Bengal Panchayat Election: কী বলছে শান্তনু-কুন্তলের বলাগড়? পঞ্চায়েতে কি এবার তাঁরাই বিরোধীদের তুরুপের তাস?

Ashique Insan | Edited By: সঞ্জয় পাইকার

Jul 04, 2023 | 10:45 PM

Bengal Panchayat Election: বিরোধীরা বলছেন, কৃষির জন্য বিখ্যাত বলাগড় এখন নাকি নিয়োগ দুর্নীতির জন্য শিরোনামে। কুন্তল ও শান্তনু উভয়েই এই এলাকার বাসিন্দা।

Bengal Panchayat Election: কী বলছে শান্তনু-কুন্তলের বলাগড়? পঞ্চায়েতে কি এবার তাঁরাই বিরোধীদের তুরুপের তাস?
কুন্তল-শান্তনুর বলাগড়
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

হুগলি: শাসক পক্ষের ‘উন্নয়ন’ অস্ত্রের জবাবে বিরোধীদের হাতিয়ার ‘দুর্নীতি’। গ্রামে রাস্তা, দুয়ারে জল নাকি মেধার ভিত্তিতে ‘স্বচ্ছ’ চাকরি, কোনটা বেছে নেবে বাংলা? কোন অস্ত্র বাজিমাৎ করবে, তা জানতে এখনও দিন সাতেক বাকি। তবে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে দুর্নীতির সঙ্গে সঙ্গে ফ্যাক্টর তো অভিযুক্তরাও। একসময় এলাকা কাঁপিয়ে বেড়ানো নেতারা আজ জেলে। তাঁদের এলাকায় কী ভাবছেন মানুষ? নজরে থাকছে হুগলির শ্রীপুর বলাগড় পঞ্চায়েত। না, এই পঞ্চায়েতটির নাম যে সবার জানা তা নয়, তবে দুটি নাম বললেই চিনে যাবেন যে কেউ- কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্য়োপাধ্যায়। তাঁরা দুজনেই এই এলাকার বাসিন্দা। সেই এলাকার খোঁজ নিল TV9 বাংলা।

আরও স্পষ্ট করে দেওয়া যাক। নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কুন্তল ও শান্তনু- দুজনেই ছিলেন তৃণমূলের যুবনেতা। জেলবন্দি হওয়ার পর তাঁদের দুজনকেই বহিষ্কার করা হয় তৃণমূল থেকে। তবে দল থেকে সরিয়ে দিলেই কি সব দায় ঝেড়ে ফেলা যায়? কেউ বলছেন বলাগড়ে দুর্নীতির আঁচে কিছুটা হলেও পুড়েছে শাসকের ঘর। আবার কেউ বলছেন, শান্তনু-কুন্তল কোনও ফ্যাক্টরই না। ‘দিদি’ নাকি আছেন সবার রান্নাঘরে।

জেনে রাখা দরকার, এই পঞ্চায়েতের মোট আসন সংখ্যা ২৫টি। ২০১৮ সালে এই পঞ্চায়েতে ১৪ টি আসন পেয়েছিল তৃণমূল, নির্দল ৫ টি, বিজেপি ও সিপিএম একটি করে আসন পেয়েছিল। এই পঞ্চায়েতের যিনি প্রধান ছিলেন সেই সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শান্তনুর খুড়তুতো ভাইয়ের স্ত্রী। আর বকলমে নাকি পঞ্চায়েতের সব ক্ষমতা ছিল শান্তনুর খুড়তুতো ভাই অতনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে।

বলাগড়ের বাসিন্দা বাপি দাস বলছেন, কষ্ট করে সন্তানকে মানুষ করবেন, কিন্তু চাকরি? সেখানে তো সেই দুর্নীতি! কী হবে সন্তানের ভবিষ্যৎ? দুর্নীতির দায় নিয়ে তৃণমূলকে বিদায় নিতে হবে বলেই মনে করছেন তিনি। আর এক বাসিন্দা অমিতাভ চক্রবর্তীর মতও এক। তিনি বলেন, শান্তনু-কুন্তল জেলে। প্রভাব তো ভালই পড়বে। তাঁর মতে, মানুষের মধ্যে একটা ভয় আছে বলে হয়ত কেউ কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না। তবে ভোট বাক্সে রায় যে শাসকের বিরুদ্ধে যাবে, তেমনই মনে করেন তিনি।

তবে বিরোধীরা কি এই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে জমি শক্ত করতে পারবে? তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বলাগড়ের বাসিন্দা শিশির চট্টোপাধ্য়ায়ের। তিনি বলেন, বিরোধীরা দুর্নীতি ইস্যুকে কাজে লাগাতে পারবে না, কারণ বিরোধীদের সাংগঠনিক ক্ষমতা অনেকটাই দুর্বল। বিজেপি বা সিপিএমের সঙ্গে মানুষের সংযোগও কমে এসেছে বলে মনে করেন তিনি। তাঁর দাবি, এতদিন পর্যন্ত পঞ্চায়েতে কী কাজ হচ্ছে, না হচ্ছে, তা জানা যেত না। এখন যেন সবটা সাধারণ মানুষের সামনে আনা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা গৌতম মোদক অবশ্য বলছেন, লড়াইটা তৃণমূলের সঙ্গে তৃণমূলেরই। ময়দানে আর কেউ নেই। তাঁর মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেকের রান্নাঘরে রয়েছে। আদতে যে কাজ করেছে, মানুষের উপকার করেছে, তাকে এলাকাবাসী ভোট দেবে বলে মনে করেন তিনি।

বিরোধীরা বলছেন, কৃষির জন্য বিখ্যাত বলাগড় এখন নাকি শিক্ষায় দুর্নীতির জন্য শিরোনামে। হুগলি জেলার এসএফআই-এর সম্পাদক অর্ণব দাস বলেন, রাজ্য জুড়ে যে ব্যাপক দুর্নীতি, তার পীঠস্থান বলাগড়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষ রায় দেবে বলেই তাঁর বিশ্বাস। তাঁর কথায়, ৮ জুলাই ‘বাপি বাড়ি যা’ শটে তৃণমূলকে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়ে মানুষের পঞ্চায়েত গড়ে উঠবে।

তবে তৃণমূলের বক্তব্য, দুর্নীতির কথা তারা মানে না। আর কুন্তল, শান্তনু? তাঁদের কোনও প্রভাবই পড়বে না পঞ্চায়েতে। বলাগড় ব্লক তৃণমূলের সহ-সভাপতি তপন দাস বলছেন, শিক্ষার দুর্নীতির বিষয়টা আদালতের বিচার্য। তাই আদালত রায় দিয়ে দোষী সাব্যস্ত করলে, তবেই তাকে দুর্নীতি বলা যায়। কুন্তল ঘোষ প্রসঙ্গে তপন বাবু বলেন, বলাগড় ব্লকে কোনওদিনই সেভাবে দল করেননি কুন্তল। মানুষ নাকি তাঁর কথা ভুলেই গিয়েছে। রইল শান্তনু। তৃণমূল নেতা জানাচ্ছেন, কিছু কর্মী শান্তনুর অনুগামী হিসেবে দাপিয়ে বেড়াতেন। এখন শান্তনু নেই, তাঁরা তৃণমূলের কথা মতোই চলছে। তাই তপন বাবুর মতে, এ সব ইস্যুতে বিরোধীরা কিছুই করতে পারবে না। বলাগড় ব্লকের সবকটি পঞ্চায়েতে তৃণমূল জয়লাভ করবে বলেই বিশ্বাস করেন তিনি।

Next Article