ করানো হলেও রাজ্যপালের সই ছাড়া তা আইনে পরিণত করা সম্ভব নয়।

এদিকে সংশোধনী বিল পাশ হলে তার পরে আইন করে বালি পুরসভা আলাদা হবে। বালিকে ধরে হাওড়ায় মোট ৬৬টি ওয়ার্ড। বালি আলাদা হলে সেখান থেকে ১৬টি ওয়ার্ড বাদ যাবে। বাকি ৫০টি ওয়ার্ড নিয়ে হাওড়া পুরসভা হবে। কিন্তু যখন ভোটের কথা বলা হয়েছিল তখন হাওড়া ৬৬টি ওয়ার্ডের কথা বলা ছিল। এ নিয়েও একটা জটিলতা থেকেই গিয়েছে। পরববর্তীতে হাওড়া বিল-বিতর্কে রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাতে হাওড়া ভোট ভাগ্য কার্যত ঝুলেই থাকে।

আরও পড়ুন: Asansol Municipal Election: ‘পার্টি পার্টির মতোই চলবে, কারোর দিকে তাকাবে না’

 

Next Article