এযাবৎ সিপিআইএম ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন অভিনেতা জিতু কামাল। নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শ জাহির করতে দ্বিধা ছিল না কোনওদিনই। তবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুর দিনেই বড় ঘোষণা তাঁর, ‘আর সিপিআই রইলাম না’। কেন এই সিদ্ধান্ত? সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। বামপন্থী নয় তিনি বুদ্ধপন্থী– সরাসরি ঘোষণা তাঁর। সেই মানুষটাই যখন আর রইলেন না তখন দলের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেও মুক্ত জিতু।
তাঁর কথায়, “হিড়িক পড়েছে ছবি দিয়ে ব্যতিক্রমী পোস্ট করার,হিড়িক পড়েছে শ্রদ্ধার ঝুলি খুলে দিয়ে রাজপথে ফুল ঝরানোর,হিড়িক পড়েছে ওর সাথে জড়িত সমস্ত সুখ স্মৃতি উজাড় করার,হিড়িক পড়েছে কমরেড বলে একে অপরকে সম্মোধন জানানোর। আজ থেকে আর কমরেড বলে আমায় নাইবা ডাকলেন।আর যদি ডেকেও ফেলেন, দয়া করে একটি বারের জন্য অনুমতি চাইবেন।সিপিআইএম রইলাম না আর,বুদ্ধপন্থী বলে রইলো আমার পরিচয়। সুবিধা অসুবিধা কোন কিছুই কিন্তু নিইনি কোনওদিন। তাই পল্টিবাজ ধাপ্পাবাজ চিটিংবাজ ভাষাজ্ঞান শূন্য মন্তব্য নাইবা করলেন সিপিআইএম। আমার বন্ধু-আমার পথপ্রদর্শক-আমার ঈশ্বর বিদায়। বিদায় বন্ধু বিদায়…পরপারে স্লেট হাতে আবার যাব, পিছু পিছু তোমার।”
তবে জিতুর এই সিদ্ধান্তে উঠেছে নানা প্রশ্ন। একজন জিজ্ঞসা করেছেন, “পথপ্রদর্শক বলছেন অথচ শেষ দিন অবধি উনি যে দলকে গুরুত্ব দিতেন সেই দল ত্যাগ করবেন?” প্রশ্নে ঝাঁঝিয়ে উঠেছে জিতু। সেই ব্যক্তিকে কড়া ভাষায় তাঁর জবাব, “এটা আলিমুদ্দিনে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন ভাল করে, যে তার পথপ্রদর্শকরা আলিমুদ্দিনে বসেন কিনা বা সুযোগ পান কিনা। তার যে মান্যতা পাওয়ার কথা সেটা আলিমুদ্দিন দিতো কিনা! টুম্পা গান, লক্ষ টাকার গাড়ি, দামি জুতো- জামা- ঘড়ি পরে বুদ্ধপন্থী হওয়া যায় কিনা?” সরাসরি সিপিআইএমের নতুন প্রজন্মে কে খোঁচা তাঁর। এখানেই থামেননি জিতু। পোস্ট করেছেন এক হাওয়াই চটির ছবি, যে হাওয়াই চটি পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে আজ সকালেও পায়ে দিয়েছেন বুদ্ধবাবু। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ‘চটি’ নয়, বরং খোলা গলায় জিতুর ঘোষণা তাঁর শিরোধার্য বুদ্ধবাবুর চটিই। মন ভাল নেই পর্দার সত্যজিতের। চলে যেতে হয়– এই সত্য জেনেও সকাল থেকেই জিতুর প্রোফাইলে জুড়ে শুধুই বিষাদময়তা।