ইসলামপুর: আগেই হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন তাঁর লিস্টে থাকা কর্মীদের প্রার্থী না করা হলে সকলেই নির্দল থেকে দাঁড়াবে। অবশেষে তৃণমূলের (Trinamool Congress) টিকিট না পেয়ে নিজের অনুগামীদের নির্দল প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করে দিলেন ইসলামপুরের বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী। একইসঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) প্রতিও একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন। টিকিট পেতে দলকে টাকা দিতে হয়েছে, অভিযোগ করলেন খোদ বিধায়ক নিজেই। যদিও এতদিন এই অভিযোগ দলের বিক্ষুব্ধ ছোটখাটো নেতা-কর্মীদের মুখে, বিরোধীদের মুখে শোনা যাচ্ছিল। এবার একেবারে বিধায়কের মুখে সে কথা শোনা যাওয়ায় তা নিয়ে নতুন করে চাপানউতর শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে।
ইসলামপুরের বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী স্পষ্ট বলছেন, “এখান থেকে শুনছি নাকি ভাল অর্থ চলে গিয়েছে। ইসলামপুরে ৪ লাখ, ৫ লাখ করে টাকা দিতে হয়েছে।” এখানেই না থেমে দলনেত্রীর বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করিম চৌধুরীকে জলে ফেলে দিয়েছেন, সমুদ্রে ভাসিয়ে দিয়েছেন। মমতাদি আপনি নিজেকে সামলান। বাংলার শুধু নয়, দেশের নাম করা নেত্রী আপনি। সারা বিশ্ব আপনার নাম জানে। আপনার জন্য পশ্চিম বাংলার কত মানুষ কাঁদছে। দলকে বাম নীতিতে যেতে দেবেন না।”
দলে প্রাপ্য সম্মান পাচ্ছেন না, ক্ষোভে ফুঁসছেন করিম
করিমবাবুর স্পষ্ট দাবি, তিনি দলে তাঁর প্রাপ্য সম্মান পাচ্ছেন না। আর তাঁকে সাইড করে রেখেছেন খোদ মমতাই। এমনটা অভিযোগ তাঁর। অকপটে বলছেন, “সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়, গনিখান চৌধুরী, প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি, প্রণব মুখার্জি এরা সব স্টার ওয়াট, হাই লেভেলের নেতা। তাঁদের আর এখন কেউ নেই। শুধু হাই লেভেলের নেতা করিম চৌধুরী আছে। পশ্চিম বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে সাইড করে রেখেছে। অন্য ভাল পার্টি হলে আমাকে মাথায় করে রাখত। সব জায়গায় করিম চৌধুরীর নাম আছে। ন্যায্য কথা বলার জন্য আমি নিজেকে বিদ্রোহী বিধায়ক ঘোষণা করেছি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাকে বলতেই হবে।”
শীঘ্রই তাঁর পছন্দের নির্দল প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে নামতে চলেছেন তিনি। এদিন এ কথাও জানিয়েও দিয়েছেন। স্পষ্ট বলছেন, “আমার নির্দল প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারে যাব। নো তৃণমূল, নো কংগ্রেস, বিরোধী কোনও পার্টির প্রার্থীদের বিরুদ্ধেও বলব না, তৃণমূলের কোনও প্রার্থীর হয়েও প্রচারে যাব না।”
যদিও করিমবাবুর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন ইসলামপুরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি জাকির হোসেইন। তিনি বলেন, “দলের একজন বিধায়ক হিসাবে এরকম মন্তব্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আর উনি বলছেন আমার লোক টিকিট পায়নি। আমার তোমার বলে দলে কিছু হয় না। সবটাই তৃণমূলের হয়।”