‘আমি গিয়ে কারও ঘর ভেঙে…’, সম্পর্ক নিয়ে অকপট অপর্ণা সেন

Bhaswati Ghosh | Edited By: জয়িতা চন্দ্র

Jan 09, 2025 | 12:52 PM

Aparna Sen: সবটাই যে সমান তালে চাইলেই ব্যালান্স করা যায় তা তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন। আবার পর্দার সেই নায়িকাই মানুষের পাশে দাঁড়াতে নেমেছেন পথে। এবার তাঁরই দরজায় কড়া নাড়ল TV9 বাংলা। নিল তাঁর মনের খোঁজ-খবর।

আমি গিয়ে কারও ঘর ভেঙে..., সম্পর্ক নিয়ে অকপট অপর্ণা সেন

Follow Us

ভাস্বতী ঘোষ 

তিনি মিস ক্যালকাটা 1976। যাঁর স্ট্যাটেস্টিকস আজও রহস্য। কারণ তিনি যে অপর্ণা সেন। খ্যাতনামা চলচ্চিত্র পরিচালকের কন্যা থেকে অভিনেত্রী হিসেবে অবিশ্বাস্য জনপ্রিয়তা অর্জন করা। আবার সেখান থেকেই হঠাৎ সিনেমা পরিচালনা করতে এসে জাতীয়-আন্তর্জাতিক স্তরে তাক লাগানো স্বীকৃতি, এসবই যদি অপর্ণা সেনের জীবনের মূল ধারা হয়ে থাকে তাহলে, এরই সঙ্গে সমান তালে কুলুকুলু রবে বয়ে গিয়েছে ব্যক্তি জীবনের বিতর্কিত অন্তঃসলিলা ফল্গু ধারা। যেখানে কখনও লুকিয়ে এক মায়ের লড়াই, এক নারীর সত্তা, এক স্টারের স্ট্রাগেল। সবটাই যে সমান তালে চাইলেই ব্যালান্স করা যায় তা তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন। আবার পর্দার সেই নায়িকাই মানুষের পাশে দাঁড়াতে নেমেছেন পথে। এবার তাঁরই দরজায় কড়া নাড়ল TV9 বাংলা। নিল তাঁর মনের খোঁজ-খবর।

অপর্ণা সেন: এখনও আমাকে মিস ক্যালকাটা বলা হয়।

আপনি কি একেবারেই এই ধরনের অভিনয়গুলোতে আনন্দ পেতেন না?

কমেডি ছাড়া একেবারে নয়। সত্যি সত্যি ভাল লাগত না আমার। একটা-দুটো ছবি ভাল লেগেছে। ‘অসময়’ ছবিটা দেখতে বেশ ভাল লেগেছিল। ‘মেমসাহেব’ করতে মন্দ লাগেনি।

মেয়েদের বড় করতে অনিচ্ছা থাকার পরও কিছু ছবি করতে হয়েছে আপনাকে?

দুই মেয়েকেই বড় করতে আমায় রোজগার করতে হয়েছে। সেই জন্য থিয়েটারও করা। আমি তো বাণিজ্যিক নাটক করার কথা কখনও ভাবিনি। কিন্তু সেটা করেছিলাম ওই কারণে। সংসারটা যাতে সুষ্ঠভাবে চালানো যায়।

যদি সুচিত্রা সেন ও অপর্ণা সেনকে ধরা হয়, তবে সুচিত্রা সেন ইমেজ নিয়ে বিশেষ যত্নশীল ছিলেন, তার ঠিক উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে আপনি…

মিসেস সেন ছিলেন পা থেকে মাথা পর্যন্ত তারকা। স্টার। সেই স্টারের দর্শকের থেকে দূরত্বের বিষয়টা ছিল। আমি কোনওদিন স্টার ছিলাম না। যেটুকু আমার ‘স্টারত্ব’ সেটা বাই প্রোডাক্ট হিসেবে হয়ে গিয়েছে। আমি কোনওদিন স্টার হওয়ার চেষ্টা করিনি। আমি দর্শকদের থেকে দূরত্ব রেখে কোনওদিন কিছু করিনি। এই তো সেদিনও RG Kar-এ রাস্তায় চলে গেলাম। সকলের মধ্যে থেকেই তো প্রতিবাদ করলাম।

RG Kar প্রসঙ্গ উঠল বলে বলছি, এই যে আন্দোলন, যার এখনও কোনও ফল মিলল না, সেটা নিয়ে আপনি একাধিকবার মুখ খুলেছেন, সরকার বদল নিয়েও সওয়াল করেছেন, এই মুহূর্তে বিষয়টাকে কীভাবে দেখছেন আপনি?

এই মুহূর্তে ভাবনা সেভাবে কিছু নেই। কারণ এতটাই আমি বীতশ্রদ্ধ হয়ে গিয়েছি…। মানুষের স্মৃতি এত কম দিন স্থায়ী হয়! আবার সকলের নিজ-নিজ কাজ থাকে, দোষও দেওয়া যায় না। জীবনটা বাঁচতে হবে তো। সেটা আমার প্রথম থেকেই মনে হয়েছিল। সরকার পক্ষও সেটা বোধহয় বুঝতে পেরেছিল। কিছুদিন বাদে এরা ভুলে যাবে।

পরমা প্রসঙ্গে ফিরি, তথ্যচিত্রে আপনার ব্যক্তি জীবন কিংবা প্রেম বিষয়টাকে খুব একটা স্পর্শ করা হয়নি…

ওটা আমার ব্যক্তিগত, লোকের সামনে আসবে কেন? আমি মানুষটা ভীষণ প্রাইভেট। সেটা সুমন জানে। সেটা পাঁচজনের সামনে আলোচনা করার বিষয় নয়। এতদিনের একটা জীবন, এতকিছু করেছি, আমার জীবনটা কভার করতে এত কিছু লাগে, তার ওপর আবার প্রেম- জীবন! সুমন নিজেও কখনও বলেনি। আমিও চাইনি।

একাধিক বিয়ে, এটা নিয়ে কোনও সমস্যার মুখে আপনাকে পড়তে হয়েছে?

অবশ্যই সমস্যার মুখে পড়েছি। তাতে আমার মনে হয়েছে কিছু করার নেই। যেটা প্রচলিত নয়, তেমন কিছু করলে সমস্যার মুখে তো পড়তেই হবে। এমন তো নয়, আমি গিয়ে কারও ঘর ভেঙে কিছু করেছি। আমার একাধিক বিয়ে হয়েছিল। অন্যকিছু তো হয়নি।

আপনি যখন আপনার তথ্যচিত্রর মাধ্যমে জার্নিটা আরেকবার দেখলেন, তখন কোন অধ্যায়টা সবথেকে বেশি ভাল লাগল?

পূর্বে যেখানে-যেখানে শুট করেছি, আবার সেখানে সেখানে গেলাম। সেটা আমায় খুব আনন্দ দিচ্ছিল। তাঁদের সঙ্গে আবারও যোগাযোগ হল। ‘পারমিতার একদিন’ যাঁদের বাড়ি, ’36 চৌরঙ্গী লেনে’র বাড়িটায় যখন গেলাম, ওই সিঁড়ি…। নানা কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। আমার আত্মীয়, মেয়েরা, আমার স্বামী, কাছের বন্ধুবান্ধব, তাঁরা কী বললেন আমার সম্বন্ধে, সেটা জানার একটা কৌতূহল ছিল।

 

 

Next Article