Karnataka Election 2023: কেন দাক্ষিণাত্যে থমকে গেল বিজেপির অশ্বমেধের ঘোড়া?

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

May 13, 2023 | 11:08 PM

Karnataka Election 2023: একের পর এক নির্বাচনে একের পর এক জয়। কিন্তু, এই জয় রথ থমকে গেল কর্নাটকে। বিজেপির এই অবাক করা পরাজয়ের কারণ কী?

Karnataka Election 2023: কেন দাক্ষিণাত্যে থমকে গেল বিজেপির অশ্বমেধের ঘোড়া?
বোম্মাইয়ের দুর্বল নেতৃত্ব ডোবাল বিজেপিকে

Follow Us

বেঙ্গালুরু: দীর্ঘদিন বাদে জয়ের আনন্দে মাতল কংগ্রেস। কর্নাটকের বিধানসভা নির্বাচন ২০২৩-এ বিজেপিকে সম্পূর্ণ পর্যুদস্ত করেছে তারা। নরেন্দ্র মোদী-সহ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব একটানা প্রচার চালিয়েছিলেন কর্নাটকে। কিন্তু, মোদী ম্যাজিকও এদিন ফিকে হয়ে গিয়েছে। নির্বাচনের আগেই জনমত সমীক্ষা এবং বুথ ফেরত সমীক্ষাগুলিতে কংগ্রেসের জয়ের আভাস পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু, বিজেপি যে কোনওরকম প্রতিরোধই গড়তে পারবে না, তা সম্ভবত অতি বড় কংগ্রেস সমর্থকও ভাবতে পারেননি। কিন্তু, হঠাৎ বিজেপির অশ্বমেধের ঘোড়ার দৌড় থেমে গেল কেন? রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বেশ কিছু কারণ উল্লেখ করেছেন।

বিএস ইয়েদুরাপ্পা ফ্যাক্টর

দক্ষিণী রাজ্যে বিজেপির মুখ ছিলেন ইয়েদুরাপ্পা। বস্তুত, কর্নাটকে একেবারে গোড়া থেকে সংগঠন গড়ে তুলেছেন তিনি। তাঁর জন্যই ১৯৮৯ সালের পর লিঙ্গায়ত সম্প্রদায় কংগ্রেস থেকে বিজেপির দিকে ঝুঁকেছিল। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের মোকাবিলা করতে বাসবরাজ বোম্মাইকে নতুন মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইয়েদুরাপ্পাকে সরিয়ে বোম্মাইকে আনা ছিল বিজেপির প্রথম ভুল।

লিঙ্গায়ত ফ্যাক্টর

কর্নাটকে বিজেপির মূল শক্তি লিঙ্গায়ত ভোটব্যাঙ্ক। ইয়েদুরাপ্পাকে সরিয়ে দেওয়াটা লিঙ্গায়ত সম্প্রদায় ভালভাবে নেয়নি। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেত্তরের বাদ পড়াও লিঙ্গায়তদের অসন্তোষকে আরও বাড়িয়ে দেয়। আরেক লিঙ্গায়ত নেতা, প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্মণ সাভাড়িকেও টিকিট দেওয়া হয়নি। আসলে কর্ণাটকে লিঙ্গায়ত নির্ভরতা কাটাতে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু, বিজেপির এই পদক্ষেপ কার্যক্ষেত্রে বুমেরাং হয়ে গিয়েছে।

হিজাব নিষিদ্ধ, পিএফআই-এর বিরুদ্ধে ধরপাকড়

হিজাব নিষিদ্ধ করা এবং পিএফআই-এর বিরুদ্ধে ধরপাকড় ছিলই। নির্বাচনের ঠিক মুখে, বজরংবলী নিয়ে বিজেপি নেতাদের মন্তব্যে মুসলিম ভোট আরও বেশি করে কংগ্রেসের পক্ষে সংহত হয়।

বাসবরাজ বোম্মাইয়ের দুর্বল নেতৃত্ব

বাসবরাজ বোম্মাইও, বিএসওয়াই-এর মতোই লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের নেতা। তবে, ইয়েদুরাপ্পার মতো জনপ্রিয়তা নেই তাঁর। কর্ণাটকের মতো অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী রাজ্যের উন্নয়নের জন্য, একজন শক্তিশালী নেতার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বোম্মাইয়ের নেতৃত্ব ছিল দুর্বল। লিঙ্গায়তদের আশ্বস্ত করার জন্য বোম্মাইকে নিয়োগ করেছিল বিজেপি, কিন্তু তা কাজে আসেনি।

প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা

কর্ণাটক নির্বাচনে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতাও বিজেপির বড় ক্ষতি করেছে। রাজ্যের মানুষ পরিবর্তন চেয়েছিল। রাজ্য সরকারের দুর্নীতি নিয়ে বারবার সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিজেপিও বিরোধীদের দুর্নীতির অভিযোগের কোনও পাল্টা জবাব দিতে পারেনি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের পেসিএম প্রচার দারুণ কাজে এসেছে।

অন্তর্দ্বন্দ্ব

আপতভাবে রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্ব এককাট্টা থাকলেও, তলায় তলায় রাজ্য বিজেপিতে বিভিন্ন উপদলের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব ছিল। ভোটের আগে টিকিট না পেয়ে জগদীশ শেত্তর-সহ বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতা দল বদল করেন। দলের টিকিট না পেতেই দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছিল। উল্টোদিকে দীর্ঘদিন পর, তেল দেওয়া যন্ত্রের মতো মসৃণভাবে লড়াই করেছে কংগ্রেস।

শিবকুমার-সিদ্দারামাইয়া জুটি

কংগ্রেসের নেতৃত্বে ছিলেন ডিকে শিবকুমার এবং সিদ্দারামাইয়ার মতো দুই শক্তিশালী নেতা। প্রতিদ্বন্দ্বী বোম্মাইয়ের থেকে ধারে ভারে দুজনেই অনেক এগিয়ে ছিলেন। ভোটের আগে যে সমস্ত সমীক্ষাগুলি হয়েছিল, তাতেও মানুষ সাফ জানিয়েছিলেন পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁরা সিদ্দারামাইয়াকে দেখতে চান, বোম্মাইকে নয়।

Next Article