শান্তনু মহেশ্বরী।
আফসান কলকাতা থেকে এসেছিল গাঙ্গুবাইয়ের জীবনে। শান্তনু মাহেশ্বরী কলকাতা থেকে আলিয়ার জীবনে! অনস্ক্রিন-অফস্ক্রিন মিলেমিশে একাকার। কলকাতার কুমোরটুলির ছেলে শান্তনু। ছোট থেকেই নাচের প্রতি ছিল অদম্য ভালবাসা। তাই কলকাতা থেকে মুম্বই পাড়ি দিয়েছিল নাচের জগতে কিছু করার জন্য। সেখানে তিনি সুযোগ পান চ্যানেল ভি-এর ধারাবাহিক ‘দিল দোস্তি ডান্স’-এ। চরিত্রটি ছিল একজন ডান্সারের। সেখান থেকেই শুরু। প্রথম ধারাবাহিকেই মন জয় দর্শকের। সেখান থেকে ডান্স রিয়্যালিটি শো, ‘খতরোঁ কে খিলাড়ি’ জয়, ‘ওয়ার্ল্ড অফ ডান্স’ জয়– একের পর এক কাজ। রোহিত শেট্টি বলেছিলেন ‘সাইলেন্ট কিলার’। কলকাতা থেকে মুম্বই জার্নি যেন সে কথাকেই মনে করিয়ে দেয়! কখনওই ভাবেননি সিনেমায় অভিনয় করবেন সেটা ছিল স্বপ্নাতীত। তা-ও আবার সঞ্জয় লীলা ভনসালির হাত ধরে শুরু হবে পথ চলা, তা তো ভাবেনইনি। কিন্তু বাস্তবে হল তা-ই।
প্রশ্ন: কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা?
টেলিভিশনে নাচ আর অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। সিনেমায় কাজ করব ভাবিনি। তা-ও আবার সঞ্জয় স্যারের (সঞ্জয় লীলা ভনসালি) সঙ্গে, সে তো কল্পনার অতীত। সব অভিনেতারই বোধহয় স্বপ্ন থাকে তাঁর সঙ্গে কাজ করার। নিজের প্রথম ছবিতেই সুযোগ পাওয়া….ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। (কতটা এক্সাইটেড তা ফোনের ওপারে তাঁর গলা শুনেই বোঝা গেল)
প্রশ্ন: ব্লকবাস্টার হিট ‘গাঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি’। প্রথম ছবিতেই এমন একটা সিনেমার অংশ হতে পেরে কেমন লাগছে?
(এখনও ঘোরেই রয়েছেন গাঙ্গুর আফসান) সব কিছুই সিনেমার মতো। স্বপ্ন এভাবেও সত্যি হয়! খুব, খুউব ভাল লাগছে।
প্রশ্ন: কীভাবে এল এই সুযোগ?
কাস্টিং ডিরেক্টর শ্রুতি ম্যাম (মহাজন) ফোন করে অডিশনের জন্য ডাকেন। কয়েক রাউন্ড অডিশনের পর নির্বাচিত হই। পরে শুনেছিলাম স্যারের (সঞ্জয় লীলা ভনসালি) মা মানে, আন্টি বলেছিলেন আমার কথা। তিনি টেলিভিশনে আমার শো দেখেছিলেন। তাঁর মনে হয়েছিল এই চরিত্রটিতে আমাকে মানাবে।
প্রশ্ন: শুটিংয়ের আগে ওযার্কশপ হয়েছিল?
না, শুধু স্ক্রিপ্ট রিডিং হয় কয়েকবার।
প্রশ্ন: প্রথম দিনের শুটিং কেমন ছিল?
খুব নার্ভাস ছিলাম। কিন্তু স্যার এত কুল যে, ভয় পেতেই দেন না। প্রথম দিন আমার ইন্ট্রোডাকটরি দৃশ্যের শুট ছিল।
প্রশ্ন: শুটিংয়ের পর কী বলেছি্লেন সঞ্জয় লীলা ভনসালি?
স্যার খুব কম কথা বলেন। ভাল কাজ হলে হেসে সেটা বুঝিয়ে দেন।
প্রশ্ন: আর আলিয়া? তাঁর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন, বিশেষ করে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের আগে নার্ভাস লেগেছিল?
ভীষণ সুইট আলিয়া। ওকে নিয়ে আমি কখনওই নার্ভাস ছিলাম না। আর ও আমাকে কখনও মনে হতে দেয়নি, এটা আমার প্রথম কাজ। বরং সব সময় আমাকে খুব সাহায্য করেছে। সিন শুট হওয়ার আগে আমরা রিহার্সাল করে নিতাম। আর ‘মেরি জান’ গানের ওই গাড়ির দৃশ্যটা ছিল আমাদের শেষ দিনের শুটিং। সোফায় দৃশ্যটি শুট করা হয়। আমরা আগেই জানতাম, কী করতে হবে। যেহেতু একটা গানের দৃশ্য ছিল ওটা, তাই অনেক সময় নিয়ে শুট করা হয়েছে।
প্রশ্ন: ছবি করার আগে গাঙ্গুবাই সম্পর্কে কতটা জানতেন?
যখন সিনেমাটা করব জানলাম, তখন কিছু ভিডিয়ো ইউটিউবে দেখেছি ওঁর বিষয়ে। আর বেশিটাই জেনেছি স্ক্রিপ্ট থেকে।
প্রশ্ন: ছবিতে প্রথম দৃশ্যে আফসান কলকাতা থেকে মুম্বই যায়। আপনিও তাই….
আরে কী মিল বলুন! আমিও খুব অবাক হয়ে গিয়েছিলাম প্রথম দিন বিষয়টা জেনে। খুব ভালও লেগেছিল। কলকাতা থেকে গিয়ে তো আমিও আমার জার্নিটা শুরু করি। আফসানও তাই। (স্বগতোক্তির মতো বললেন শান্তনু কথাগুলো)
প্রশ্ন: বাবা-মা, বন্ধুরা ছবি দেখে কী বলছে?
ছবির মুক্তির আগে বাড়িতে বা অন্য কাউকেই বিশেষ কিছু বলিনি। ছবির প্রথম গান ‘মেরি জান’ দেখার পর একটা আন্দাজ করেছিল সবাই কি হতে চলেছে। তারপর ছবি দেখে সকলে খুব খুশি। বাবা-মা সবাইকে বলছেন। আর বন্ধুরা আমার সাপোর্ট সিস্টেম। তাঁরা সকলে ছবি দেখতে দেখতে কেঁদে ফেলেছে।
প্রশ্ন: আপনি এখন একটা হিট ছবির অংশ। এবার আগামিদিনে ছবি নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই বিষয়টা কতটা প্রভাবিত করবে? বা কঠিন হবে?
হিট ছবির অংশ, এটা ভেবে সময় নষ্ট নয়। আরও ভাল কাজ করতে হবে। প্রথম সুযোগ ভাল এসেছে বলে লড়াই তো থেমে থাকবে না। কয়েকটা কাজের কথা চলছে। আশা করি আরও ভাল কাজ করে দর্শকদের মনে জায়গা করে নিতে পারব।
প্রশ্ন: শান্তনু মানেই ডান্স। সেটা নিয়ে কী ভাবছেন?
অবশ্যই ডান্স তো থাকবে। সেটাই আমার প্রথম ভালবাসা। আমার পরিচিতি ডান্সার হিসেবেই। নিজের ডান্স অ্যাকাডেমিকে বড় করতে হবে। ফোকাস অভিনয়ে করছি মানে ডান্স ভুলে যাব, এমনটা নয়।