২০২৪ সালের শেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন যে, উত্তর কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ‘স্টার থিয়েটার’-এর নাম পরিবর্তন করা হবে। এই থিয়েটারের নতুন নাম হবে ‘বিনোদিনী থিয়েটার’। গত ৩০ ডিসেম্বর সন্দেশখালির সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী এই নামকরণের কথা ঘোষণা করেন। যা থিয়েটারটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও সঙ্গতিপূর্ণ চরিত্রের সঙ্গে একেবারে মানানসই। তবে এই নামকরণ প্রক্রিয়া দীর্ঘদিনের একটি সংগ্রামের ফলাফল, যা চালিয়ে গেছেন অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র এবং তাঁর পরিচালিত ছবি বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান-এর পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়।
এটি ছিল তাঁদের দীর্ঘদিনের মানত, যে সময় থেকে তাঁরা বিনোদিনী চরিত্রে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। পরিচালকের ইচ্ছা ছিল, বিনোদিনী দাসী নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ‘স্টার থিয়েটার’-এর নাম পরিবর্তন করে তাকে ‘বিনোদিনী থিয়েটার’ রাখা হোক। এই নাম পরিবর্তনের জন্য অনেক লড়াই চালানোর পর, অবশেষে তাঁদের এই স্বপ্ন পূর্ণ হয়। এই সুখকর ঘটনার পর, রুক্মিণী এবং রামকমল দক্ষিণেশ্বরে মা ভবতারিনীর মন্দিরে পুজো দিতে যান। ২০১৯ সালে যখন তাঁরা বিনোদিনী নিয়ে সিনেমার পরিকল্পনা করেছিলেন, তখনই পরিচালকের এই মানত ছিল যে, বিনোদিনী দাসী যখন তাঁর সম্মান ফিরে পাওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেছিলেন, তখন ঠিক ততটি প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজো দেওয়া হবে। আর সেই মানতই পূর্ণ হওয়ার পর, রুক্মিণী তাঁর ইনস্টাগ্রামে পুজো দেওয়ার ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করেছেন, যেখানে ১৪১টি প্রদীপ জ্বালিয়ে পূজা দেওয়ার দৃশ্য দেখা যায়। তিনি লিখেছেন, “প্রায় ১৪০ বছরের অপেক্ষার অবসান। মানত করা হয়েছিল, যত বছর বিনোদিনী দাসী তাঁর যোগ্য সম্মানের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন ঠিক ততগুলো প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজো দেওয়া হবে। আজ সেই মনস্কামনা পূরণ হয়েছে তাই ১৪১টি প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজো দেওয়া হল।”
এছাড়া, বহু বছর আগে শোনা গিয়েছিল যে রুক্মিণী মৈত্র বিনোদিনী চরিত্রে বড় পর্দায় অভিনয় করতে চলেছেন, যা তার অভিনয় ক্যারিয়ারের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে দাঁড়ায়। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বিনোদিনী রূপে প্রথম লুক প্রকাশের পর সিনেমাপ্রেমীরা একেবারে চমকে যান। ২০২৩ সালের মার্চে ছবির শুটিং শেষ হওয়ার পর, ২০২৩ সালের দীপাবলিতে বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান ছবির টিজার প্রকাশিত হয়, যেখানে রুক্মিণী নটীর সাজে এক অনন্য আবেদন তৈরি করেছিলেন। বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান ছবিটি ২৩ জানুয়ারি ২০২৫-এ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে চলেছে, যা রুক্মিণী এবং রাম কমল-সহ সকলের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হতে চলেছে।