আমার প্রচুর গার্লফ্রেন্ড রয়েছে, তারা আমার রিয়েল লাইফ বেগম: প্লবিতা বড়ঠাকুর

স্বরলিপি ভট্টাচার্য |

Mar 07, 2021 | 2:28 PM

‘নেটফ্লিক্স’-এর আসন্ন ওয়েব সিরিজ় ‘বম্বে বেগমস্’-এ অভিনয় করেছেন বলি অভিনেত্রী প্লবিতা বড়ঠাকুর। আন্তর্জাতিক নারী দিবস, ৮ মার্চ মুক্তি পেতে চলেছে এই সিরিজ়। তার আগে প্লবিতা TV9 বাংলার মুখোমুখি।

আমার প্রচুর গার্লফ্রেন্ড রয়েছে, তারা আমার রিয়েল লাইফ বেগম: প্লবিতা বড়ঠাকুর
অভিনেত্রী প্লবিতা বড়ঠাকুর।

Follow Us

সিইও হওয়ার সব গুণই রয়েছে মেয়েটির মধ্যে। তবুও সিইও-র পোস্ট বারবার হাতছাড়া হয়ে যায় তার। সে অর্থাৎ ‘আয়েশা’। যাঁকে ইতিমধ্যেই ‘নেটফ্লিক্স’-এর আসন্ন ওয়েব সিরিজ় ‘বম্বে বেগমস্’-এর ট্রেলারে আপনি দেখেছেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস, ৮ মার্চ মুক্তি পেতে চলেছে এই সিরিজ়। তার আগে আয়েশা ওরফে অভিনেত্রী (Actress) প্লবিতা বড়ঠাকুর (Plabita Borthakur) TV9 বাংলার মুখোমুখি। কখনও সিরিজ়ের গল্প, কখনও বা মুম্বইয়ের স্ট্রাগলিং লাইফ… আড্ডায় উঠে এল নানা প্রসঙ্গ।

‘বম্বে বেগমস্’ আসলে নারীত্বের সেলিব্রেশন। আপনার কাছে নারী দিবসের অর্থ কী?

আমাদের অনেকেরই হয়তো মনে হয়, ইনফ্যাক্ট আমিও এক সময় ভাবতাম, বছরে একটা দিন নারী দিবস হিসেবে কেন পালিত হয়? প্রত্যেকটা দিনই তো নারীদের হওয়া উচিত। কিন্তু পরে আমার মনে হয়েছে, এমন অনেক মহিলা রয়েছেন, যাঁরা হয়তো আমার মতো এতটা নারীবাদী নন। কিন্তু তাঁরা যা করছেন, তা অমূল্য। ফলে তাঁদের কাজকে সম্মান জানানোর জন্য, তাঁদের উপস্থিতিকে নতুন করে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য, হয়তো কোনও একটা বিশেষ দিনের প্রয়োজন।

আরও পড়ুন, একটানা নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করে বিরক্ত হয়ে গিয়েছি: মধুরিমা বসাক

এই সিরিজের মুখ্য চরিত্রে আপনারা পাঁচ অভিনেত্রী। অভিনেত্রী হিসেবে প্রত্যেকেই অসাধারণ। শুটিংয়ে কেমন অভিজ্ঞতা হল আপনার?

আমরা পাঁচজন ‘বেগম’ একে-অপরের সঙ্গে খুব ভাল ভাবে মিশে গিয়েছিলাম। ওয়ার্কশপে আমরা একে অপরের নানাবিধ মানবিক অনুভূতিগুলো জানতে পেরেছি। ফলে অফস্ক্রিনেও আমাদের কেমিস্ট্রি দারুণ ছিল। সেটে গিয়ে যখন ইমোশনাল সিন করতাম বা কোনও গভীর সিন করতাম সেটা খুব সহজ হত। আর পরিবেশও খুব ভাল ছিল।

আপনার চরিত্রটি সিইও হওয়ার স্বপ্ন দেখে?

হ্যাঁ, আমার চরিত্রের নাম আয়েশা। একজন ব্যাঙ্কারের। সে সিইও হতে চায়।

‘আয়েশা’র স্ট্রাগল রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে বলিউডে প্লবিতার স্ট্রাগল কতটা?

দেখুন, স্ট্রাগল সব জায়গায় রয়েছে। তবে বাস্তবে আমি বলব, আমার চরিত্র আয়েশার যেমন স্ট্রাগল দেখানো হয়েছে, আমাকে কিন্তু ততটা স্ট্রাগল করতে হয়নি। আমার বোনেরা, আর বাবা-মা সব সময় পাশে থেকেছেন। ইন্ডাস্ট্রির স্ট্রাগলের থেকেও আমি তো বলব, মুম্বইতে একা মহিলার বাড়ি ভাড়া পাওয়াটাই বড় স্ট্রাগল। কেউ একা মহিলাকে বাড়ি ভাড়া দিতে চান না। বাড়িওয়ালাকে বলতে হয়, বাবা-মা আসবেন, থাকবেন। তবে বাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন, অভিষেক বচ্চনের কোন কোন সিক্রেট শেয়ার করল ইনায়ৎ?

আপনি তো অসমের মেয়ে। কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রয়েছে?

হ্যাঁ, আমার জন্ম অসমে। ছোটবেলায় কলকাতায় যেতাম। ওখানকার ফুচকা আমার খুব ভাল লাগে (হাসি)। এখন আর সেভাবে যাওয়া হয় না, খাওয়াও হয় না।

‘বম্বে বেগমস্’-এর দৃশ্যে প্লবিতা।

টলিউডে কাজ করার কোনও পরিকল্পনা করেছেন?

কিছুদিন আগে ‘হোমকামিং’ বলে একটা ছবি করলাম। বাংলা নয়, মাল্টিলিঙ্গুয়াল। কিন্তু কলকাতায় শুটিং করেছিলাম। পরিচালক সৌম্যজিৎ মজুমদার। এছাড়া বাংলা ছবি করব বলে, আলাদা কোনও প্ল্যান করিনি। আসলে কোনও কিছু নিয়েই কোনও প্ল্যান করি না আমি। তবে যদি ভাল চিত্রনাট্য আসে, কেন করব না?

অনেকেই বলেন, বলিউড ইন্ডাস্ট্রি পুরুষ শাসিত। আপনিও কি সেটাই মনে করেন? এই ইন্ডাস্ট্রিতে মহিলা হিসেবে কোনও সমস্যা হয়?

মেল ডমিনেটেড ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনেত্রীদের যে খুব অসুবিধে হয়, তেমনটা বলব না। আমি অন্তত প্র্যাকটিক্যাল। কোনও অসুবিধেয় পড়িনি। কিন্তু ক্যামেরার পিছনে যাঁরা কাজ করেন, ধরুন, সহকারী পরিচালক বা ক্যামেরা ডিপার্টমেন্ট… তাঁদের মধ্যে মহিলার সংখ্যা খুবই কম। তাঁদের অনেক রকম সমস্যা হতে পারে। আমার বোন সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করে। অনেক সময় এমনও হয়েছে, ও টিমের একমাত্র মহিলা সদস্য। ফলে শুটিংয়ে ওর জন্য আলাদা বাথরুমের ব্যবস্থা নেই। তবে এখন অনেকটা সমাধান হয়েছে। আগে আরও বেশি সমস্যা ছিল। আমাদের ‘বম্বে বেগমস’-এও অনেক মহিলা কাজ করেছেন। সেটে এত মহিলাদের দেখে সত্যিই ভাল লাগে।

আরও পড়ুন, বউ বলেছে, এতদিন তো আমি জানতামই, এবার গোটা পৃথিবী জানে ‘মকবুল’ কত অনুগত: সাজি চৌধুরি

ইন্ডাস্ট্রিতে ভাল চরিত্রে পেতে গেলে প্রতিভা নাকি যোগাযোগ, কোনটা প্রয়োজন হয়?

আমি তো বলব, ট্যালেন্ট এবং কঠিন পরিশ্রম। যে কোনও ক্ষেত্রেই পরিশ্রম করতেই হবে। ধরা যাক, বাকিরা পরিশ্রম করছে, আর একজন পরিশ্রম করছে না। তখন তো ভাল কাজও সে ডিজার্ভ করে না। আর কানেকশন থাকলে হয়তো একটা কাজ ভাল পাবেন। কিন্তু তারপর? টিকে থাকতে গেলে ট্যালেন্ট থাকতে হবে, সঙ্গে পরিশ্রম তো রয়েইছে।

প্লবিতার জন্ম অসমে। এখন পাকাপাকি ভাবে মুম্বইতে থাকেন তিনি।

আপনি ভাগ্যে বিশ্বাস করেন?

ভাগ্য তো বড় ব্যাপার। আমি এখনও পর্যন্ত যা-যা কাজ করেছি, সত্যিই ভাগ্যে না থাকলে হত না। কারণ আমি বিশ্বাস করি, আমার মতো এমনকি আমার থেকেও বেশি ট্যালেন্টেড অনেকেই রয়েছেন। কিন্তু সুযোগ আমি পেয়েছি। ফলে আমি তো ভাগ্যবান বটেই।

আরও পড়ুন, পুলিশের চরিত্রের কস্টিউম করা চ্যালেঞ্জিং, ‘দিল্লি ক্রাইম’-এর কস্টিউম ডিজাইনার স্মৃতি চৌহান

ইন্ডাস্ট্রির বাইরে থেকে কাস্টিং কাউচ নিয়ে প্রচুর কথা শোনা যায়। ইন্ডাস্ট্রির একজন সদস্য হিসেবে বিষয়টা কীভাবে দেখেন?

কাস্টিং কাউচের বিষয়টা আমি কখনও ফেস করিনি। আমার মনে হয়, আগে এই সমস্যা অনেক বেশি ছিল। আমার দিদি যখন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে এসেছিল, কাস্টিং কাউচের জন্য অনেক প্রজেক্ট ওকে ছেড়ে দিতে হয়েছিল। আমি প্রথম-প্রথম কোথাও অডিশন দিতে গেলে ওকে জিজ্ঞেস করেই যেতাম। কিন্তু কখনও কোনও সমস্যা হয়নি। আর এখন তো সোশ্যাল মিডিয়া এসে গিয়েছে। সব কিছুই অনেক ওপেন। ফলে এসব সমস্যা সত্যিই আর নেই হয়তো।

‘বম্বে বেগমস্’-এর শুটিংয়ে অম্রুতা সুভাষ এবং প্লবিতা। 

আপনার রিয়েল লাইফ বেগম কে?

বাস্তবে আমার জীবনে অনেক বেগম রয়েছে। যে তিনজনের কথা আলাদা করে বলব, তারা হল আমার মা আর দুই বোন। যাই-ই হয়ে যাক, ওরা আমাকে সাপোর্ট করবেই। তাছাড়া আমার প্রচুর গার্লফ্রেন্ড রয়েছে। তারা তো আমার রিয়েল লাইফ বেগম।

আপনার অনুরাগীরা কিন্তু লাভ লাইফ সম্পর্কে জানতে চান…

(হা হা হা) ওদের বলে দিন, শি ইজ টেকেন। এই প্রশ্নের উত্তরে এটাই বলতে পারি।

আরও পড়ুন, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের ‘ফিরকি’তে টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে: আর্যা

Next Article