পর্দায় তিনি গব্বর। শোলের প্রাণ কেন্দ্রই ছিলেন আমজাদ খান। যাঁর উপস্থিতিতেই গল্প পরতে-পরতে দর্শক মনে শিহরণ সৃষ্টি করেছিল। সেই দাপুটে স্টারের অন্দরমহলের কাহিনিটা ঠিক এর উল্টো। তখনও তিনি সিনে দুনিয়ায় পা রাখেননি। হয়ে গিয়েছিল বিয়ে। আমজাদ খান রীতিমত একটা সময় আর্থিক অনটনে ভুগেছিলেন। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে যখন হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছিলেন পকেটে ছিল না একটা টাকাও। প্রয়াত অভিনেতা আমজাদ খানের ছেলে স্মৃতিচারণ করে জানিয়েছিলেন তাঁর জন্মের কাহিনি। কঠিন পরিস্থিতি দিয়ে যখন দিন কাটাচ্ছিলেন তাঁর মা-বাবা।
শোলে ছবি যাঁর ভাগ্য ফিরিয়েছিল, সেই ভিলেন নিজের সন্তান জন্মের সময় ছিলেন অসহায়। আমজাদ খানের ছেলে শাদাব জানান, বরাবরই তাঁর বাবা তাঁকে লাকি মনে করতেন। কারণ একটাই। যেদিন শাদাব জন্মগ্রহণ করেন, ঠিক সেদিনই আমজাদ থাকেন কাছে এসেছিল শোলে ছবির প্রস্তাব। তিনি ঠিক সেই দিনই ছবির প্রস্তাব গ্রহণ করেন। এরপর আমজাদ খানকে কোনও দিন আর ফিরে তাকাতে হয়নি।
কিন্তু সেবার তিনি তাঁর স্ত্রী ও সন্তানকে বাড়ি ফেরাতে ছিলেন অপারক। বলিউড পরিচালক চেতন আনন্দ ৪০০ টাকা দিয়েছিলেন আমজাদ খানের হাতে, যা দিয়ে তিনি তাঁর সদ্যজাত ছেলেকে বাড়ি ফিরিয়ে এনেছিলেন। মাকে যখন বাবা বাড়ি ফেরাতে পারছিলেন না হাসপাতালের বিল মিটিয়ে, তখন রীতিমত মা কান্নায় ভেঙে পড়েন। বাবা লজ্জায় হাসপাতাল চত্বরেই আসা বন্ধ করে দিয়েছিলেন, কাউকে মুখ দেখাতে পারতেন না। সেই দিনের গল্প বাবার মুখেই শুনেছিলেন শাদাব। শোলের পর রমেশ সিপ্পি একাধিক ছবিতে আমজাদ খানকে নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছিলেন। যার পর থেকেই ভাগ্য পাল্টে যায়।
বলিউডে একের পর এক ছবি করা স্টারের কেরিয়ারের শুরুটা ছিল বেশ খানিকটা কঠিন। অভিনেয়র ইচ্ছে থাকলেও মেলেনি সুযোগ। সংসার টানতে নাজেহাল হয়েছিলেন আমজাদ খান। বাবার সেই কঠিন সময় জন্ম নেওয়া শাদাব তাই পরিবারের জন্য সত্যি লাকি বলে মনে করতেন সকলেই। বলিউডে পা রাখলেও খুব বেশি ছবিতে দেখা মেলেনি তাঁর। তবে ছোটবেলায় বাবা কোন কঠিন পরিস্থিতিতে তাঁর ঘরে এনেছিলেন, সেই কাহিনি আজও তাঁর মনে তরতাজা।