২০১৫ সালে জন্ম হয় রানী মুখোপাধ্যায়ের একমাত্র কন্যা আদিরার। প্রযোজক আদিত্য চোপড়া এবং রানীর তারপর থেকে আর কোনও সন্তান দেখেনি পৃথিবীর মুখ। আদিরাই তাঁদের দুনিয়া। তবে সন্তান নষ্ট হওয়ার এক নির্মম যন্ত্রণার কথা রানী নিজে মুখেই জানিয়েছিলেন কিছুদিন আগে। কী ঘটেছিল তাঁর সঙ্গে?
২০২০ সালের কথা। গোটা দেশে চলছিল লকডাউন। বাড়ি থেকে বেরতে মানা করে দিয়েছে সরকার। চারদিকে করোনার আতঙ্ক। সেই সময় চোপড়া পরিবারে ঘটে যায় এক ভয়াবহ ঘটনা। যদিও তার ঠিক আগেই খুশির মহল ছিল গোটা বাড়িটায়। রানীর ছোট্ট মেয়ে আদিরাও জেনে গিয়েছিল তাঁর ভাই কিংবা বোন আস্তে চলেছে পৃথিবীতে। রানী তখন আসন্ন সন্তানের অপেক্ষায় দিন গুণছেন। তাঁর গর্ভে একটু-একটু করে বড় হচ্ছে ছোট্ট প্রাণ।
কিন্তু ভাগ্যের খেলা ছিল অন্যরকম। কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘটে যায় এক নির্মম ঘটনা। রানীর গর্ভেই নষ্ট হয়ে যায় তাঁর সন্তান। গর্ভপাত ঘটে রানী মুখোপাধ্যায়ের। সন্তান নষ্ট হওয়ার পর তীব্র যন্ত্রণায় ভুগছেন রানী-আদিত্য। সে যন্ত্রণার কথা কিছুতেই ভুলতে পারেন না অভিনেত্রী। হতাশায় ডুবে গিয়েছিলেন ভীষণরকম।
একবার এ ব্যাপারে রানী মুখোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, “আমি দ্বিতীয়বারের জন্য মা হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সেই সময় আমার গর্ভে বেড়ে উঠছিল আমার এবং আদিত্যর দ্বিতীয় সন্তান। কিন্তু কোনও কিছু ঠিক হওয়ার আগেই সব নষ্ট হয়ে যায়। গর্ভেই নষ্ট হয়ে যায় আমাদের দ্বিতীয় সন্তান। সেই যন্ত্রণা আজও আমি ভুলতে পারি না।”
এই যন্ত্রণা যখন পাচ্ছিলেন রানী, ঠিক তখনই তাঁর কাছে আসে ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’ ছবির অফার। নরওয়েতে কীভাবে এক বাঙালি দম্পতির থেকে কেড়ে নেওয়া হয় তাঁদের দুই সন্তানকে, সেই কাহিনি তুলে ধরার কথা চলছিল পর্দায়। রানী সেই মায়ের চরিত্রে অভিনয় করছিলেন, যাঁর থেকে নরওয়ে সরকার কেড়ে নেয় তাঁর দুই দুধের শিশুকে। অমন যন্ত্রণার মধ্যে এই চিত্রনাট্য পড়ে রানী বলেছিলেন, “এ তো খুবই হতাশাজনক কথা। সত্যি কি এমন কোনও দেশ আছে, যে মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিতে পারে তাঁর দুধের সন্তানদের”। বাস্তবে গর্ভপাতের যন্ত্রণাকে স্মরণ করেই ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন রানী। তাঁর অভিনয় আজও মানুষ ভুলতে পারে না।