কলকাতা: পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে পথে নাম বাম ও কংগ্রেস। সোমবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় তারা। রবিবার কলকাতার পুরভোট হয়। এই ভোট ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বাম, কংগ্রেসের দাবি, যেভাবে ভোট হয়েছে তা আসলে ভোট-সন্ত্রাসের নামান্তর। এই ভোট বাতিল করার দাবিতেই এদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় বাম ও কংগ্রেসের লোকজন।
এদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে বসে পড়ে তারা। বামেরা একটি মিছিল করে এদিন কমিশনের দফতরের সামনে গিয়ে হাজির হয়। দু’ দলের তরফেই হাতে পতাকা, ব্যানার ছিল। বাম, কংগ্রেসের দাবি, রবিবার যে ভোট হল তা কার্যত প্রহসন। তাই সেই নির্বাচন বাতিল করে নতুনভাবে ভোট করাতে হবে। একই সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের অপসারণেরও দাবি তোলে তারা।
বামেদের অভিযোগ, তাদের আমলে কীভাবে ভোট হোত আর বর্তমান সরকারের আমলে কীভাবে ভোট হচ্ছে তা সকলেই দেখছেন। বামেদের দাবি, ১৯টি ওয়ার্ড-সহ বেশ কিছু বুথে পুনর্নির্বাচন করতে হবে। এদিন প্রায় তিন ঘণ্টা পর রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতর থেকে বেরিয়ে আসে বামেরা। ফের ভোটের দাবি করে তারা। একই সঙ্গে তারা মঙ্গলবার গণনায় যাতে কোনও রকম গোলমাল না হয় তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে। বিক্ষোভ চললেও গণনাতে অংশ নেবে বামেরা।
কংগ্রেসের তরফে এদিন দাবি করা হয়, মৃত ভোটাররাও ভোট দিয়েছে রবিবার। সবথেকে বড় কথা নির্বাচন কমিশনের প্রশাসনিক যে তালিকা ছিল, তাতে যে ফোন নম্বর ছিল কেউ ধরেইনি। ১০০টির বেশি অভিযোগ করা হয়েছে। কোনও কাজ করেনি। গোটা রাজ্যের মানুষ তা দেখেছে। তারাও নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগের দাবি করে।
অন্যদিকে কলকাতায় পুরভোটে অশান্তির আঁচ পৌঁছেছে শিলিগুড়িতেও। কলকাতা পুরভোটে ভোট লুঠের অভিযোগ তুলে মিছিল করে বামেরা। কলকাতার ফের ভোট করানোর দাবিও তোলে তারা। যে মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “রবিবার তৃণমূল কংগ্রেস কলকাতার ভোটকে প্রহসনে পরিণত করেছে। তারই প্রতিবাদে এই মিছিল। যেভাবে সরকারি মদতে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের মদতে, পুলিশের মদতে এবং স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে যা রবিবার করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে ধিক্কার জানাতে আমরা পথে নেমেছি। এই সরকারকে ধিক্কার। আর এই নির্বাচন কমিশন তো একটা হাতের পুতুল। এদের ধিক্কার জানাতেই শিলিগুড়ির মানুষ আজ রাস্তায়।”
অশোকবাবু বলেন, সরকার, রাজ্য নির্বাচন কমিশন বলছে ভোট নাকি শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এর থেকে হাসির আর কোনও কথাই হতে পারে না। সবাই দেখেছে কী হয়েছে রবিবার। সামনে শিলিগুড়িতেও পুরভোট। শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়রের হুঁশিয়ারি, “শিলিগুড়িকে আমরা কলকাতা হতে দেব না। ২০১৫ সালে আমরা মানুষকে আবেদন করেছিলাম ভোট লুঠ হলে রুখবেন। রুখেওছিলেন তাঁরা। আমরা জয়ী হয়েছিলাম। এবারও আমরা একই কথা বলছি।”