গুয়াহাটি: নির্বাচনের দিন ঘোষণার আগে থেকেই শুরু হয়েছিল দলবদলের হিড়িক। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা শুরু হতেই সেই প্রবণতা আরও বেড়েছে। ‘ঘোড়া কেনা-বেচা’র এই প্রথা রুখতেই এবার অভিনব পদক্ষেপ গ্রহণ করছে বিজেপি (BJP) ও কংগ্রেস (Congress) দল। মণিপুরে দুই দলের তরফেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, দলের সমস্ত প্রার্থী ও কর্মীদের শপথ (Oath) নিতে হবে যে তারা আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর দল বদল করবেন না।
মণিপুর প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে গোয়ার অনুকরণেই একটি অগ্নিকুণ্ড জ্বালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যেখানে দলের সমস্ত প্রার্থীদের শপথ নিতে হবে যে তারা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরও দলের অনুগতই থাকবেন। কীভাবে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়েজন করা হবে, তা নিয়েই বর্তমানে চিন্তাভাবনা করছে কংগ্রেস। একইভাবে বিজেপির তরফেও দলের সমস্ত কর্মীদের “সহযোগিতার চুক্তি” স্বাক্ষর করানো হবে, যেখানে স্পষ্টভাবে দল বদল নিয়ে হুঁশিয়ারি দেওয়া থাকবে।
মণিপুরে ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস একক সংখ্য়াগরিষ্ঠতা লাভ করেছিল কংগ্রেস, মোট ২৮ জন বিধায়ক তাদের দলেরই ছিল। কিন্তু বিগত ৫ বছরেই ১৬ জন বিধায়ক দল বদলে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। অন্যদিকে, বিজেপিতে সমস্য়া আবার অন্য। ৬০ আসনের বিধানসভায় বিজেপির কাছে শক্তিশালী প্রার্থী মাত্র হাতে গোনা ৩-৪ জন। এই পরিস্থিতিতে কেউ যাতে দল বদব না করে, তা নিশ্চিত করতে দলের তরফে একাধিক বৈঠক করা হয়েছে, যেখানে “নরমে-গরমে” প্রার্থীদের সহযোগিতা করা ও প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর দল ছেড়ে না যাওয়ার বার্তাই দেওয়া হয়েছে।
মণিপুর কংগ্রেসের সহ সভাপতি তথা মুখপাত্র দেবব্রত সিং বলেন, “কংগ্রেসের তরফে মণিপুরের প্রার্থীদের দিয়ে শপথ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গোয়া থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা কোনও কর্মী বা প্রার্থীকে অন্য দলে যোগদান করা থেকে আটকাতে পারি না। তবে এই শপথ গ্রহণ তাদের উপর একটা বড় প্রভাব ফেলবে। এর আগেও দেখা গিয়েছে যে কংগ্রেসের একাধিক বিধায়ককেই বিজেপি কেড়ে নিয়েছে। আমরা নিশ্চিত যে এই শপথ গ্রহণ প্রার্থীদের দলবদল করা থেকে কিছুটা হলেও আটকাবে।”
তিনি আরও বলেন, “গতবারের নির্বাচনেই আমরা দেখেছি যে বহু কংগ্রেস প্রার্থী দল বদলে বিজেপিতে চলে গিয়েছেন এবং তাদের সরকার গঠনে সহায়তা করেছেন। সেই কারণেই আমরা প্রার্থীদের নৈতিকতার শপথ পাঠ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিধায়করা আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে তারা দলবদল করবেন না।”
বিজেপির তরফেও দলের সমস্ত প্রার্থীদের উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে। বিজেপির মুখপাত্র সিএইচ বিজয় বলেন, “আমরা সমস্ত প্রার্থীদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছি এবং সহযোগিতা ও দলের প্রতি আনুগত্যের চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। আমি নিজেও এই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছি। তবে এটি আইনগত বিষয়, বরং নৈতিকতার বিষয়।”
আরও পড়ুন: Rahul Gandhi’s Letter to Twitter CEO: ‘টোপ হবেন না’, ‘ফলোয়ার্স’ কমতেই টুইটার কর্তাকে চিঠি রাহুলের