Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

৩০-এর মধ্যে নাকি ২৬ পাবে, রসগোল্লা খাবে, রস ছাড়া!: মমতা

চণ্ডীপুরের সভা থেকে মমতা (Mamata Banerjee) বলেন, আমি একাই ১০১। আমার সঙ্গে দিল্লির এক হাজার নেতা লড়াই করতে এসেছে।।

৩০-এর মধ্যে নাকি ২৬ পাবে, রসগোল্লা খাবে, রস ছাড়া!: মমতা
চণ্ডীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 28, 2021 | 10:59 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: তারকা প্রার্থী সোহম চক্রবর্তীর প্রচারে চণ্ডীপুরে জনসভা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। ১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় পূর্ব মেদিনীপুরের ন’টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। এরমধ্যে রয়েছে চণ্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্রও। সেখানেই এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ টলিপাড়ার জনপ্রিয় তারকা সোহম। বিজেপি এখানে প্রার্থী করেছে পুলককান্তি গুড়িয়াকে।

এদিন বক্তব্যের শুরুতেই চণ্ডীগ্রামের সঙ্গে তাঁর পুরনো সম্পর্কের কথা তুলে ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নন্দীগ্রাম ভূমি আন্দোলনের সময় এই চণ্ডীপুরে আমাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রেখেছিল। বাজারের এখানে যে ব্রিজটা আছে, পাশে আমাদের পার্টি অফিস আছে, আমাকে আটকে রেখে দিয়েছিল নন্দীগ্রামে যেতে দেবে না বলে। যারা আজ বড় বড় কথা বলে তাদের কিন্তু সেদিন পাইনি। কাবুলরা এসে দেখা করেছিল। দিল্লির একজন নেতা আমাকে ফোন করে বলেছিলেন, আপ হঠ যাও! পেট্রোল বোমা মার দেগা তুমে। যারা মীরজাফর বড় বড় কথা বলছে সেদিন বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিল। আমি বলি না তাই।” চণ্ডীপুর থেকে মমতার বক্তব্য-

দিঘা-তমলুক রেললাইন ৯ মাসের মধ্যে করে দিয়েছি

দিঘা-তমলুক রেললাইন কে করে দিয়েছিল? মাত্র ৯ মাসের মধ্যে দিঘা-তমলুক রেললাইন করেছিলাম। ২০ বছর পড়েছিল। আমি করে দিয়েছিলাম। এত সহজ নয়। চণ্ডীপুর, নন্দীগ্রাম-১, নন্দকুমার ব্লকে ১২ লক্ষ মানুষের পানীয় জল পৌঁছে দিতে ১ হাজার ৪৮৮ কোটি টাকার প্রকল্প করছি। ৭০ হাজার গ্রামীণ মানুষের বাড়িতে জল যাবে। ১০ বছরে কী হয়নি? ১০ বছর তো এখনও হয়নি। মে মাসের পরে হবে। কোভিডেই তো এক বছর চলে গেল। ৯ বছরের মধ্যে ২টো পঞ্চায়েত ভোট, দুটো বিধানসভা ভোট, ২টো লোকসভা ভোট। চার পাঁচ বছর সময় পেয়েছি এত ভোট করে। রাস্তা, ব্রিজ, মেডিক্যাল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে।

নন্দীগ্রামে আছি, ভোটটা করে তারপর যাব

আমি ভোটটা করে তারপর যাব। আমাদের সরকার যা যা বলেছিল সব আমরা করেছি। যদি আপনারা আমাকে চান, তৃণমূল সরকারকে চান প্রার্থী সোহম কী অদিতি ভুলে যান, প্রার্থী মমতাদি। আমি এখন আছি। আমি আজ-কাল-পরশু-তরশু থাকব। আমি লক্ষ্য রাখব। আমাদের সরকার যা যা বলেছিল সব করেছি। স্বাস্থ্যসাথী, কৃষকবন্ধু, কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, যুবশ্রী সব কাজ আমরা করেছি। যদি আপনারা আমাকে চান, তৃণমূলকে চান প্রার্থী সোহম কী অদিতি ভুলে যান, প্রার্থী মমতাদি। কারণ, সরকারটা মমতাদিকে গড়তে হবে। তা না হলে কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী বন্ধ হয়ে যাবে।

৩০ মে ২৬ ঠো হামকো মিলেগা, বলোনা ৩০ মে ৩০ মিলেগা…

একটা মানুষের লজ্জা থাকা উচিৎ। ৩০টা সিটে ভোট হয়েছে। ৮০ শতাংশ যখন ভোট পড়েছে আমরা বলতে পারি মা-বোনেরা, শ্রমিক-কৃষক ভাইবোনেরা আমাদের পক্ষে ভোট দিয়েছে। কিন্তু কত তা কী মেশিনে ঢুকে বলব। বিজেপির এক নেতা আজ বলেছে ৩০ মে ২৬ ঠো হামকো মিলেগা। বলোনা ৩০ মে ৩০ মিলেগা। তব তো গোল্লা জাদা হোগা। রসগোল্লা খাবে, রস ছাড়া। ৩০-এর মধ্যে নাকি ২৬ পাবে। চারটে কি সিপিএম-কংগ্রেসের জন্য? আমি তো একটাও বলব না, মানুষ বলবেন। লোকসভায় যেখানে পিছিয়ে ছিলাম, মানুষ সেখানে আমাদের ভোট দিয়েছে। না হলে সেন্ট্রাল পুলিশ দিয়ে কাল কেন মেরেছেন কাঁথিতে? আমি জানি না কারা করিয়েছে।

এমনি ভোটে জেতার ক্ষমতা নেই, বাপ ব্যাটা জ্যেঠাদের গুন্ডামি

পরশু কন্টাই উত্তরে উত্তর প্রদেশের ৩০ জন বহিরাগত গুন্ডা বন্দুক নিয়ে এসেছিলয়। মেয়েরা ধরিয়ে দিয়েছে। কন্টাইতে করেছে কি করেনি? পরশুদিন রাতে কন্টাইতে এমনি ভোটে জেতার ক্ষমতা নেই, বাপ ব্যাটা জ্যেঠাদের গুন্ডামি করা। বন্দুক এনেছ, বুথ দখল করেছ, মহিলারা কাঁদতে কাঁদতে ফিরে গিয়েছে ভগবানপুরে। এ মায়ের অভিশাপ মনে রেখো, তুমি অন্ধকেও ভোট দিতে দাওনি, মেয়েদের টার্গেট করে।

২০১৬, ২০১৯ সালেও আমার পাড়ার ক্লাবগুলিতে তালা দিয়ে দিয়েছিল

দয়া করে মাস্কটা পরে যাবেন। সেন্ট্রাল পুলিশের কাজ নয়, তবু বলেছে মাস্ক পরে আসেননি চলে যান, ভোট দিতে দেবে না। কেউ চলে যাবেন না। আমিও যেটা বলছি আশা করি সবাই শুনছে। কে ক্ষমতা দিল এতটা? মেয়েদের ভোট দিতে না দিয়ে সেন্ট্রাল পুলিশ হুমকি দিচ্ছে? ২০১৬, ২০১৯ সালেও আমার পাড়ার ক্লাবগুলিতে তালা দিয়ে দিয়েছিল। একটা মেয়ের গায়ে লাঠি পড়লে হাতা খুন্তি বটি নিয়ে তেড়ে যাবেন।

পরশুদিন যে জ্যেঠার ছেলে টাকা ছড়াচ্ছিল

এজেন্টরা যদি দেখি পালিয়ে যাচ্ছ ভয়ে আমি ক্ষমা করব না। আমার গ্রাউন্ডে কিন্তু লোক আছে। আমি জানি কাঁথি ভগবানপুরে কার সঙ্গে কী আন্ডারস্ট্যান্ডিং আছে সব জানি। কে টাকা নিচ্ছে কার বাড়িতে। পরশুদিন যে জ্যেঠার ছেলে টাকা ছড়াচ্ছিল সবাই হাতেনাতে ধরেছে কাঁথিতে। এমনিতে জেতার ক্ষমতা নেই। তারপর ওকে সরানো হয়েছে। ওকে তো অ্যারেস্ট করা উচিৎ ছিল। তুমি ঘুষ দেবে? এত পেট্রোল পাম্প কোথা থেকে হল, এত ট্রলার কোথা থেকে হল? এত লঞ্চ কোথা থেকে হল? এত কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের কোটি কোটি টাকা কোথা থেকে এল? ভাবছ জানি না। আমার দোষ বলতে পারেন, একটু বেশি ভালবাসা দিয়েছি। আমি মেদিনীপুরকে ভালবাসা দিয়েছি। আমি তো বুঝতে পারিনি যে কালকেউটে বেরোবে। আমি গোখরো হবে ভাবিনি। ভেবেছি জলঢোরা হবে হয়তো। জলে একটু একটু সাঁতার কাটবে, পালিয়ে যাবে। এই মূর্তিটা দেখে বুঝলাম।

এ জেলায় গদ্দার পুষেছি

আমার কিন্তু চোখ ঘুরবে। কে কার সঙ্গে যোগাযোগ করছ, কী করে বেড়াচ্ছে সব নজর রাখছি। অন্য জায়গা হলে হতো না এটা। একমাত্র এই জেলায়। কারণ, এখানে বড় বড় গদ্দার পুষেছি আমরা। বড় বড় মীরজাফর পুষেছি আমরা। আমাদেরই দোষ।

আগামী ২ মে আরেকটা দোলযাত্রা হবে বাংলায়

বিজেপির হাতে স্টেনগান, জনগণ সাবধান। বহিরাগত গুন্ডাদের হাতে স্টেনগান, জনগণ সাবধান। মা বোনেরা খেলা হবে? ১ তারিখে একটা করে ভোট দেবেন। বিজেপিকে মাঠের বাইরে করে দেবেন। বোল্ড আউট। আগামী ২ মে আরেকটা দোলযাত্রা হবে বাংলায়। মাস্কটা না পরে যাবেন। না হলে ফিরিয়ে দেবে বদমায়েশগুলো। কিছু না থাকলে ওড়না, গামছা নিয়ে মাস্ক বানাবেন। কাপড় দিয়ে বেঁধে নেবেন। প্লিজ ভোটটা দেবেন। চলে আসতে বললে আসবেন না। যারা বাইরে আছে চলে আসতে বলুন।

আমি নন্দীগ্রামে যাচ্ছি, জানি না আর কী প্ল্যান করে রেখেছে

সিপিএমের হার্মাদরা এখন বিজেপি করে। আমাদের দু’ একজন গদ্দারও আছে। এরা ওস্তাদ বিজেপির। দিল্লির দালালি করলেই সব হবে ভাবছে। আমি সেন্ট্রাল ফোর্সকে সম্মান করি। কিন্তু তোমরা মেয়েদের হাত গায়ে তুলো না। কেউ ভয় দেখাতে এলে কষিয়ে দেবেন দু থাপ্পড়। আমি অন্যায় করলে আমাকেও দেবেন। আমি নন্দীগ্রামে যাচ্ছি, জানি না আর কী প্ল্যান করে রেখে দিয়েছে। আমাকে যদি খুনও করে ফেলে জানবেন, আমার যতক্ষণ প্রাণ থাকবে বিজেপি, সিপিএমকে ক্ষমা করব না।