‘শোলে’– দুই অক্ষরের একটি শব্ধ। অথচ এই শব্দকে ঘিরেই আজও টানটান সিনেপ্রেমীদের উত্তেজনা। জড়িয়ে রয়েছে তাঁদের আবেগ। স্কুল পালিয়ে হলে বসে প্রথম সিনেমা অথবা কিশোরী মেয়ের দুরুদুরু বুকে ক্রাশ অমিতাভকে দেখতে যাওয়ার অমূল্য উন্মাদনা– কত স্মৃতি ভিড় করেছে বারংবার। আর এই ছবিরই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র গব্বর সিংয়ের চরিত্রে অফার পেয়েও না করে দিয়েছিলেন ড্যানি ডেনজংপা। কিন্তু কেন?
ড্যানি জানিয়েছেন আগে থেকেই অন্য কাজের জন্য সময় দিয়ে রেখেছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, “পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমি কাজটি করতে পারিনি। আর সেই কারণেই আমায় শোলের মতো ছবির অফার ছেড়ে দিতে হয়। আমি সেই সময়েই ফিরোজ খানের ধর্মাত্মা সই করে ফেলেছিলাম। ফিরোজ ভাইকে ডেটও দিয়ে দিয়েছিলাম। কী করে ওই ছবি ছেড়ে আসতাম আমি? আমি সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিলাম।” প্রসঙ্গত, যে ছবির জন্য ড্যানি শোলের অফার ছেড়েছিলেন সেই ধর্মাত্মা শুট হয়েছিল আফগানিস্তানে। আফগানিস্তানে তখন ছিল না তালিবানি সন্ত্রাস। ছিল না যুদ্ধের আস্ফালন, তালিব-দৌরাত্ম্য। ওই ছবিতে ড্যানি ছাড়াও ছিলেন হেমা মালিনী, ফিরোজ খান, রেখাসহ অনেকেই।
শোলে মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭৫ সালে। ধর্মাত্মাও ওই একই বছর। সব রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছিল ছবিটি। মুম্বইয়ের মিনারভায় ছবিটি চলেছিল ৫ বছর ধরে। এ হেন ছবির অংশ হতে না পেরে কি এত বছর পর অনুশোচনা হয় ড্যানির। তাঁর উত্তর, “একেবারেই নয়। যদি আমি শোলেতে অভিনয় করতাম তবে আমজাদ খানের মতো অমন দক্ষ অভিনেতার অভিনয় দেখতেই পেতাম না।” একই চরিত্রে বারবার অভিনয় করা নিয়েও মুখ খুলেছেন ড্যানি। স্বর্ণযুগের একটি উদাহরণের কথাও তুলে ধরেছেন। এসেছে অভিনেতা প্রাণের কথা। স্মৃতির পাতা হাতড়ে ড্যানি বলেন, “একই চরিত্রে বারবার অভিনয় প্রাণ আঙ্কলেরও পছন্দ ছিল না। ভিলেন হিসেবে টাইপকাস্ট হয়ে যাওয়ার পর যে দুই ছবি তিনি প্রযোজনা করেছেন সেই দুই ছবিতে তিনি কিন্তু পজেটিভ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। আমি ছিলাম ভিলেন।”
সিকিমের এক ছোট শহর থেকে ফিল্ম দুনিয়ায় পা রেখেছিলেন ড্যানি। তাঁর লুক ছিল খানিক আলাদা। সে জন্য নানা সমস্যার মধ্যেও পড়তে হয়েছে তাঁকে। সব রকম চরিত্র তাঁকে কাস্ট করা হত না। সে প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “ভীষণ সমস্যা হতো। কোনও ছবিই পেতাম। পুনে ফিল্ম ইন্সটিউটে ফিরে যাই। ওখানে অ্যাক্টিং ইন্সট্রাকটর হিসেবে কাজ করতে শুরু করি।” যদিও অভিনয়ের খিদে ছিলই। আর সে কারোনেই শুক্রবার আসতেই পুনে থেকে ড্যানি চলে আসতেন মুম্বই। এভাবে তিন বছর কাটে। অবশেষে ভাগ্যের শিকে ছেঁড়ে। গুলজারের মেরে আপনেতে ডেবিউ হয় তাঁর। একে একে আসতে থাকে অফার। শোলেতে অভিনয় করেননি তা নিয়ে আফসোস নেই। যা পেয়েছেন তাতেই খুশি ড্যানিডেনজংপা।