সম্প্রতি ইনস্টা (Instagram) দুনিয়ায় হাতেখড়ি হয়েছে বোল্ড রেট্রো কুইন জিনাত আমানের (Zenaat Aman)। নতুন ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রায়শই ভাগ করে নিচ্ছেন নিজের পুরনো ছবি। একসময় তাঁর বোল্ড রূপের ছটায় ঘুম উড়ে যেত পুরুষদের। এখন কপালে বয়সের ভাঁজ। তবে ভাঁজ পড়েনি চিন্তাধারায়। তিনি এখনও স্বাধীনচেতা। এবার দুই ছেলে আজান ও জাহানের সঙ্গে ছবি দিয়ে মাতৃত্বের অনুভূতি নেটিজ়েনদের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন অভিনেত্রী। সিঙ্গল মাদার (Single Mother) হিসেবে কীভাবে দুই সন্তানকে মানুষ করেছেন, সেই অভিজ্ঞতাও উঠে এল তাঁর কথায়। শুধু তাই-ই নয়, নতুন মায়েদের দিলেন মাতৃত্বের টিপস। কী বলছেন অভিনেত্রী?
দুই সন্তানের সঙ্গে একটি ছবি দিয়ে ‘দম মারো দম’-খ্যাত জিনাত লেখেন, “এই পৃথিবীতে মাতৃত্বের জন্য কোনও গাইডবুক নেই, যা আপনাকে সব বলে দেবে। মাতৃত্বের মতো সুন্দর, মধুর অনুভূতি আর হয় না। হ্য়াঁ, এই পুরো বিষয়টা চ্যালেঞ্জিংও বটে।” ৭১ বছর বয়সে ইনস্টাগ্রামে পা রাখার পর অভিনেত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় আদব-কায়দার সঙ্গে সড়গড় হচ্ছেন ধীরে-ধীরে। জিনাত সিঙ্গল মাদার, একা হাতেই মানুষ করেছেন দুই ছেলেকে। তাঁরা দু’জনেই এখন প্রতিষ্ঠিত। তবে এই গোটা জার্নিটা ততটাও সহজ ছিল না জিনাতের পক্ষে। তাঁর কাছে মাতৃত্বের সংজ্ঞা একমাত্র ভালবাসা। অফুরান ভালবাসার মাধ্যমেই ছেলেমেয়ে মানুষ করা সম্ভব বলে বিশ্বাস জিনাতের। অভিনেত্রীর কথায়, “জন্মলাভের পরই দুই সন্তান হয়ে ওঠে আমার কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। দুই সন্তানের সিঙ্গল মাদার হিসেবে নিজেকে দ্বিগুণ দায়িত্বশীল বলে মনে হতে শুরু করে আমার। সবকিছু ছাপিয়ে ওদের রক্ষা করা এবং দয়ালু ও ভালবাসার মানুষ হিসেবে দুই সন্তানকে গড়ে তোলাই হয়ে ওঠে আমার লক্ষ্য।” জিনাত তাঁর পোস্টে আরও যোগ করেন, “মাতৃত্বের ধারণাকে আমি বরাবরই দেখেছি নিঃশর্ত ভালবাসার দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে। আমি বিশ্বাস করি, যাঁরা মা-বাবা হতে চান, তাঁদের প্রত্যেকেই আমার মতোই ভাবেন।”
এরপর তাঁর পোস্টে জিনাত সন্তানধারণ এবং অভিভাবকত্ব সম্পর্কে আধুনিক জীবনযাত্রাকেই একপ্রকার প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছেন। জিনাত লিখেছেন, “আজকাল যখন শুনি অনেক মা-বাবা সন্তানের সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশন (এক্ষেত্রে লিঙ্গ অর্থাৎ gender ব্যতিরেকে যৌনতা বা sexualityকে গুরুত্ব দেওয়া), নিজের পছন্দমতো ছেলে-মেয়ের পার্টনার খুঁজতে চাওয়া অথবা নিজেদের কেরিয়ারের কারণে সন্তান-সন্ততিকে অস্বীকার করছেন, তখন খুব রাগ হয়। কষ্টও হয় খুব।” জিনাতের মতে, সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় যাই-ই হোক না কেন, তার ওরিয়েন্টেশনকে গুরুত্ব দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সে জীবনসঙ্গী বা সঙ্গিনীহিসেবে যাকে বেছে নিতে চায়, সেই ইচ্ছেকে অভিভাবকদের অবশ্যই মান্যতা দেওয়া উচিত।
বরাবর স্বাধীনচেতা তিনি। সন্তানদের ব্যাপারেও তিনি মনে করেন, ছেলেমেয়েরা যেমন, তাঁদের সেভাবেই মেনে নেওয়া উচিত। নতুন বাবা-মায়েদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই জার্নির প্রত্য়েকটা মুহূর্ত উপভোগ করুন। অযথা ছোট-ছোট বিষয়ে চাপ নিয়ে মাথা খারাপ করার কিচ্ছু নেই। ভালবাসা ও প্রয়োজনীয় শাসনটুকুর মাধ্য়মেই বড় করে তুলুন বাচ্চাদের। জিনাতের মতে, সন্তানদের নিখুঁত করে তোলার পরিবর্তে তাদের সাহায্য করা এবং সঠিক পথ দেখানোই মা-বাবার প্রাথমিক কর্তব্য।