‘ভেঙে পড়তে দেখিনি, নিভে যেতে দেখিনি’, ঋতুপর্ণার জন্মদিনে কলম ধরলেন অর্জুনের
টলিউডে বহুবছর ধরে রাজত্ব করছেন ঋতুপর্ণা, আজও তিনি পর্দায় তিনি দাপটের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছেন প্রতিটা প্রজন্মের সঙ্গে। এই দীর্ঘ পথে মান-অভিমানের বোঝা কম নয়, তবুও হাসি মুখে বারেবারে ক্যামেরার সামনে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে তাঁর মুখ। আর সেই স্মৃতিতে ফিরেই অর্জুন প্রশংসায় ভরালেন সোশ্যাল মিডিয়ার পাতা।

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, টলিপাড়ার জনপ্রিয় চর্চিত নায়িকা। তাঁর জন্মদিন বলে কথা। কাজের ব্যস্ততার মধ্যেই চলতে থাকে সেলিব্রেশন। থাকে বিশেষ আয়োজন। এদিন মধ্যরাত থেকেই শুভেচ্ছাবার্তায় ভরছে সোশ্যাল মিডিয়ার পাতা। কেউ কাছের বন্ধুকে শুভচ্ছা জানাচ্ছেন, কেউ আবার স্মৃতির পাতায় দিচ্ছেন উঁকি। আর এই বিশেষ দিনে ঋতুপর্ণাকে শুভেচ্ছা জানাতে ৩২ বছর পিছিয়ে গেলেন অভিনেতা অর্জুন চক্রবর্তী।
অনেকেই হয়তো জানেন না, ঋতুপর্ণার প্রথম ক্যামেরার সামনে কাজ এই অভিনেতার বিপরীতেই। ছবির নাম ‘৭২ দিন পর’। তবে সেই ছবি পর্দায় মুক্তি পায়নি। ঋতুপর্ণার জন্মদিনে এই প্রসঙ্গে কলম ধরলেন অর্জুন। সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলেন এক খোলা চিঠি। লিখলেন, “এই মেয়েটিকে আমি বহু বছর ধরে চিনি, চিনি বললে ভুল হবে, জানি। প্রায় ৩৫ বছর! …একটা কথা বলি বলি করে বলা হয়নি। যদিও ও আমার অনেক পরে আমাদের পেশার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, আমার থেকে বয়সে ছোট, আমার জুনিয়র, তবু বলতে কোন দ্বিধা নেই যে ওর কাছ থেকে আমার অনেক কিছু শেখার আছে। আমি আজ পর্যন্ত ওকে কারও ওপর রাগতে দেখিনি, কারও সম্পর্কে আজেবাজে কথা বলতে বা পর নিন্দা অথবা কুটকাচালি করে সময় নষ্ট (যা বাঙালী দের সব চাইতে প্রিয়) করতে দেখিনি। অত্যন্ত চাপ বা টেনশড পরিস্থিতি র মাঝেও ওকে ঘাবড়াতে বা ভেঙে পড়তে দেখিনি।”
অভিনেত্রীর এই বিষয়টাই মন জয় করেছিল অভিনেতার। কৌতূহলও তৈরি করেছিল তাঁর মনে। অর্জুন নাকি সেই প্রশ্ন একাধিকবার করেও বসেছিলেন। লিখলেনও সেই কথা। তাঁর কথায়, “দেখা হলেই ওকে আমি জিজ্ঞেস করি! “হ্যাঁরে কিছু টিপস দে না, কী করে পারিস”! ও নিজের পেশাগত জীবনের সমস্যা, নিজেকে এত বছর ধরে ধরে রাখা, এত বিরোধিতা, পরশ্রীকাতরতা, হিংসা, আবার নিজের সন্তান স্বামী সংসার সামলানো! এক লহমার জন্য ও ওকে নিভে যেতে দেখিনি।”
টলিউডে বহুবছর ধরে রাজত্ব করছেন ঋতুপর্ণা, আজও তিনি পর্দায় তিনি দাপটের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছেন প্রতিটা প্রজন্মের সঙ্গে। এই দীর্ঘ পথে মান-অভিমানের বোঝা কম নয়, তবুও হাসি মুখে বারেবারে ক্যামেরার সামনে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে তাঁর মুখ। আর সেই স্মৃতিতে ফিরেই অর্জুন প্রশংসায় ভরালেন সোশ্যাল মিডিয়ার পাতা। লিখলেন, “এত ভাল মনের সহকর্মী কোনদিন পাইনি বললে ভুল বলা হবে (আমি সৌভাগ্যবশত চিরকাল ই সবার প্রিয়), কিন্তু ও একটু আলাদা। আমি ওকে লক্ষ্য করি যখন ও আমার মেয়েকে জড়িয়ে ধরে, নীলাঞ্জনার সঙ্গে নিজের সুখ দুঃখের কথা বলে, আমায় কতটা সম্মান করে এবং তার মধ্যে কোনও ভেজাল বা কারসাজি নেই! …নিজের বিদ্যা বুদ্ধির জোরে ও নিজের যোগ্যতা অর্জন করেছে।”
অবশেষে লেখেন, এবার বলি;
“আজ তোর জন্মদিন, সুস্থ থাকিস, যেরম আছিস ঠিক সেইরম থাকবি বদলাস না। অবশ্য কারুর কথায় যে তুই কান দিস না, আমি জানি! এই ছবিটা দেয়ার একটা কারন আছে। এখানে আমি বলছি আর তুই শুনছিস। আমি বলছি যে আমার এখনো মনে পড়ে ধিরে ধিরে উত্থান ও নানা জীবনের জটিলতা পেরোনো একটি মেয়ের একা লড়ে যাওয়ার কথা। তোর এই যুদ্ধকে আমি কুর্নিশ জানাই। শুভ জন্মদিন রে। অর্জুন দা।”
