ব্রিগেড মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া কটাক্ষ নরেন্দ্র মোদীর। বক্তব্যের প্রতি ছত্রে বুঝিয়ে দিলেন, এবার বাংলায় বিজেপির সরকার আসছে। তাঁর অভিযোগ, মমতা বাংলাকে যেভাবে বঞ্চিত করেছেন, সে কারণেই এখানকার মানুষ মুখ ফিরিয়েছেন। মোদীর কথায়, “বাংলা আপনাকে দিদির ভূমিকায় বেছেছিল। কিন্তু আপনি নিজেকে এক ভাইপোর পিসিতেই কেন সীমিত থেকে গেলেন? কেন এক ভাইপোর মোহ ছাড়তে পারলেন না? বাংলার লক্ষ লক্ষ ভাইপো ভাইঝিকে কেন দেখলেন না? আপনিও কংগ্রেসী সংস্কারকে ছাড়তে পারলেন না দিদি। “
‘আসল পরিবর্তনের’ ডাক দিয়ে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যাওয়ার আগে শুনিয়ে গেলেন, এবার মমতা-সরকারের পতন নিশ্চিত। বাংলায় বিজেপি আসছেই। বিকেল ৪টে নাগাদ রেসকোর্স থেকে কলকাতা বিমানবন্দরের পথে উড়ে যায় প্রধানমন্ত্রীর চপার।
বাংলার মানুষের ভরসা ভেঙেছেন মমতাদিদি। বাংলাকে অপমান করেছেন। ব্রিগেড সভায় এভাবেই সুর চড়ালেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, “বাংলা চায় উন্নতি। বাংলা চায় শান্তি। বাংলা চায় প্রগতিশীলতা। বাংলা চায় সোনার বাংলা। মানুষ আসল পরিবর্তন চায়। আমি আপনাদের আশ্বাস দিচ্ছি, নতুন করে বাংলায় গণতন্ত্রকে নতুন করে প্রতিষ্ঠা করা হবে। শুধু ভোটের সময় নয়। সবসময় বাংলার জন্য থাকব।”
Landed in Kolkata. On my way to the massive party rally. Looking forward to being among Party Karyakartas and the wonderful people of West Bengal.
— Narendra Modi (@narendramodi) March 7, 2021
ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিয়েই হুঙ্কার মিঠুন চক্রবর্তীর, “আমি জলঢোড়াও নই, বেলেবোরাও নই। জাত গোখরো। এক ছোবলে ছবি।” রবিবার বিজেপিতে যোগ দেন বাঙালির মহাগুরু। বক্তব্য রাখতে উঠে মঞ্চে একটাও রাজনীতির কথা বলেননি তিনি। তবে তাঁর প্রতিটা শব্দের আড়ালে প্রচ্ছন্ন ছিল, ‘হুঁশিয়ারি’, ছাড়বেন না সূচাগ্র মেদিনীও। বক্তব্য রাখতে উঠেই তিনি বলেন, “আজকের দিনটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো। একজন, যে কানাগলিতে জন্মেছে। সে সেখান থেকে এখানে এসেছে। মোদীর সঙ্গে এক মঞ্চে। আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম, গরীবদের জন্য কাজ করব। আমার মনে হচ্ছে সেই স্বপ্নটা আমি দেখতে পাচ্ছি। এটা হবেই। আমি বাঙালি। দাদার প্রতি ভরসা রাখবেন। দাদা কখনওই পালিয়ে যায়নি।”
কোনও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষই তৃণমূলে থাকতে পারেন না। দিনেশ ত্রিবেদী পারেননি। আজ মিঠুনদাও বিজেপিতে যোগ দিলেন। ব্রিগেডের মঞ্চে উঠে প্রথম থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের প্রতি আক্রমনাত্মক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, তৃণমূল বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক দল বলে। কিন্তু এই ভোটে কী দেখছেন, তৃণমূলের হয়ে প্রচার করছে পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকি। আরেক পীর সাহেব কিছু দিন আগে এসে বললেন কংগ্রেস, সিপিএমকে ভোট দিন। তুষ্টিকরণের রাজনীতিতে অভ্যস্তরাই বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক বলছে। একইসঙ্গে নন্দীগ্রামে জয় নিয়ে প্রত্যয়ী শুভেন্দু বলেন, মমতা যেন ‘প্রাক্তন বিধায়কের’ প্যাড ছাপিয়ে রাখেন।
বাংলার মাটি বহুত্ববাদের মাটি। বিভাজনকারীদের রুখে দিতে হবে। বিজেপি সমন্বয়ের জন্য কাজ করে। বিভাজনের জন্য নয়। এই ব্রিগেডও তাই জন-গণ-মন অধিনায়কের ব্রিগেড।
কলকাতায় পৌঁছলেন মোদী। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্রিগেড ময়দানে পৌঁছবেন তিনি। বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে যাবেন রেসকোর্সে। সেখান থেকে যাবে ব্রিগেড মঞ্চে।
সম্প্রতি হুগলির সাহাগঞ্জের মঞ্চ থেকে বিজেপিকে বিঁধেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরাকে কয়লাকাণ্ডে সিবিআইয়ের নোটিস প্রসঙ্গ তুলে বলেছিলেন, এখন বাড়ির বউদের কয়লা চোর সাজানো হচ্ছে। ব্রিগেডের ময়দানে তারই পাল্টা এক হাত নিলেন লকেট চট্টোপাধ্য়ায়। তাঁর কথায়, “বাংলার বউমাদের কয়লা চোরের সঙ্গে তুলনা করবেন না। যেই চোর ধরতে গিয়েছে এখন বলছে বাংলার বউমাদের চোর বলছে! নিজেদের ঝামেলা নিজেদের ভিতর রাখুন। বাংলার মেয়েদের বদনাম করবেন না।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন একজন মুখ্যমন্ত্রী যিনি পুরো বাংলার শিল্পটাকে শেষ করে দিয়েছেন। সরকারি চাকরির শূন্যপদও পূরণের ওনার কোনও ইচ্ছা নেই। পার্শ্বশিক্ষকদের কোনও সুবিধা নেই। এ রাজ্যে শুধুই কাটমানি। মা মাটি মানুষের সরকার এখন মানি মানি মানির সরকার। এ সরকারের শাসন শেষ না করা পর্যন্ত আমরা থামব না, বললেন অর্জুন সিং। তাঁর কথায়, “আমাদের মোদীজী বহিরাগত? আপনার বউমাকে কোথা থেকে নিয়ে এসেছেন? নন্দীগ্রামে আপনিও তো বহিরাগত।”
মঞ্চে পৌঁছলেন দীনেশ ত্রিবেদী। রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়ও।
নানান রঙিন মুহূর্ত বিজেপির ব্রিগেড ঘিরে। কারও পরণে মোদীর ছবি প্রিন্ট করা শার্ট। কারও টুপিতে আবার চমকদার গেরুয়ার ঝলকানি।
আরসিটিসি হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডের বাইরে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা। হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডের বাইরে শেফার্ড ডগ, কলকাতা পুলিশের স্পেশাল কমান্ডো মোতায়েন রয়েছে। আছে মাউন্টেন্ট পুলিশ। আরসিটিসি গ্রাউন্ড এই মুহূর্তে এসপিজির দখলে। পরিদর্শনে যান কলকাতা পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্রও।
জল্পনা শোনা গিয়েছিল নরেন্দ্র মোদীর ব্রিগেডে হাজির থাকতে পারেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়, অক্ষয় কুমার। কৈলাস বিজয়বর্গীয় সে জল্পনা উড়িয়ে জানিয়ে দিলেন, এদিন তাঁরা থাকছেন না।
বেলগাছিয়ায় বন্ধুর বাড়ি থেকে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের পথে রওনা দিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। ধুতি, পাঞ্জাবি পরে একেবারে ‘বাঙালি বাবু’ সেজে নরেন্দ্র মোদীর জনসভার দিকে রওনা দিলেন তিনি। গাড়ির একদম সামনের আসনে বসে মিঠুন। পিছনে স্লোগান উঠছে মহাগুরুর নামে।
সকাল থেকেই ব্রিগেডে যাওয়ার প্রস্তুতি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। বাসেই ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ মহকুমা এলাকা থেকে কলকাতার পথে রওনা দিয়েছেন তাঁরা। তবে অভিযোগ, ডায়মন্ড হারবার, ফলতা, কুলপি, রায়দিঘি, মন্দিরবাজার, কাকদ্বীপে বাস পেতে রীতিমত কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে বিজেপিকে। বিভিন্ন রুটের ইউনিয়নের কাছে বাস ভাড়ার জন্য আবেদন জানানো হলেও তা মেলেনি বলেই অভিযোগ বিজেপি নেতা-কর্মীদের।
ব্রিগেড সমাবেশের আগে গুলিবিদ্ধ হরিণঘাটার বিজেপি বুথ সভাপতি। কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। কে বা কারা এই ঘটনায় যুক্ত খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, হরিণঘাটার ১০ নম্বর বুথের সভাপতি সঞ্জয় দাস। শনিবার রাতে ব্রিগেড সংক্রান্ত প্রস্তুতি সেরে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সেই সময়ই দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুরুতর জখম হন তিনি। চিৎকার শুনে ছুটে আসেন এলাকার লোকজন। তাঁরাই উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। কে বা কারা এই ঘটনায় যুক্ত তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
শনিবার রাতেই কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন মিঠুন চক্রবর্তী। আজ রবিবার নমোর ব্রিগেড জনসভায় উপস্থিত থাকবেন তিনি। রাতেই মিঠুনের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। মোদীর মঞ্চে কি বিজেপিতে যোগ দেবেন মহাগুরু? প্রশ্নের উত্তরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমার এরকম কিছু জানা নেই। আমি শুনেছি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন উনি।” তবে জল্পনা কিন্তু জিইয়েই থাকবে আরও কয়েক ঘণ্টা।
নোনাপুকুর ট্রাম ডিপোর কাছে ব্রিগেডগামী বাস আটকানোর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা।
রবিবারের ব্রিগেড সমাবেশকে বিধানসভা ভোটের আগে দিশা ঠিক করে দেওয়ার ব্রিগেড বলে দাবি করেছেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিলীপ বলেন, “আগেও আমরা ব্রিগেড করেছি। ঐতিহাসিক ব্রিগেড করেছি। তবে এবারের ব্রিগেডটা বিধানসভা নির্বাচনের আগে দিশা ঠিক করে দেওয়ার ব্রিগেড। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কর্মীরা খুব উৎসাহের সঙ্গে কাজ করছেন। আজ ব্যাপক ভিড় হবে। এখান থেকেই পুরোদমে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে।”
ব্রিগেড মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া কটাক্ষ নরেন্দ্র মোদীর। বক্তব্যের প্রতি ছত্রে বুঝিয়ে দিলেন, এবার বাংলায় বিজেপির সরকার আসছে। তাঁর অভিযোগ, মমতা বাংলাকে যেভাবে বঞ্চিত করেছেন, সে কারণেই এখানকার মানুষ মুখ ফিরিয়েছেন। মোদীর কথায়, “বাংলা আপনাকে দিদির ভূমিকায় বেছেছিল। কিন্তু আপনি নিজেকে এক ভাইপোর পিসিতেই কেন সীমিত থেকে গেলেন? কেন এক ভাইপোর মোহ ছাড়তে পারলেন না? বাংলার লক্ষ লক্ষ ভাইপো ভাইঝিকে কেন দেখলেন না? আপনিও কংগ্রেসী সংস্কারকে ছাড়তে পারলেন না দিদি। “
‘আসল পরিবর্তনের’ ডাক দিয়ে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যাওয়ার আগে শুনিয়ে গেলেন, এবার মমতা-সরকারের পতন নিশ্চিত। বাংলায় বিজেপি আসছেই। বিকেল ৪টে নাগাদ রেসকোর্স থেকে কলকাতা বিমানবন্দরের পথে উড়ে যায় প্রধানমন্ত্রীর চপার।
বাংলার মানুষের ভরসা ভেঙেছেন মমতাদিদি। বাংলাকে অপমান করেছেন। ব্রিগেড সভায় এভাবেই সুর চড়ালেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, “বাংলা চায় উন্নতি। বাংলা চায় শান্তি। বাংলা চায় প্রগতিশীলতা। বাংলা চায় সোনার বাংলা। মানুষ আসল পরিবর্তন চায়। আমি আপনাদের আশ্বাস দিচ্ছি, নতুন করে বাংলায় গণতন্ত্রকে নতুন করে প্রতিষ্ঠা করা হবে। শুধু ভোটের সময় নয়। সবসময় বাংলার জন্য থাকব।”
Landed in Kolkata. On my way to the massive party rally. Looking forward to being among Party Karyakartas and the wonderful people of West Bengal.
— Narendra Modi (@narendramodi) March 7, 2021
ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিয়েই হুঙ্কার মিঠুন চক্রবর্তীর, “আমি জলঢোড়াও নই, বেলেবোরাও নই। জাত গোখরো। এক ছোবলে ছবি।” রবিবার বিজেপিতে যোগ দেন বাঙালির মহাগুরু। বক্তব্য রাখতে উঠে মঞ্চে একটাও রাজনীতির কথা বলেননি তিনি। তবে তাঁর প্রতিটা শব্দের আড়ালে প্রচ্ছন্ন ছিল, ‘হুঁশিয়ারি’, ছাড়বেন না সূচাগ্র মেদিনীও। বক্তব্য রাখতে উঠেই তিনি বলেন, “আজকের দিনটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো। একজন, যে কানাগলিতে জন্মেছে। সে সেখান থেকে এখানে এসেছে। মোদীর সঙ্গে এক মঞ্চে। আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম, গরীবদের জন্য কাজ করব। আমার মনে হচ্ছে সেই স্বপ্নটা আমি দেখতে পাচ্ছি। এটা হবেই। আমি বাঙালি। দাদার প্রতি ভরসা রাখবেন। দাদা কখনওই পালিয়ে যায়নি।”
কোনও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষই তৃণমূলে থাকতে পারেন না। দিনেশ ত্রিবেদী পারেননি। আজ মিঠুনদাও বিজেপিতে যোগ দিলেন। ব্রিগেডের মঞ্চে উঠে প্রথম থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের প্রতি আক্রমনাত্মক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, তৃণমূল বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক দল বলে। কিন্তু এই ভোটে কী দেখছেন, তৃণমূলের হয়ে প্রচার করছে পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকি। আরেক পীর সাহেব কিছু দিন আগে এসে বললেন কংগ্রেস, সিপিএমকে ভোট দিন। তুষ্টিকরণের রাজনীতিতে অভ্যস্তরাই বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক বলছে। একইসঙ্গে নন্দীগ্রামে জয় নিয়ে প্রত্যয়ী শুভেন্দু বলেন, মমতা যেন ‘প্রাক্তন বিধায়কের’ প্যাড ছাপিয়ে রাখেন।
বাংলার মাটি বহুত্ববাদের মাটি। বিভাজনকারীদের রুখে দিতে হবে। বিজেপি সমন্বয়ের জন্য কাজ করে। বিভাজনের জন্য নয়। এই ব্রিগেডও তাই জন-গণ-মন অধিনায়কের ব্রিগেড।
কলকাতায় পৌঁছলেন মোদী। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্রিগেড ময়দানে পৌঁছবেন তিনি। বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে যাবেন রেসকোর্সে। সেখান থেকে যাবে ব্রিগেড মঞ্চে।
সম্প্রতি হুগলির সাহাগঞ্জের মঞ্চ থেকে বিজেপিকে বিঁধেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরাকে কয়লাকাণ্ডে সিবিআইয়ের নোটিস প্রসঙ্গ তুলে বলেছিলেন, এখন বাড়ির বউদের কয়লা চোর সাজানো হচ্ছে। ব্রিগেডের ময়দানে তারই পাল্টা এক হাত নিলেন লকেট চট্টোপাধ্য়ায়। তাঁর কথায়, “বাংলার বউমাদের কয়লা চোরের সঙ্গে তুলনা করবেন না। যেই চোর ধরতে গিয়েছে এখন বলছে বাংলার বউমাদের চোর বলছে! নিজেদের ঝামেলা নিজেদের ভিতর রাখুন। বাংলার মেয়েদের বদনাম করবেন না।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন একজন মুখ্যমন্ত্রী যিনি পুরো বাংলার শিল্পটাকে শেষ করে দিয়েছেন। সরকারি চাকরির শূন্যপদও পূরণের ওনার কোনও ইচ্ছা নেই। পার্শ্বশিক্ষকদের কোনও সুবিধা নেই। এ রাজ্যে শুধুই কাটমানি। মা মাটি মানুষের সরকার এখন মানি মানি মানির সরকার। এ সরকারের শাসন শেষ না করা পর্যন্ত আমরা থামব না, বললেন অর্জুন সিং। তাঁর কথায়, “আমাদের মোদীজী বহিরাগত? আপনার বউমাকে কোথা থেকে নিয়ে এসেছেন? নন্দীগ্রামে আপনিও তো বহিরাগত।”
মঞ্চে পৌঁছলেন দীনেশ ত্রিবেদী। রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়ও।
নানান রঙিন মুহূর্ত বিজেপির ব্রিগেড ঘিরে। কারও পরণে মোদীর ছবি প্রিন্ট করা শার্ট। কারও টুপিতে আবার চমকদার গেরুয়ার ঝলকানি।
আরসিটিসি হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডের বাইরে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা। হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডের বাইরে শেফার্ড ডগ, কলকাতা পুলিশের স্পেশাল কমান্ডো মোতায়েন রয়েছে। আছে মাউন্টেন্ট পুলিশ। আরসিটিসি গ্রাউন্ড এই মুহূর্তে এসপিজির দখলে। পরিদর্শনে যান কলকাতা পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্রও।
জল্পনা শোনা গিয়েছিল নরেন্দ্র মোদীর ব্রিগেডে হাজির থাকতে পারেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়, অক্ষয় কুমার। কৈলাস বিজয়বর্গীয় সে জল্পনা উড়িয়ে জানিয়ে দিলেন, এদিন তাঁরা থাকছেন না।
বেলগাছিয়ায় বন্ধুর বাড়ি থেকে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের পথে রওনা দিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। ধুতি, পাঞ্জাবি পরে একেবারে ‘বাঙালি বাবু’ সেজে নরেন্দ্র মোদীর জনসভার দিকে রওনা দিলেন তিনি। গাড়ির একদম সামনের আসনে বসে মিঠুন। পিছনে স্লোগান উঠছে মহাগুরুর নামে।
সকাল থেকেই ব্রিগেডে যাওয়ার প্রস্তুতি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। বাসেই ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ মহকুমা এলাকা থেকে কলকাতার পথে রওনা দিয়েছেন তাঁরা। তবে অভিযোগ, ডায়মন্ড হারবার, ফলতা, কুলপি, রায়দিঘি, মন্দিরবাজার, কাকদ্বীপে বাস পেতে রীতিমত কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে বিজেপিকে। বিভিন্ন রুটের ইউনিয়নের কাছে বাস ভাড়ার জন্য আবেদন জানানো হলেও তা মেলেনি বলেই অভিযোগ বিজেপি নেতা-কর্মীদের।
ব্রিগেড সমাবেশের আগে গুলিবিদ্ধ হরিণঘাটার বিজেপি বুথ সভাপতি। কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। কে বা কারা এই ঘটনায় যুক্ত খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, হরিণঘাটার ১০ নম্বর বুথের সভাপতি সঞ্জয় দাস। শনিবার রাতে ব্রিগেড সংক্রান্ত প্রস্তুতি সেরে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সেই সময়ই দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুরুতর জখম হন তিনি। চিৎকার শুনে ছুটে আসেন এলাকার লোকজন। তাঁরাই উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। কে বা কারা এই ঘটনায় যুক্ত তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
শনিবার রাতেই কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন মিঠুন চক্রবর্তী। আজ রবিবার নমোর ব্রিগেড জনসভায় উপস্থিত থাকবেন তিনি। রাতেই মিঠুনের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। মোদীর মঞ্চে কি বিজেপিতে যোগ দেবেন মহাগুরু? প্রশ্নের উত্তরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমার এরকম কিছু জানা নেই। আমি শুনেছি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন উনি।” তবে জল্পনা কিন্তু জিইয়েই থাকবে আরও কয়েক ঘণ্টা।
নোনাপুকুর ট্রাম ডিপোর কাছে ব্রিগেডগামী বাস আটকানোর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা।
রবিবারের ব্রিগেড সমাবেশকে বিধানসভা ভোটের আগে দিশা ঠিক করে দেওয়ার ব্রিগেড বলে দাবি করেছেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিলীপ বলেন, “আগেও আমরা ব্রিগেড করেছি। ঐতিহাসিক ব্রিগেড করেছি। তবে এবারের ব্রিগেডটা বিধানসভা নির্বাচনের আগে দিশা ঠিক করে দেওয়ার ব্রিগেড। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কর্মীরা খুব উৎসাহের সঙ্গে কাজ করছেন। আজ ব্যাপক ভিড় হবে। এখান থেকেই পুরোদমে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে।”